আপনজন ডেস্ক: পুনের মহারাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে যে রান বন্যা হবে সে বার্তা অনেক আগেই মিলেছিল। ব্যাটারদের সহায়ক উইকেটে কিনা আগে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ করল মাত্র ২৫৬ রান, তাও ৮ উইকেট হারিয়ে। এমন উইকেটে কিভাবে ব্যাটিং করতে হয়, রান তাড়ায় নেমে সেটাই বুঝিয়ে দিলেন বিরাট কোহলি, শুভমান গিলরা।ব্যাটারদের আগ্রাসনে ভারত আধিপত্য দেখিয়ে ম্যাচটা জিতে নিল ৭ উইকেট, সেটাও ৫১ বল হাতে রেখে।বাংলাদেশ এত অল্প রান করেছিল যে ম্যাচ জিততে নয় বরং শতক পূর্ণ করা চ্যালেঞ্জ হয়ে পড়ে কোহলির সামনে। ভারতের জিততে যখন ২৮ রান প্রয়োজন, তখন কোহলির শতক করতেও লাগে ২৮ রান। এমন সমীকরণে ছক্কা মেরে শতক হাঁকিয়ে ১০৩ রানে অপরাজিত থাকেন কোহলি।পুনের উইকেট বিবেচনায় ২৫৭ রানের লক্ষ্য খুব বড় নয়।সেটা আরো মামুলি হয়ে যায় ভারতের দুই ওপেনার রোহিত শর্মা ও শুভমান গিলের ব্যাটে। উদ্বোধনী জুটিতে ১৩ ওভার ৪ বলে দুজন যোগ করেন ৮৮ রান। রোহিত ৪৮ রানে আউট হলে ভাঙে এই জুটি। ৪০ বলের ইনিংসে ৭টি চার ও ২টি ছয় মারেন ভারত অধিনায়ক। রোহিত না পারলেও অর্ধশতক তুলে নেন গিল। মেহেদী হাসান মিরাজের বলে আউট হন ৫৫ রান করে। ৫টি চার ও ২টি ছয় মারেন তিনি।দুই ওপেনার আউট হলেও বেগ পেতে হয়নি ভারতকে। শ্রেয়াস আইয়ারের সঙ্গে ৪৬ ও লোকেশ রাহুলের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্য ৭৮ রানের জুটিতে ভারতকে ৭ উইকেটে জেতান কোহলি, নিজেও করেন সেঞ্চুরি।
ওয়ানডে এটি তার ৪৮তম শতক। ৯৭ বলে ১০৩ রানের ইনিংসে ৬টি চার ও ৪টি ছয় মারেন কোহলি। রাহুল অপরাজিত থাকেন ৩৪ রানে। এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে লিটন দাস ও তানজিদ হাসানের উদ্বোধনী জুটিতে ভালো শুরু পেয়েছিল বাংলাদেশ। পাওয়ার প্লের ১০ ওভারে তোলে ৬৩ রান। দারুণ ব্যাটিংয়ে ৪১ বলে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের প্রথম অর্ধশতক পূর্ণ করেন তানজিদ। তবে এরপর ইনিংসের ১৫তম ওভারে কুলদীপ যাদবকে সুইপ করতে গিয়ে এলবিডাব্লিউ হন তিনি। ফেরেন ৫১ রান করে। ৪৩ বলের ইনিংসে ৫টি চার ও ৩টি ছয় মারেন এই বাঁহাতি।আউট হওয়ার আগে লিটনের সঙ্গে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ওপেনিং রানের জুটির রেকর্ড গড়েন। আগের সর্বোচ্চ ছিল ১৯৯৯ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে মেহরাব হোসেন ও শাহরিয়ার হোসেনের ৬৯ রান।এরপর শুরু হয় ছন্দঃপতন। লিটন অর্ধশতক করলেও আউট হন ৬৬ রানে। ৮২ বলের ইনিংসটি সাজান ৭টি চারে। দুই ওপেনারের মাঝে নাজমুল আউট হন ৮ রান করে। চারে নামা মেহেদী হাসান মিরাজ করেন ৩ রান। তাওহিদ হৃদয় আজও সুবিধা করতে পারেননি। ৩৫ বলে করেন ১৬ রান।১৭৯ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর ষষ্ঠ উইকেটে মাহমুদ উল্লাহর সঙ্গে ২২ রানে ছোট্ট এক জুটি গড়ে ফেরেন মুশফিক। ৩৮ রানে থামেন তিনি। তার আগে অবশ্য দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বকাপে এক হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটার।শেষ দিকে ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে ৪৬ রান করেন করেন মাহমুদ উল্লাহর। শেষ ওভারে জসপ্রিত বুমরাহর বলে বোল্ড হন তিনি। ৩৬ বলের ইনিংসে ৩টি করে চার-ছয় মারেন তিনি। শেষ ৫ ওভারে বাংলাদেশ দলে ৪৬ রান। তবু ৫০ ওভার শেষে ৮ উইকেটে ২৫৬ রানে থামে বাংলাদেশ। যা জয় তো বটেই, লড়াইয়ের জন্যও পর্যাপ্ত ছিল না।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct