আপনজন ডেস্ক: বিহারে ক্রমবর্ধমান অপরাধের মধ্যেও গবাদি পশুকে কেন্দ্র করে ফের পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটল পাটনায়। বুধবার গভীর রাতে এক সন্দেহভাজন গরু চোরকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। নিহতের নাম আলমগীর আলম (২৮)।
সংবাদ মাধ্যম সূত্র জানাচ্ছে, স্থানীয় মানুষজন জানিয়েছেন, খাটাল মালিক শ্রীকান্ত রাইযের কাছে খবর আসে, দু’জন লোক তার খাটালে থাকা ১২টি মহিষের একটি খুলে ফেলছে। তখন তিনি এলাকার মানুষজনকে খবর দেন। মোষ চুরি করার সন্দেহে বেশ কয়েক জন আলমগীর এবং তার এক সঙ্গীকে ঘিরে ফেলেন। পাটনার উপকণ্ঠে অবস্থিত ফুলওয়ারী শরীফের অধীনে এফসিআই রোডে তাদের হাতে ধরা পড়ায় মারধর শুরু হয় আলমগিরকে। সুযোগ পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে প্রাণ বাঁচান আলমগীরের সঙ্গী। পালাতে পারেনি আলমগির। তাকে মারধরের খবর পেয়ে পুলিশ এসে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মারায় আলমগির।
নিহত আলমগীর আলম (২৮) পাটনার পাটলিপুত্র রেলস্টেশনের কাছে বস্তির বাসিন্দা। তিনি মূলত বৈশালী জেলার একটি গ্রামের বাসিন্দা এবং জীবিকা নির্বাহের জন্য রেলওয়ের ট্র্যাকের পাশের বস্তিতে পরিবার নিয়ে বসবাস করছিলেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক বাসিন্দা সংবাদমাধ্যমকে জানান, আক্রান্ত ব্যক্তিকে একটি কাঠের খুঁটিতে বেঁধে রাখা হয়েছিল এবং তার অর্ধেক মারা যাওয়া অবধি চার ঘন্টা ধরে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। তারপরে, আলমকে শীত আবহাওয়ায় খোলা আকাশের নীচে রাস্তায় ফেলে রাখা হয়েছিল। পুলিশ কয়েক ঘন্টা পরে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
ফুলওয়ারি শরীফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফিকুর রহমান জানান, নিহতের মা নূরজাহান খাতুনের বক্তব্যের ভিত্তিতে সাতজন নামী অভিযুক্তের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। রহমান বলেন, পুলিশ এই মামলায় শ্রীকান্ত রায়, উশারফি রাই, সংচিত রায়, বাদল কুমার, সাধু রাই, রোশন কুমার ও কানহাই রাই সহ সাতজন আসামীকে গ্রেপ্তার করেছে।
পুলিশ আধিকারিকরা জানিয়েছেন যে গ্রেপ্তারকৃত সমস্ত আসামি হলেন পাটনার মানের থানার অন্তর্গত একটি গ্রামের বাসিন্দা। তারা এফসিআই রোডে স্থানীয়ভাবে "খাটাল" ব্যবসায় জড়িত ছিলেন।
তবে দারিদ্র্যের জেরে ক্ষতিগ্রস্থ মা নূরজাহান জানিয়েছেন, তার ছেলে তার স্ত্রী ও দুই মেয়েসহ ছয়জনের সংসার উপার্জনের জন্য শ্রমিক হিসাবে কাজ করছিলেন। এটা বিশ্বাস করা কঠিন যে আমার ছেলে গবাদিপশু চোর ছিল। কয়েকজন দুধওয়ালা খাটাল থেকে একটি মহিষ ছিনিয়ে নেওয়ার অবিযোগে তাকে খুন করেছে। পুলিশকে এটি খতিয়ে দেখা উচিত। আমরা দরিদ্র মানুষ, সেই পরিবারের একমাত্র রুটি উপার্জনকারী ছিল এবং আমরা তাকে হারিয়ে অথৈ জলে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct