আপনজন ডেস্ক: কৃষি আইন বিরোধী আন্দোলনকে ঘিরে খুবই অস্বস্তিতে মোদি সরকার। বেশ কয়েকবার বৈঠকের পরও সমাধান সূত্র বের হয়নি। কারণ, কৃষক আন্দোলনকারী সংগঠনগুলির পক্ষ থেকে সাফ বলে দেওয়া হয়েছে, কৃষি অাইন বাতিল আগে না করলে তাদের সমাধানের অন্য কোনও পথ খোলা নেই। কিন্তু কেন্দ্রীয় তাদের অনমনীয় মনোভাবের পরিচয় দিয়ে চলেছে।
কেন্দ্রের নরম না হওয়ার ফলে মাত্রা চড়ছে কৃষক আন্দোলনের। তার ফলে উদ্বিগ্ন খোদ সুপ্রিম কোর্ট। এবাবে চলতে থাকলে যে পরিস্থিতি খুব খারাপ দিকে যাবে তার ইঙ্গিত দেয়। সুপ্রিম কোর্ট তাই একটি মামলায় কৃষক আন্দোলনের অবসান ঘটাতে কেন্দ্রীয় সরকারকে কমিটি গড়তে বলেছে যার মাধ্যমে আলোচনার ভিত্তিতে কৃষক আন্দোলনের সমাপ্তি ঘটে।
এরপর কৃষক আন্দোলন আরও ত্বরান্বিত হতে থাকে। ভারতে গত সেপ্টেম্বরে পাস হওয়া ৩টি কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে দিল্লিতে অবস্থান নিয়ে টানা ২৪ দিন ধরে বিক্ষোভ করছে দেশটির লাখ লাখ কৃষক। সরকারের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা ব্যর্থ হয়েছে। এবার পরিস্থিতি সামাল দিতে মাঠে নামলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কৃষকদের কাছে হাত জোড় করে জানিয়ে দিলেন, সমস্ত ইস্যু নিয়ে আলোচনার জন্য প্রস্তুত তাঁর সরকার। এদিন মধ্যপ্রদেশের কৃষকদের উদ্দেশে ভিডিও বার্তায় তিনি বললেন, ‘কারও উদ্বেগ থাকলে আমাদের মাথা নত করে, হাত জোড় করে বলছি, আমরা তাঁদের সমস্ত চিন্তা নিরসনে প্রস্তুত।’ তিনি আশ্বাস দিলেন যে, নতুন আইনে ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বন্ধ করা হচ্ছে না। এটা ‘সর্বেব মিথ্যে’ প্রচার। এই নিয়ে কৃষকদের ভয় পাওয়া উচিত নয়। এনডিটিভির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
নরেন্দ্র মোদি দাবি করেন গত দুই দশক ধরে ভারতের প্রতিটি সরকারই কৃষি খাতে সংস্কার নিয়ে আলোচনা করেছে। তিনি বলেন, ‘এই আইনগুলো রাতারাতি আনা হয়নি। গত ২২ বছর ধরে প্রত্যেকটি সরকার, রাজ্য এগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছে। কৃষক সংগঠন, কৃষি বিশেষজ্ঞ, অর্থনীতিবিদ, বিজ্ঞানী এবং প্রগতিশীল মানুষ সংস্কারের কথা বলেছেন। আজ যেসব দল এসব আইনের বিরোধিতা করছে অতীতে তারাও এসব সংস্কারের কথা তাদের ইশতেহারে উল্লেখ করেছে।’
ভারতের কৃষি ক্ষেত্রে সংস্কারের ওপর জোর দিয়ে নরেন্দ্র মোদি বলেন, বিশ্ব সুবিধা থেকে ভারতের কৃষকেরা পিছিয়ে থাকতে পারে না। তিনি বলেন, ’কৃষি আইন নিয়ে যারা কৃষকদের বিভ্রান্ত এবং উস্কে দিচ্ছে তাদের বিষয়ে আমি আপনাদের সতর্ক করতে চাই।’
মাণ্ডি ব্যবস্থা নিয়েও কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘কৃষকদের হাতে বিকল্প ব্যবস্থা তুলে দেওয়া হয়েছে। তাঁরা মনে করলে মাণ্ডিতে তাঁদের ফসল বিক্রি করতে পারেন। সেখানে বিক্রি করতে না চাইলে তাঁরা বাইরেও বিক্রি করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে কৃষকদের খোলা ছাড় দেওয়া হয়েছে।’ সেই সঙ্গে কৃষকদের ভুল বোঝানোর জন্য মোদি বিরোধী দলগুলিকে দায়ী করেন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct