আপনজন ডেস্ক: ধর্মীয় সম্প্রীতির অন্যন্য নজির স্থাপন করল ভাঙড়। হিন্দু বিজেপি কর্মীর সৎকার করলেন মুসলিম তৃণমূল নেতা। পাশাপাশি অন্য মুসলিম যুবকরাও সৎকারে সাহায্য করেন।
ভাঙড় বরাবরই রাজনৈতিক কারণে গোটা রাজ্যের কাছে চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। বিশেষ করে শাসক দলের নানা গোষ্ঠী ও উপগোষ্ঠীর দ্বন্দ্বের কারণে। কিন্তু সেই তৃণমূলের এক নেতাই বিজেপি কর্মীর সৎকারে অংশ নিলেন। নজির সৃষ্টি করলেন, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক সম্প্রীতির।
বেশ কিছুদিন শ্বাসকষ্টজনিত কারণে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন পরাণ দাস। বুধবার ভোরে কাশিপুর সরদার পাড়ার ওই বৃদ্ধ মারা যান। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৫০ বছর। স্ত্রী ও একমাত্র কন্যাকে নিয়ে থাকতেন তিনি। কন্যার মাত্র দু’দিন আগে বিয়ে হয় বলে জানা গেছে। প্রথম জীবনে তিনি তৃণমূল নেতা আব্দুর রহিম মোল্লার সঙ্গে তৃণমূল করলেও ইদানিং তিনি বিজেপি কর্মী হিসাবে কাজ করতেন বলে জানা গেছে।
ভাঙড় ২ ব্লক তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি তথা কৃষি কর্মাধ্যক্ষ আব্দুর রহিম মোল্লার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব ছিল পরাণ বাবুর। দলবদল করলেও সেই বন্ধুতে যে চিড় ধরেনি, তা এদিনের ঘটনায় পরিষ্কার। এদিন ভাঙড় শ্মশানঘাটে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। তৃণমূল নেতা আব্দুর রহিম মোল্লা নিজে মৃতদেহ বহন করেন। এছাড়াও শেষকৃত্যে অংশ নেন ফারুখ মোল্লা, হাসানুর রহমানরা। হিন্দু বিজেপি কর্মীর সৎকাজে তৃণমূল নেতা-কর্মীরাসহ মুসলিম ভাইদের অংশগ্রহণকে সাবাস জানিয়েছেন এলাকার সাধারণ মানুষ থেকে বিশিষ্টরা।
পরাণ বাবুর কন্যা রুম্পা দাস জানিয়েছেন, “বিপদের সময় যেভাবে মুসলিম ভাইয়েরা পাশে দাঁড়িয়েছে তাতে আমরা কৃতজ্ঞ। আমরা হিন্দু-মুসলমান এখানে একসাথে বাস করি। আমাদের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ নেই।”
তৃণমূল নেতা আব্দুর রহিম মোল্লা জানান, “পরাণ দা একসময় আমাদের সহকর্মী ছিলেন। তাছাড়া তিনি আমার গ্রামের মানুষ। গ্রামবাসী হিসাবে পাশে থাকা আমাদের নৈতিক কর্তব্য। মানুষে মানুষে কোন ভেদাভেদ চাই না। সকলে সম্প্রীতির বন্ধনে থাকতে চাই।”
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct