নকীব উদ্দিন গাজী, কাকদ্বীপ, আপনজন: একবিংশ শতকেও দাঁড়িয়ে প্রযুক্তির উন্নতি হয়েছে ৷ টিভি খুলেই ডিজিটালাইজেশনের বিজ্ঞাপন ৷ হাতের স্মার্টফোনে দুনিয়া মুঠোয় ৷ গ্রামবাংলার ঘরেও পৌঁছে গিয়েছে স্মার্টফোন ৷ অথচ সাপে কাটা রোগীর প্রাণ ফেরাতে মনসা ঠকুরের কৃপা এখনও চোখে পড়ে ৷ যা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় কুংস্কার এখনও ছেড়ে যায়নি একবিংশ শতাব্দীতেও ৷ আজও সাপে কাটা মৃতদেহের প্রাণ পেতে ভেলায় করে নদীতে ভাসিয়ে দিল পরিবারের লোকজন ৷যেন মনসা মঙ্গল কাব্যের ছায়া একুশ শতকেও। ফুল দিয়ে সাজানো কলার ভেলা। তাতে শুয়ে শিশু।নদীর জলে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে তাকে। জানা গিয়েছে, সাপের কামড়ে মৃত ওই নাবালিকার শরীর সৎকার না করেই ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে নদীর জলে। আর এর থেকে উঠে যাচ্ছে প্রশ্ন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকায় এমনই ঘটনা ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপ বিধানসভার অন্তর্গত হারুড পয়েন্ট কোস্টাল থানার অন্তর্গত স্বামী বিবেকানন্দ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রসাদপুরে। প্রসাদপুরের বাসিন্দা লক্ষণ দাসের ছেলে প্রায় বছর পাঁচের তুষার দাস মঙ্গলবার সকালে বাড়িতে খেলার সময় হঠাৎই তাকে বিষাক্ত সাপে কামড়ায়। বিষের জ্বালায় তখন ছটকাতে থাকে তুষার। পরিবারের লোকজনেরা তড়িঘড়ি তুষারকে কাকদ্বীপ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসা চলাকালীন সেখানেই মৃত্যু হয় তুষারের। এরপর মৃত ছেলের জীবিত করার লক্ষ্যে, মনসামঙ্গল কাব্যের পৌরাণিক কাহিনীর অনুযায়ী। সুসজ্জিত কলার ভেলায় করে মুড়িগঙ্গা নদীতে ভাসিয়ে দেয় মৃতদেহ। বুধবার মুড়িগঙ্গা নদীতে ভেলা দেখেতে যায় গ্রামবাসীরা ।এরপর খবর দেয়া হয় হারুড পয়েন্ট কোস্টাল থানাতে । কোস্টাল থানার পুলিশ এসে ভেলা ও মৃতদেহ উদ্ধার করে। মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য কাকদ্বীপ পুলিশ মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। আধুনিক যুগে জানিও এখনো পর্যন্ত গ্রাম বাংলার মানুষের মনের মধ্যে থেকে কুসংস্কার যায়নি । এখনো পর্যন্ত গ্রাম বাংলার মানুষের বিশ্বাস , সাপের কামড়ে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের কলার ভেলায় করে নদীতে ভাসিয়ে দিলে সেই মৃত ব্যক্তির প্রাণ ফিরিয়ে দেয় মা মনসা। এমনই খুব সংস্কার এখনো চলে আসছে গ্রামবাংলায়।একুশ শতকে দাঁড়িয়ে পুরান কাব্যের ছায়ায় রীতিমত হইচই পড়ে গিয়েছে পুরো এলাকায়। ভেলাটি দেখতে প্রচুর মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন। এই বিষয়, মৃত তুষারের কাকা বিভীষণ দাস বলেন, গতকাল সাপের কামড়ে মৃত্যু হয়েছিল তুষারের। তুষারের প্রাণ ফিরে পাওয়ার আশায় পরিবারের লোকজনের া কলার ভেলায় করে মৃতদেহ ভাসিয়ে দেয়া হয় মুড়িগঙ্গা নদীতে। এটা অবশ্যই একটি কুসংস্কার কিন্তু মৃত বাচ্চাকে বাঁচাতে কুসংস্কারেরও আশ্রয় নিতে হয়েছে আমাদের। এ বিষয়ে এক গ্রামবাসী বলেন আমরা আজ সকালে হঠাৎ ই নদীতে একটি ভেলা দেখতে পাই। এবং কৌতূহলবশত সেই ভেলাটি দেখতে চাই আমরা।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct