দেবাশীষ পাল, মালদা, আপনজন: কথায় আছে জ্ঞান বিতরণে কমে না, বরং আরো বৃদ্ধি পায়। তাই নিজের যতটুকু জ্ঞান রয়েছে পাড়ার খুদেদের মধ্যে বিতরণ করে চলেছেন টোটো চালক ধ্রুব। আর্থিক অনটনের জন্য নিজে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেনী। তাতে কি হয়েছে, এখন একটু স্বনির্ভর হতেই পাড়ার খুদেদের বিনামূল্যে পড়াচ্ছেন ধ্রুব দাস। গত একবছর ধরে নিয়মিত সকালে পাড়ার প্রায় পঞ্চাশ জনকে পড়াচ্ছে। বিনামূল্যে দাদার টিউশন। এখন ব্যাপক সাড়া ফেলেছে এলাকার খুদেদের মধ্যে। মালদহ শহরের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের ডিজেল সেড কলোনী। এখানের প্রতিটি পরিবার নিন্মবৃত্ত। শ্রমিকের কাজ করে সংসার চলে প্রতিটি পরিবারের। তাঁদের পক্ষে বাচ্চাদের নিয়মিত গাইড করা সম্ভব নয়। এমনি পরিবারের ছেলে ধ্রুব দাস। পরিবারের আর্থিক অনটনের কারণে উচ্চ মাধ্যমিকের পর আর পড়া হয়নি। পড়াশোনা ছেড়ে বাধ্য হয়ে টোটো চালানো শুরু করে। এখন নিয়মিত টোটো চালায় মালদহ শহরে। তবে বর্তমান যুগে উচ্চ শিক্ষার প্রয়োজন। এই নিয়ে অনুশোচনা হয় ধ্রুবোর। নিজে পড়তে পারেনি,তবে ধ্রুব চাইনা তার মত পাড়ার কারো সমস্যা হোক।তাই গত এক বছর ধরে পড়ার প্রতিটি শিশু থেকে কিশোর কিশোরীদের পড়াচ্ছে। পাড়ার একটি ক্লাবের ঘরে সকাল সাতটা থেকে নয়টা পর্যন্ত পড়িয়ে নিজের কাজে যায়। পড়ার প্রত্যেকেই স্কুলে পড়ে। সরকারি স্কুলে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থেকে মিড- ডে মিল পর্যন্ত পায়। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে কোন সাহায্য পায়না। কারণ বাড়ির অভিভাবকেরা নিজের কাজে ব্যস্ত থাকে। আর্থিক সমস্যা থাকায় টিউশন পড়াতে পারেনা।তাই ধ্রুবোর এমন উদ্যোগ। নিয়মিত সকালে পড়ানোর পাশাপাশি স্কুলের সমস্যা থেকে বিভিন্ন সমস্যা শোনে ধ্রুব। নিয়মিত গাইড করাই মূল উদ্দেশ্য। কারণ ধ্রুব চাই পাড়ার সকলেই উচ্চ শিক্ষিত হয়ে উঠুক। তারমত কেউ যেন আর্থিক বা গাইডের অভাবে পড়াশোনা না ছাড়ে সেটাই মূল লক্ষ্য।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct