ডঃ রিংকী ব্যানার্জী: কুমড়োর বীজ নিয়মিত খান, প্রস্টেট ভালো থাকবে । মাঝবয়সে গিয়ে প্রস্টেটের প্রন্থিস্ফীতি ঘটতে দেবে না। উল্লেখ্য, পুরুষের মুত্রাশয়ের গ্রীবা লাগোয়া বড়ো গ্রন্থি যা শুক্রবীচ বহনকারী তরল উৎপাদন করে তাই হল প্রস্টেট গ্ল্যান্ড। কুমড়োর বীজ পুরুষ মুত্রাশয়ের ও মুত্রনালির চারিদিকের সব গ্রন্থিকে সুস্থ রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রস্টেটের আকৃতি বাড়তে দেয় না। কুমড়োর বীজের মধ্যে থাকা কুকুরবিটাসিন নামে যৌগটা টেসটসটারেন হরমোনকে ডিহাইড্রো-টেসটসটানে-এ পরিণত হতে দেয় না। আর এই ডিহাইড্রোসেসটসটারোন ছাড়া মুত্রাশয়ে কোষবৃদ্ধি হতে পারে না। মৃত্রাশয়, প্রস্টেটের স্ফীতি ঘটতে পারে না। কুমড়োর বীজে থাকা জিঙ্কও প্রস্টেটকে সুরক্ষা দেয়। মাথায় রাখবেন, প্রস্টেট গ্লান্ডের স্ফীতিকে ডাক্তারি পরিভাষায় বিনাইন প্রস্টেটিক হাইপারট্রফি বলে। কুমড়োর বীজে থাকা এল ট্রিপটোফান যৌগ অবসাদেরও নিরাময় করে। কুমড়োর বীজে থাকা জিঙ্ক বয়স্কদের হাড়ের খনিজ ঘনত্ব স্বাভাবিক রাখে । মেনোপজের পরে মহিলাদের ও পুরুষ, মহিলা নির্বিশেষে পঞ্চাশোর্ধদের ক্ষেত্রে জয়েন্টের হাড়ের ক্ষয় হয়, সেইক্ষয় থেকে হাড়ে চিড় ধরে, হাড় দুর্বল হয়ে পড়ে, হাড় ভেঙে যায় । এরকম হামেশাই হয়। একে অস্টিওপোরোটিক ফ্র্যাকচার বলে।
মার্কিন জার্নালে এক প্রতিবেদন বেরিয়েছে সেখানে জানানো হয়েছে রোজকার নানা খাবারের মাধ্যমে পর্যাপ্ত পরিমাণে জিঙ্ক ও অন্যান্য খনিজ পদার্থ পায় না শরীর, তাই হিপ তথা কোমরের নীচের অংশের মেরুদণ্ডের হাড়ের ক্ষয় আটকানো যায় না। হাড়ে চিড় ধরে, হাড় ভেঙে যায়।
এক্ষেত্রে কী করবেন? ডাক্তারদের মতে, কুমড়োর বীজ নিয়মিত এক কাপের এক চতুর্থাংশ পরিমাণ, প্রথমে হালকা সেদ্ধ করে জল ঝরিয়ে ভালো করে ভেজে নিন। স্রেফ সেদ্ধও খেতে পারেন। শুকিয়ে খোলায় ভেজে গুঁড়ো করে আটার সঙ্গে মিশিয়ে খান। অন্য সবজির সঙ্গেও মিশিয়ে খেতে পারেন । রোদে শুকিয়ে রেখে সারা বছর ধরে খান।
ওষুধের চেয়ে বেশি উপকারী । কুমড়োর বীজ থেকে নানা ধরনের খনিজ পায় শরীর । কুমড়োর ভাজা বীজ স্যালাডের ওপর ছড়িয়ে খেতে পারেন। ভালো লাগবে । কুমড়োর বীজ রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়।
বিষন্নতা কমায়: কুমড়ো বীজে উপকারী চর্বি থাকে যা আপনার মস্তিষ্ককে শিথিল করে। এছাড়াও এতে ট্রিস্টোফ্যান নামের আযামাইনো আসিড রয়েছে যা এক বিশেষ আনন্দের হরমোন নিঃসরণ করে যা মনে আনন্দ এনে দেয় ও মনের বিষপ্নতা দূর করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: কুমড়ো বীজে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও খনিজ উপাদান থাকে যা ত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতে সাহায্য করে । এই বীজে থাকা ভিটামিন এ ত্বকের নতুন কোষ তৈরিতে সাহায্য করে। এটা ত্বকের আর্দ্রতা রক্ষা করে। কুমড়োর বীজে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা, সালফার, ভিটামিন-এ, কে, এবং বি থাকে যা চুল ও মাথার তালুর জন্য কাজ করে ও চুলকে উজ্জ্বল আর ঘন করে।
লেখিকাঃ-
প্রখ্যাত নেচারোপ্যাথ ও অপটিশিয়ান
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct