আপনজন ডেস্ক: শিক্ষার ক্ষেত্রে দেশের মুসলিমদের করুণ দশা আরও একবার ফুটে উঠল সরকারি শিক্ষা রিপোর্টের আলোচনায়। সাচার কমিটির রিপোর্টে দেশের মুসলিমদের যে করুণ দশা সামনে এসেছিল তার প্রায় তেমন কোনও পরিবর্তন ঘটেনি বলে এই সমীক্ষায় উঠে এসেছে। পুনে-ভিত্তিক শিক্ষাবিদ ড. জন কুরিয়েন দেশের সংখ্যালঘূদের শিক্ষায় অবস্থান নিয়ে এক গবেষণা ভিত্তিক সমীক্ষা রিপোর্ট প্রকাশ করেছেন, যার শিরোনাম হল ‘একবিংশ শতাব্দীতে ভারতীয় মুসলমানদের শিক্ষার জন্য একটি নতুন এজেন্ডা’। সরকারি সমীক্ষা রিপোর্ট নিয়ে এই আলোচনায় চোখে আঙুল তুলে দেখিয়ে দিল মুসলমানদের শিক্ষাগত অবস্থার কি অন্ধকার দশা।
ড. জন কুরিয়েনের এই গবেষণা সমীক্ষা রিপোর্ট বলছে, দেশের অন্যান্য পশ্চাদপদ শ্রেণির মানুষদের তুলনায় মুসলিমরা অনেক পিছিয়ে রয়েছে। তাই এই পরিস্থিতি সামাল দিতে বিশেষ নজর দেওয়া দরকার।
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের শিক্ষাগত পশ্চাৎপদতা নিয়ে ওই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘সরকারি তথ্য থেকে বোঝা যায় যে মুসলমানরা এখন স্কুল এবং উচ্চশিক্ষার যে অবস্থানে রয়েছে তা এসসি ও এসটি-র মতো পিছিয়ে পড়া গোষ্ঠীর চেয়েও কম। কেজিবিভি, কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং জাতীয় গুরুত্বপুর্ণ প্রতিষ্ঠানের সহ সকল নামি স্কুল ও উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তাদের অংশগ্রহণের হারও সবার নীচে।]
কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের রিপোর্ট উল্লেখ করে কুরিয়েন দেখিয়েছেন, কস্তুরবা গান্ধি বালিকা বিদ্যালয়ে ভর্তির হার এসসিদের যেখানে ৩০ শতাংশ সেখানে মুসলিমদের হার মাত্র ৭ শতাংশ। কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে মুসলিমদের ভর্তির হার ৪.১ শতাংশ। কিন্তু এসসিদের ১১.৬ শতাংশ। একইভাবে কেন্দ্রীয় উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মুসলিমদের ভর্তির হার খুব কম। এমনকী এসসি এসটিদের তুলনায়ও।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, এসসি ও এসটি সহ অন্যান্য প্রান্তিক সম্প্রদায়গুলি যখন এগিয়ে চলেছে শিক্ষা ক্ষেত্রে তখন মুসলিমদের অবনতি ঘটেছে। সাচার কমিটির রিপোর্টে মুসলমানদের যে শিক্ষায় পশ্চাৎপদতার চিত্র ফুটে উঠেছে দশ বছরেরও বেশি সময় পরেও সেই পরিস্থিতিও আরও অবনতি হয়েছে।
ড. কুরিয়েন মূলত ২৫ বছরের কম বয়সি গরিব ও দুর্বল শ্রেণির মুসলিম যুবকেরদ উপরেই বেশি মনোনিবেশ করেছেন। কারণ, ভারতীয় মুসলিমদের ৮০ শতাংশের প্রতিষ্ঠা নির্ধারণ করে এই যুবকরাই।
দেশের মুসলমানদের শিক্ষার জন্য নতুন তিনটি বিষয়ের উপর লক্ষ্য রেখেছিলেন কুরিয়ান। সেগুলি হল:
১২ বছর পর্যন্ত কোয়ালিটি শিক্ষা দেওয়া সুনিশ্চিত করা। আর তা ২০৩ সালের মধ্যে ১ থেকে ১২ বছর বয়সির মধ্যে সীমাবদ্ধ। ২০৩০ সালের মধ্যে দু বছরের প্রি প্রাইমারি শিক্ষা সহ জন্ম থেকে ৬ বছর বয়স পর্যন্ত শিক্ষা সুনিশ্চিত করা। ২৫ বছর বয়স পর্যন্ত সকল মুসলিম যুবককে প্রথাগত শিক্ষার সুযোগ দেওয়া।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct