এআই আমাদের জীবন আর জীবন যাত্রা কে নিয়ে অদ্ভুত খেলা খেলছে। এআই আমাদের জীবনযাত্রায় দ্রুত পরিবর্তন আনছে, বিশেষ করে চাকরির ক্ষেত্রে। লোকে বছরের পর বছর পড়াশোনা, লাখ টাকা খরচ, আর প্রশিক্ষণ নিয়ে ভালো চাকরির আশায় নামছে, কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই এআই সেই সুযোগ কমিয়ে দিচ্ছে। লিখেছেন ড. নাজমুল হুসাইন।
এআই আমাদের জীবন আর জীবন যাত্রা কে নিয়ে অদ্ভুত খেলা খেলছে। এআই আমাদের জীবনযাত্রায় দ্রুত পরিবর্তন আনছে, বিশেষ করে চাকরির ক্ষেত্রে। লোকে বছরের পর বছর পড়াশোনা, লাখ টাকা খরচ, আর প্রশিক্ষণ নিয়ে ভালো চাকরির আশায় নামছে, কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই এআই সেই সুযোগ কমিয়ে দিচ্ছে। বিশেষ করে যারা এখন নতুন করে কোনো পেশায় ঢুকছে, তারা হয়তো বুঝতে পারবে যে তাদের ডিগ্রি শেষ হওয়ার আগেই সেই চাকরির প্রয়োজন কমে গেছে। ইতিমধ্যেই ডেটা অ্যানালিসিস, বেসিক কোডিং, কাস্টমার সার্ভিস, এমনকি কিছু ক্রিয়েটিভ কাজ—যেমন কন্টেন্ট রাইটিং ও গ্রাফিক ডিজাইন—এআই বড়ো পরিসরে গ্রহণ করতে শুরু করেছে। এই পরিবর্তন দ্রুত ঘটছে এবং ভবিষ্যতে আরও অনেক পেশার ওপর এর প্রভাব পড়বে। নতুন দক্ষতা শেখার প্রয়োজনীয়তা বাড়ছে, কারণ টেকনোলজি দ্রুত চাকরির ধরন বদলে দিচ্ছে। এআইকে কাজে লাগিয়ে নতুন সুযোগ খুঁজতে হবে, যাতে প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে চলা সম্ভব হয়।
মেডিকেল লাইনে এআই অনেক চাকরিতে হাত দিয়েছে, বিশেষ করে রেডিওলজিস্টদের। এরা মেডিকেল স্ক্যান আর এক্স-রে দেখে রোগ ধরত। এর জন্য বছরের পর বছর ট্রেনিং লাগত। কিন্তু এখন এআই এই কাজগুলো দ্রুত আর অটোমেটিক করছে। মেডিকেল রিপোর্ট চ্যাটজিপিটি বা গ্রক-এর মতো টুলে আপলোড করলেই তৎক্ষণাৎ ডায়াগনোসিস বলে দেয়। একইভাবে, জেনারেল ফিজিশিয়ান, যাদের কাছে লোকে সাধারণ সমস্যা নিয়ে যেত, তাদের ভূমিকাও বদলে যাচ্ছে। এখন টেলিমেডিসিন সার্ভিসের মাধ্যমে লোকে অনলাইনে চ্যাট বা কল করে নিজের সমস্যার কথা বলে, আর এআই বা টেলিমেডিসিন প্ল্যাটফর্ম প্রেসক্রিপশন পাঠিয়ে দেয়। আগে প্রেসক্রিপশনের জন্য ডাক্তারের কাছে যেতে হত, এখন সেটার দরকার কমে গেছে। এই পরিবর্তন সময় আর খরচ বাঁচাচ্ছে, কিন্তু মেডিকেল প্রফেশনালদের চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসছে। ভবিষ্যতে আরও বিপুল বদল আসতে চলেছে।
আইন উকিলদের পেশাও এআই-এর জন্য বড়ো বিপদে পড়েছে। উকিল হতে বছরের পর বছর ইউনিভার্সিটিতে পড়তে হত, বার অ্যাসোসিয়েশন থেকে লাইসেন্স নিতে হত, আর অনেক প্র্যাকটিস করতে হত। এতে সময় আর টাকা দুটোই লাগত। কিন্তু এখন এআই আইনের জগতে বিপ্লব এনে দিয়েছে। আইনি তথ্য আর প্রক্রিয়াগুলো এআই এত সহজ আর অটোমেটিক করে দিয়েছে যে অনেক মামলা এখন সহজেই সামলানো যায়। অনেক অনলাইন সার্ভিস আছে, যেখানে তুমি তোমার কেস দাও, আর এআই তোমাকে অভিজ্ঞ উকিলের মতো যুক্তি, কাগজপত্র, আর কৌশল তৈরি করে দেয়। এতে লোকে উকিল ছাড়াই নিজের মামলা বুঝতে ও সামলাতে পারছে। এই বদলটা সময় আর খরচ বাঁচাচ্ছে বটে, কিন্তু উকিল এর ভূমিকা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এআই-এর দাপট বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উকিলি পেশায় আরও বড়ো বদল আসতে পারে।
সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং, যেটা শিখতে বছরের পর বছর সময় সাথে বহু পয়সা লাগায়, সেটাও এআই প্রায় পুরোপুরি বদলে দিয়েছে। সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারা কোডিং করে সফটওয়্যার আর অ্যাপ বানায়। কিন্তু এখন এআই-এর জন্য বেসিক কোডিং শেখার দরকার পড়ছে না। অনেক এআই টুল আছে, যেখানে শুধু আইডিয়া বা সামান্য তথ্য দিয়ে পুরো সফটওয়্যার বা অ্যাপ বানিয়ে নেওয়া যায়, সঙ্গে কোডও দেয়। আগে এর জন্য প্রফেশনাল কোডার হায়ার করতে হত, যেটা ছিল বহু জটিল আর খরচের ব্যাপার। কিন্তু এআই এই জটিল প্রক্রিয়াটাকে সহজ আর অটোমেটিক করে দিয়েছে। এতে সময় আর খরচ বাঁচছে, কিন্তু সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারদের পেশা বিপদে পড়েছে। ভবিষ্যতে এআই-এর প্রভাবে এই লাইনে আরও বদল আসতে পারে।
অ্যানালিস্টের পেশাটাও এআই-এর জন্য বিপদে পড়েছে। আগে এই লাইনে কাজ করতে বড়ো বড়ো ডিগ্রি লাগত, স্ট্যাটিসটিকস ও গণিতে পারদর্শিতা দরকার হত, আর কোম্পানিগুলো এদের বড়ো বেতনের চাকরি দিত। এরা কোম্পানির কামাই, ইতিহাস, রিপোর্ট আর স্টক বিশ্লেষণ করে বলত কোম্পানি কেমন, বিনিয়োগ করা উচিত কিনা। কিন্তু এখন এআই এই সব কাজ খুব সহজে আর দ্রুত করে দিচ্ছে। এআই ডেটা প্রসেস করে সেই রিপোর্ট বানিয়ে দেয়, যেটা আগে অ্যানালিস্টরা বানাত। এতে মানুষের দরকার কমে যাচ্ছে। তাই যারা এই লাইনে পড়াশোনা বা ক্যারিয়ার বানানোর কথা মাথায় রেখেছে, তাদের সাবধান হতে হবে। ভাবতে হবে, এআই ইতিমধ্যেই জায়গা দখল করে নিয়েছে, এই পেশায় মানুষের দরকার থাকবে কিনা থাকলেও কতটা থাকবে।
ট্রান্সলেটরের পেশাটাও এআই-এর জন্য বিপদে। আগে ভাষা অনুবাদের জন্য লোকেদের বিশেষভাবে নিয়োগ করা হত। এর জন্য বিশেষ ট্রেনিং আর বছরের পর বছর মেহনত লাগত। কিন্তু এআই এই কাজটা খুব সহজ করে দিয়েছে। অনেক এআই টুল, যেমন ভাষা অনুবাদ সফটওয়্যার, তৎক্ষণাৎ আর নির্ভুল অনুবাদ করে দেয়। লেখা হোক বা বলা ভাষা, এআই মানুষের ট্রান্সলেটর আর ইন্টারপ্রেটারদের জায়গা নিচ্ছে। এই লাইনে মানুষের দরকার কমে গেছে। বিশেষ করে যারা এই পেশায় ক্যারিয়ার বানাতে সময় আর টাকা খরচ করছে, তাদের সাবধান হওয়া দরকার। ভাবতে হবে, ভবিষ্যতে এই পেশায় মানুষের চাহিদা থাকবে কিনা, কারণ এআই ইতিমধ্যেই অনেক ট্রান্সলেটরের চাকরি অটোমেটিক করে দিয়েছে।
বর্তমানে কিছু চাকরি আছে, যেগুলো এআই এখনও পুরোপুরি কেড়ে নেয়নি, আর ভবিষ্যতেও পুরোপুরি কেড়ে নিতে পারবে না, এগুলোর গুরুত্ব থাকবে। এগুলো এমন চাকরি, যেখানে মানুষের স্পর্শ, শারীরিক উপস্থিতি, আর ব্যক্তিগত সেবার দরকার। যেমন, স্কিলড বেসড কাজকর্ম—ইলেকট্রিশিয়ান, প্লাম্বার, টেকনিশিয়ান, মেকানিক, কাঠমিস্ত্রি, ওয়েল্ডার ইত্যাদি। এরা ঘরে বা কাজের জায়গায় গিয়ে নিজে হাতে কাজ করে সেবা দেয়, যেখানে মানুষের হাত আর দক্ষতার দরকার। এই চাকরির জন্য ৬-৮ মাসের ট্রেনিংই যথেষ্ট, আর লোকে ভালো রোজগার করছে—কিছু ক্ষেত্রে তো ইঞ্জিনিয়ারদের থেকেও বেশি।
বিহেভিয়ারাল থেরাপিস্ট এবং ফিজিওথেরাপিস্টদের মতো পেশা মানুষের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য অপরিহার্য। বিহেভিয়ারাল থেরাপিস্টরা মানুষের আবেগ, মানসিক চাপ, ও আচরণগত সমস্যার সমাধান দেন। তারা রোগীর অনুভূতি বোঝেন, সহানুভূতিশীলভাবে কথা বলেন এবং থেরাপির মাধ্যমে মানসিক সুস্থতার উন্নতি ঘটান। এই কাজের জন্য ব্যক্তিগত যোগাযোগ, ধৈর্য, এবং মানবিক উপলব্ধির দরকার, যা এখনো এআই পুরোপুরি আয়ত্ত করতে পারেনি। অন্যদিকে, ফিজিওথেরাপিস্টরা মানুষের শারীরিক পুনর্বাসন, ব্যথা নিরাময়, এবং চলাচলের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তাদের কাজ রোগীর শারীরিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে নির্দিষ্ট ব্যায়াম, থেরাপি ও চিকিৎসা পদ্ধতি প্রয়োগের মাধ্যমে সুস্থতা ফিরিয়ে আনা। ব্যক্তিগত স্পর্শ, রোগীর শারীরিক প্রতিক্রিয়া পর্যবেক্ষণ, এবং নির্দিষ্ট প্রয়োজন অনুযায়ী চিকিৎসা পরিকল্পনা তৈরির জন্য ফিজিওথেরাপিস্টদের ভূমিকা অনন্য।
এআই-এর উন্নতি সত্ত্বেও, এই পেশাগুলোতে মানবিক সংযোগ অপরিহার্য। রোগীর আবেগগত ও শারীরিক পরিবর্তন বোঝা এবং সঠিকভাবে সাড়া দেওয়া—এগুলো এখনো কেবল মানুষের মাধ্যমে সম্ভব। তাই যারা এই ক্ষেত্রে সময় ও দক্ষতা বিনিয়োগ করতে চান, তাদের জন্য এই পেশাগুলো নিরাপদ ও লাভজনক। ভবিষ্যতেও মানুষের সুস্থতা নিশ্চিত করতে এসব পেশার চাহিদা থাকবে। প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে চলার পাশাপাশি, মানবিক সংযোগ ও সরাসরি ব্যক্তিগত সেবার গুরুত্ব অপরিবর্তিত থাকবে।
ছোট বাচ্চাদের পড়ানোর শিক্ষকদের চাকরি বেশ নিরাপদ, বিশেষ করে প্রি-প্রাইমারি আর প্রাইমারি লেভেলে, এখনও এআই থেকে নিরাপদ। ছোট শিশুদের পড়ানোর কাজ শুধুমাত্র পাঠ্যবইয়ের পাঠদান নয়, বরং তাদের আবেগ, কৌতূহল, ও মানসিক বিকাশের দিকে নজর রাখার বিষয়। বিশেষ করে ৩ থেকে ৬ বছর বয়সী শিশুরা শেখার প্রাথমিক ধাপে থাকে, যেখানে তাদের অনুভূতি বোঝা, তাদের মনোযোগ ধরে রাখা, ও শেখার প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি করা শিক্ষকদের দক্ষতার ওপর নির্ভর করে। এআই যদিও শিক্ষাগত উপকরণ সরবরাহ করতে পারে, তবুও এই বয়সের শিশুদের স্পর্শকাতরতা, অনুভূতি, ও সামাজিক বিকাশের জন্য মানবিক উপস্থিতি অপরিহার্য।
শিক্ষকদের কাজ শুধু পাঠ শেখানো নয়, বরং শিশুদের ব্যবহার বোঝা, তাদের মানসিক চাহিদা মেটানো, এবং শেখার প্রতি ইতিবাচক মনোভাব গড়ে তোলার কাজও। তারা শিশুদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ তৈরি করে, তাদের জিজ্ঞাসার উত্তর দেয়, এবং আনন্দময় পরিবেশের মাধ্যমে শেখার অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ করে। শিশুরা অনেক সময় আবেগপ্রবণ হয়, এবং তাদের বুঝে, সহানুভূতিশীলভাবে উত্তর দেওয়া শিক্ষকের দক্ষতার গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এআই এই সংবেদনশীলতা, ধৈর্য, ও মানসিক বোঝাপড়ার অভাবের কারণে, প্রি-প্রাইমারি ও প্রাইমারি শিক্ষকদের চাকরি এখনও তুলনামূলকভাবে নিরাপদ। ভবিষ্যতে এআই শিক্ষাক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করলেও, ছোট শিশুদের মানসিক বিকাশ ও আবেগগত সহায়তা দিতে মানুষের ভূমিকা অপরিহার্য থাকবেই। তাই যারা শিশুদের পড়ানোর পেশায় যেতে চান, তাদের জন্য এই চাকরিগুলো নিরাপদ ও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে থাকবে।
যদিও উচ্চশিক্ষায়, যেমন ইউনিভার্সিটি আর কলেজে, এআই ধীরে ধীরে প্রফেসরদের ভূমিকা বদলে দিচ্ছে। বড়ো ইউনিভার্সিটিতে কিছু পড়ানোর কাজ এআই টুল নিচ্ছে, যেমন অনলাইন কোর্স আর লেকচার। কিন্তু ছোট বাচ্চাদের সঙ্গে ব্যক্তিগত যোগাযোগ আর তাদের অনন্য দরকার বোঝার ক্ষেত্রে এআই এখনও পিছিয়ে। বাচ্চাদের পড়াতে মানুষের স্পর্শ, ধৈর্য, আর মানসিক বোঝাপড়ার দরকার, যেটা শিক্ষকদের খাস করে। ভবিষ্যতে এআই আর শিক্ষকদের মিলে হয়তো শিক্ষা আরও ভালো হবে, কিন্তু প্রাইমারি লেভেলে শিক্ষকদের ভূমিকা এখনও গুরুত্বপূর্ণ আর অপরিহার্য। এই লাইনে ক্যারিয়ার বানানোর জন্য এটা নিরাপদ আর মানে ভরা একটা রাস্তা, কারণ ছোট বাচ্চাদের পড়ানোর মানুষের সংযোগের কোনো বিকল্প নেই।
স্টোরি টেলিং পেশাটাও এমন, যেখানে এআই এখনও মানুষের জায়গা নিতে পারেনি। এআই তথ্য প্রসেস করে গল্প লিখতে পারে, কিন্তু তাতে মানুষের মতো মানসিক ও মানবিক টাচ আর গভীরতা আনতে পারেনি। গল্পে যে অপূর্ণতা আর মানসিক গভীরতা থাকে, সেটাই মানুষেকে খাস করে করে রেখেছে এখনো। একজন মানুষ তার মনের ভাব গল্পের মাধ্যমে আরেকজনের মনে পৌঁছে দিতে পারে, যেটা এআই-এর জন্য শুধু মুশকিল নয় না মুনকিম ও বটে এই মুহূর্তে। এআই-এর গল্প পারফেক্ট হয়, কিন্তু মানুষের সৌন্দর্য তাদের অপূর্ণতায়। এই অপূর্ণতাই গল্প বলাকে জীবন্ত করে আর মনের ভাব এক মন থেকে আরেক মনে পৌঁছে দেয়। তাই গল্প বলার ক্ষেত্রে এখনও মানুষের দরকার অদ্বিতীয় । এটা একটা ক্রিয়েটিভ আর চ্যালেঞ্জিং লাইন, যেখানে মানুষের সংযোগ আর মানসিক বোঝাপড়ার জন্য এআই-এর প্রভাব কম ও সীমিত।
সেলসের পেশাটাও এখনও এআই থেকে অনেকটা নিরাপদ, কারণ এতে মানুষের স্পর্শ আর ক্রিটিভিটির দরকার। যখন কোনো প্রোডাক্ট বা সার্ভিস বেচা হয়, তখন গ্রাহকদের প্রয়োজনীয়তার সাথে সাথে তাদের মন, কালচার আর ভাষা বোঝা জরুরি। সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংও গ্রাহকদের সাথে মানসিক যোগ তৈরি করতে হয়। এটা এআই এখনও পুরোপুরি করতে পারেনি। এআই পার্সোনাল ডেটা প্রসেস করতে পারে, কিন্তু গ্রাহকদের সঙ্গে পার্সোনাল সম্পর্ক তৈরির কলা কৌশল মানুষেরই আছে। তাই যারা সেলসে আছে, বিশেষ করে যারা সরাসরি মানুষের সঙ্গে জড়িত, তাদের চাকরি এখনও নিরাপদ। এই লাইনে ক্যারিয়ার বানানোর জন্য এটা একটা স্থিতিশীল আর দামি রাস্তা, কারণ মানুষের ক্রিটিভিটির চাহিদা সবসময় থাকবে।
এআই রেডিওলজিস্ট, উকিল, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার, ফাইন্যান্সিয়াল অ্যানালিস্ট, আর ট্রান্সলেটরদের মতো পেশাগুলোকে অনেকটা বদলে দিয়েছে, যেখানে এটা মানুষের জায়গা নিচ্ছে। তবে কিছু চাকরি এখনও নিরাপদ, কারণ এগুলোতে মানুষের স্পর্শ, মানসিক বোঝাপড়া, আর ক্রিটিভিটির দরকার। প্রাইমারি লেভেলের শিক্ষক, স্কিলড ট্রেড (যেমন ইলেকট্রিশিয়ান, প্লাম্বার), বিহেভিয়ারাল থেরাপিস্ট, সেলসপার্সন, আর স্টোরি টেলিংর মতো পেশাগুলো এআই থেকে কম প্রভাবিত। এগুলোতে ব্যক্তিগত সংযোগ আর কালচারাল বোঝাপড়ার গুরুত্ব আছে, যেগুলো এআই এখনও পুরোপুরি করতে পারেনি। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কে ক্যারিয়ার বাছার সময় ভাবতে হবে, সে লাইনে মানুষের দরকার থাকবে কিনা। ভবিষ্যতে এআই আর মানুষের মিলে কাজ হতে পারে, কিন্তু মানুষের সংযোগ আর ক্রিয়েটিভ পেশাগুলো এখনও দামি আর নিরাপদ।
লেখক: প্রিন্সিপাল, দ্য স্কলার স্কুল
All Rights Reserved © Copyright 2025 | Design & Developed by Webguys Direct