আপনজন ডেস্ক: রাজ্য থেকে সংগৃহীত পণ্য ও পরিষেবা কর থেকে কেন্দ্র পশ্চিমবঙ্গকে বঞ্চিত করছে বলে দাবি করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবার বলেছেন, জিএসটি বিল পাসকে সমর্থন করার সিদ্ধান্তটি ভুল ছিল। তৃণমূল কংগ্রেস প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, তিনি জিএসটি বিল পাসকে সমর্থন করেছিলেন এই ভেবে যে এটি রাজ্যগুলির উপকারে আসবে। রাজ্যের গ্রামাঞ্চলে প্রায় ১২,০০০ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণের জন্য ‘পাঠশ্রী- রাস্তাশ্রী’ প্রকল্পের উদ্বোধন করতে হুগলির সিঙ্গুরে এক অনুষ্ঠানে মঙ্গলবার তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, “জিএসটি (বিল) পাসকে সমর্থন করা আমাদের ভুল ছিল। আমি ভেবেছিলাম রাজ্যগুলি এর থেকে উপকৃত হবে। কিন্তু, কেন্দ্র সমস্ত কর সংগ্রহ করছে এবং এর মধ্যে আমাদের অংশ দিচ্ছে না।, ২০১৭ সালের ১ জুলাই সারা দেশে জিএসটি চালু করা হয়। প্রাথমিক উদ্দেশ্য ছিল “এক দেশ এক কর” কেন্দ্রকে একবারে কর সংগ্রহ করতে সক্ষম করতে। এই কর কাঠামো চালু হওয়ার সময় তৃণমূল ‘নীতিগতভাবে’ নরেন্দ্র মোদী সরকারকে সমর্থন করেছিল। রাজ্য পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার ১০০ দিনের কর্ম প্রকল্প, ওবিসি শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি এবং অন্যান্য বিভিন্ন কর্মসূচির জন্য তহবিল দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের প্রতি বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের বৈষম্যমূলক আচরণের প্রতিবাদে বুধবার থেকে কলকাতায় দু’দিনের অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি কেন্দ্রের কাছে এমজিএনআরইজিএ প্রকল্প এবং আবাসন ও সড়ক বিভাগের অন্যান্য উদ্যোগের জন্য তহবিল বরাদ্দের দাবিও জানাবেন।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ‘পাঠশ্রী- রাস্তাশ্রী’ প্রকল্পের সূচনা করে মমতা বলেন, গ্রামীণ সড়ক নির্মাণের জন্য ৩.৭৫ হাজার কোটি টাকার পুরো ব্যয় বহন করবে রাজ্য, কেন্দ্রীয় সরকার নয়। পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন, এই প্রকল্পের আওতায় রাজ্যের ২৯,৪৭৫টি গ্রামে প্রায় ১২,০০০ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ বা পুনর্নির্মাণ করা হবে। তিনি বলেন, এই প্রকল্পের আওতায় ৮,৭৬৭টি রাস্তা অনুমোদিত হওয়ায় ২২টি জেলা এই প্রকল্প থেকে উপকৃত হবে।এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সিঙ্গুরকে আমি ভুলিনি, ভুলতে পারবো না। সিঙ্গুর আন্দোলনের এক পুণ্য ভূমি। জমি আন্দোলনে এখানে ২৬ দিন আমারণ অনশন করেছিলাম। কথা দিয়েছিলাম জমি ফিরিয়ে দেব, ফিরিয়ে দিয়েছি। যারা অনিচ্ছুক কৃষক ছিল তারা আজ আবার তাঁদের জমিতে চাষ করছে। এই সিঙ্গুর আমার খুব প্ৰিয় জায়গা। জোর করে জমি দখল করা যাবে না। সেই জমি অধিগ্রহণ এর আইন আমরা বদলে দিয়েছি। সিঙ্গুর আন্দোলনের কথা এখন পাঠ্য বইয়ে অন্তরভুক্ত করা হয়েছে। আট একর জমিতে ইন্ডাস্ট্রিয়াল হাব হবে। সেখানে অনেক ছেলেমেয়ের চাকরি হবে। সেই সিঙ্গুরের মাটি ছুঁয়ে গেলাম কারন আবার কাল ও পরশু আম্বেদকরের মূর্তির সামনে ধর্নায় বসব। কেন্দ্র সরকার একাধিক প্রকল্পের টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে তাঁরই প্রতিবাদে আবার ধরনায় বসব। পঞ্চায়েত প্রতিমন্ত্রী বেচারাম মান্না বলেন, “নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নতুন রাস্তা তৈরি করা হবে এবং পুরানো রাস্তাগুলি মেরামত করা হবে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct