আপনজন ডেস্ক: যৌন হয়রানি, যৌন লালসা থেকে বাঁচতে এবার ভারতের মেয়েরা নতুন এক কৌশল গ্রহণ করছেন। অনেকে ছাতা ব্যবহার করেন, লম্বা নখ রাখেন, আবার অনেকে জুতার হিলকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেন। তবে এবার সবকিছু ছাপিয়ে যৌন হয়রানি থেকে বাঁচতে নিজেদের ব্যাগে সেফটি পিন রাখছেন।এক সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, কাজের সন্ধানে বাড়ির বাইরে বের হওয়া মেয়েরা নিজেদের সম্ভ্রম রক্ষা করতে নিজেদের হ্যান্ডব্যাগ বা কাপড়ে একটি সেফটি পিন বহন করেন। জনাকীর্ণ জায়গায় বিকৃত মনস্কো মানুষগুলিকে শিক্ষা দিতে এই ছোট অস্ত্রটি মেয়েদের বেশি পছন্দের। এ ব্যাপারে সীমা নামের এক মহিলা বলেন, ' আমি অফিসে যাতায়াতের জন্য নিয়মিত একটি বাসে যেতাম। সেই বাসে বছর ৪০ এক ব্যক্তি উত্তক্ত্য করতেন। তিনি সবসময় পাশে এসে দাঁড়াতেন। ঝুঁকে পড়তেন। ড্রাইভার যখনই ব্রেক কষতেন, গায়ে এসে পড়ে যেতেন। একদিন সব সীমা লঙ্ঘন করেন ওই ব্যক্তি। বাসে হস্তমৈথুন করে আমার কাঁধে বীর্যপাত করেন। সেদিনই সিদ্ধান্ত নিই, অনেক হয়েছে, আর না। এবার তাকে শাস্তি দিতেই হবে। নিজের প্রতি ঘৃণা আসছিল। নিজেকে অপবিত্র মনে হচ্ছিল। বাড়িতে পৌঁছে অনেকক্ষণ কেঁদেছি। সে রাতে ঘুমাতে পারিনি। চাকরি ছেড়ে দেওয়ার কথাও ভেবেছিলাম।তারপর প্রতিশোধ নেওয়ার কথা ভাবতে শুরু করি। আমি তাকে শিক্ষা দিতে চেয়েছিলাম। সেই মতো পরেরদিন ফ্লাট জুতা ছেড়ে হাইহিল পরি। কাপড়ের সঙ্গে সেফটি পিন নিয়েছিলাম।সেই ব্যক্তি এসে আমার পাশে দাঁড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে আমি উঠে দাঁড়ালাম এবং আমার হিল দিয়ে তার পায়ের আঙুলগুলো পিষে ফেললাম। তার চিৎকারে প্রচণ্ড আনন্দ অনুভব করেছিলাম। তারপর সেফটি পিন দিয়ে তার কপালে খোঁচা দিই। তারপর বাস থেকে নেমে পড়ি। এরপর ওই ব্যক্তি আর আমার আশপাশে কখনই আসেনি।' মহিলাদের অধিকার নিয়ে কাজ করা কর্মীরা বলেন, 'এখানে আসলে ভয় বা লজ্জার কিছু নেই। সমাজের ভয়ে অনেক মেয়েরা প্রতিবাদ করে না। তারই সুযোগ নেয় শ্লীলতাহানিকারীরা। গত বছরে ভারতের ১৪০টি শহরে চালানো সমীক্ষা অনুসারে, ৫৬ শতাংশ মেয়েরা পাবলিক ট্রান্সপোর্টে যৌন হয়রানির শিকার হওয়ার কথা জানিয়েছেন। তাদের মধ্যে মাত্র ২ শতাংশ পুলিশের কাছে গিয়েছিলেন। যদিও একটি বিশাল সংখ্যাক মেয়েরা নিজেরাই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। তবে ৫২ শতাংশের বেশি মহিলারা নিরাপত্তা আশঙ্কায় শিক্ষা এবং চাকরির সুযোগ ছেড়ে দিয়েছেন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct