আপনজন ডেস্ক: শীতের ভোর। চারদিকে কুয়াশায় ঢাকা। হাইওয়েতে গাড়ির সংখ্যাও কম। এর মাঝেই বাস নিয়ে হরিদ্বার থেকে গন্তব্যে যাচ্ছিলেন চালক সুশীল কুমার। উত্তরাখণ্ডের রুর্কি শহরের কাছে আসতেই দেখেন, তুমুল বেগে একটি গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ডিভাইডারে ধাক্কা মেরে রাস্তার উল্টো দিকে ছিটকে পড়ল। ঘটনা দেখেই সুশীল বাস থামিয়ে কন্ডাক্টর পরমজিৎকে নিয়ে ছুটে যান গাড়িটির কাছে। সুশীল তখনো জানতেন না, দুর্ঘটনার শিকার যাত্রীটি ভারতের উদীয়মান তারকা ক্রিকেটার ঋষভ পন্থ!
সুশীল কুমার ক্রিকেট দেখেন না। তাই খুব স্বাভাবিকভাবেই ঋষভকে তিনি চেনেন না। একজন সাধারণ মানুষ হিসেবেই তাকে সাহায্য করতে ছুটে গিয়েছিলেন। সেই সময়ের ঘটনা নিয়ে হিন্দুস্তান টাইমসকে সুশীল বলেন, ‘আমি হরিয়ানা রোডওয়েজের চালক। ভোর ৪টা ২৫ মিনিটে বাস নিয়ে হরিদ্বার থেকে রওনা হয়েছিলাম। পথে হঠাৎ দেখি প্রচণ্ড গতিতে আসা একটি গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ডিভাইডারে ধাক্কা মারে। প্রচণ্ড ধাক্কা লেগে গাড়িটি রাস্তার উল্টো দিকে ছিটকে পড়ে। ওই রাস্তাটা দিল্লির দিকে গেছে। ’তিনি বলেন, ‘বিকট শব্দে গাড়িটি রাস্তার দ্বিতীয় লেনে পড়ে যায়। এটা দেখে আমি বাস ব্রেক করি। গাড়িটি থেকে তখন আগুনের ফুলকি বের হচ্ছে। আমি আর কন্ডাক্টর তাই দ্রুত ছুটে গিয়ে তাকে (ঋষভ) গাড়ি থেকে বের করি। ততক্ষণে গাড়িতে আগুন ধরে গেছে। এরপর আরো তিনজন লোক আসে এবং আমরা তাকে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাই। ন্যাশনাল হাইওয়ের নম্বরে ফোন করি আমি, কেউ ধরেনি। এরপর পুলিশকে ফোন করি। কন্ডাক্টর ততক্ষণে অ্যাম্বুল্যান্সের জন্য ফোন করে। ’ সুশীল জানান, তিনি ক্রিকেট দেখেন না বলে ঋষভকে চিনতে পারেননি। তার ভাষায়, ‘আমরা তাকে জিজ্ঞেস করতে থাকি, সে ঠিক আছে কি না। তাকে জলপান করতে দিই। একটু সামলে নিয়ে সে জানায় তার নাম ঋষভ পন্থ। আমি ক্রিকেট দেখি না, তাই তাকে চিনতে পারিনি। আমার কান্ডাক্টর তখন আমাকে বলল যে, সে জাতীয় দলের ক্রিকেটার। ঋষভ তখন আমাকে তার মায়ের নম্বর দেয়। আমরা কল করে দেখি ফোন বন্ধ। ১৫ মিনিট পর অ্যাম্বুল্যান্স আসে। আমরা তাকে সেটায় তুলে দিই। তাকে জিজ্ঞেস করি যে গাড়িতে সে একাই ছিল কি না। সে নিশ্চিত করে, একাই ছিল।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct