জয়প্রকাশ কুইরি, পুরুলিয়া: কিছু মানুষের দায়িত্ব জ্ঞানহীন এবং বন দপ্তরের উদাসীনতাই ফাগুনের শুরুতেই বারে বার অগ্নিকাণ্ড ঘটছে জঙ্গলমহল পুরুলিয়ার পাহাড়ি অরণ্যগুলিতে। অযোধ্যা পাহাড় থেকে ঝালদা ও কোটশিলার বিস্তীর্ণ বনাঞ্চল এমনকি জয়চন্ডী পাহাড়ও জ্বলে উঠছে আগুনে। প্রাকৃতিক ভাবে প্রবল ঝড়ের সময় শুকনো ডালের ঘষা লেগে আগুন ধরে যায়। আবার অনেক সময় বজ্রপাতের সময় বৃক্ষে আগুন জ্বলে ওঠে। কিন্তু ফাগুনের এই মরশুমে কালবৈশাখী নেই। তবে প্রকৃতিক অরণ্যে রয়েছে মরশুমি আগাছা যেগুলো এই সময়ই মরে যায়। আবার শুকনো পাতাও এই সময়ে ঝরে পড়ে বড় বড় গাছের গাছের তলায়। কোন মানুষ সেই শুকনো খড় কুটোতে আগুন ধরিয়ে দিলে সেই আগুন গ্রাস করে বিস্তীর্ণ বনাঞ্চলে।
এমনকি প্রতিবছর অরণ্য সৃষ্টির জন্য সরকারিভাবে যে গাছের চারাগুলো লাগানো হয় সেগুলিও এই আগুনের আঁচে ঝলসে মরে যায়।
পাশাপাশি অরণ্যের ছোট ছোট কীটপতঙ্গ মারা যায়। এখন পর্যন্ত বনদপ্তর কোন দুষ্কৃতীকে ধরতে না পারায় সাহস বেড়ে যাচ্ছে দুষ্কৃতীদের প্রবৃত্তির মানুষের। আগুন লাগার পর তা নেভাতে ছুটে যান বনদপ্তরের কর্মীরা কিন্তু আগুন লাগানোর জন্য কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাই অন্যান্য বছরের ন্যায় এ বছরও লক্ষ লক্ষ হেক্টর জমি জ্বলে উঠছে যখন তখন। কালো ধোয়ায় বিষাক্ত হচ্ছে প্রাকৃতিক পরিবেশ। মার খাচ্ছে সবুজায়ন এবং সবচেয়ে বড় কথা পাহাড় পর্যটনে বিশাল আঘাত সৃষ্টি করতে পারে এই অগ্নিকাণ্ড।পাহাড়ের মানুষ বলেছেন আগে আগাছা পোড়ানোর জন্য কোথাও কোথাও বনে আগুন লাগানো হতো যার নাম বন পোড়া এখন আর সেটা করা হয় না। স্থানীয় গ্রামবাসীরা চান পাহাড়ে আগুন লাগানো বন্ধ হোক। এবিষয়ে সমাজসেবী শিক্ষক তথা ইচাগ গ্রামবাসী ভূপাল চন্দ্র মাহাতো জানান প্রাকৃতিক পরিবেশ খুব গভীরভাবে ধ্বংস হচ্ছে। কারণ পুরুলিয়া জেলা এমনিতেই খরা প্রবণ তার উপর বন ধ্বংস হলে অকাল বৃষ্টি দেখা দেবে। তিনি আরও বলেন, বন পোড়ালে সবাই দেখে আর মন পোড়ালে কেউ দেখে না। এককথায় প্রশাসন পুরো বিষয়টা জেনেও না জানার ভান করছেন, যদিও এটা কাম্য নয়। শিক্ষক শিক্ষক স্বপন বিশ্বাস জানান, বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংগঠন সহ স্থানীয় গ্রামবাসী ও সর্বসাধারণের উচিত জঙ্গলে আগুন লাগার বিষয়টিতে সচেতন থাকার।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct