সুব্রত রায়, কলকাতা, আপনজন: রাজ্য সরকারি কর্মচারিদের ডিয়ারনেস অ্যালাওয়েন্স বা ডিএ’র বিষয়টি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ যে রায় দিয়েছিল তার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা ঠুকেছে রাজ্য সরকার। কিন্তু সেই মামলার শুনানি এখনও শুরু হয়নি, বরঞ্চ সেই শুনানির দিন পিছিয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় রাজ্য সরকারও তৎপর হয়েছে রাজ্যের ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেই সরকারি কর্মচারিদের বকেয়া ডিএ’র কিছুটা হলেও মিটিয়ে দিতে। নবান্ন সূত্রে তেমনটাই জানা গিয়েছে। খুব সম্ভবত জানুয়ারি মাসের প্রথম দিকেই সেই বকেয়া ডিএ হাতে পেয়ে যাবেন রাজ্যের সরকারি কর্মচারিরা। যদিও তারপরেও ডিএ নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে সরকারি কর্মচারি সংগঠনের বিবাদ মিটবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে।দিন দুই আগে রাজ্যের মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া বেশ ইঙ্গিত দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন রাজ্য সরকার ডিএ নিয়ে ইতিবাচক পদক্ষেপই নেবে। সরকারি কর্মচারিদের ডিএ দেওয়া হবে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তিনি। এই অবস্থায় নবান্নের সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী বছরের শুরুর দিকেই যাতে রাজ্যের সরকারি কর্মচারিরা তাঁদের বকেয়া ডিএ’র কিছুটা হলেও পেয়ে যান তার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিশেষ নির্দেশ দিয়েছেন। তবে বকেয়ার ডিএ’র ঠিক কত অংশ দেওয়া হবে সেই বিষয়ে কিছু জানা যায়নি। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো নবান্নে এখন জোর তৎপরতা শুরু হয়ে গিয়েছে ডিএ মেটানোর জন্য। গত বছর ১ জানুয়ারি রাজ্য সরকারের তরফে ৩ শতাংশ ডিএ দেওয়া হয় সরকারি কর্মচারিদের। এই বারেও একইভাবে জানুয়ারি মাসে ডিএ দিতে পারে রাজ্য। যদিও এই ডিএ নিয়মমাফিক দেওয়া ডিএ নাকি বকেয়া ডিএ তা এখনও পরিষ্কার হয়নি। যদিও সূত্রের দাবি বকেয়া ডিএ মেটানোর তোড়জোড় চলছে।
আগামী সোমবার সুপ্রিম কোর্টে রাজ্যের দায়ের করা ডিএ মামলার ওপর শুনাই রয়েছে। গত ২০ মে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছিল ৩ মাসের মধ্যে বকেয়া ডিএ মেটাতে হবে। যদিও পরে এই বিষয়ে পুর্নবিবেচনার আর্জি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে আর্জি জানায় রাজ্য। কিন্তু, রাজ্যের সেই আবেদনও খারিজ হয়ে যায়। তার জেরেই রাজ্য সরকার ডিএ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে একদিকে জানুয়ারি মাসে ডিএ দিয়ে রাজ্য সরকার দুটি বার্তা দিতে চাইছে। প্রথমত, রাজ্য সরকার ডিএ দিতে আগ্রহী এবং দ্বিতীয়ত, রাজ্যের আর্থিক সামর্থ্য বুঝিয়ে দেওয়া। যে তথ্য সম্ভবত রাজ্য সরকারি কর্মচারিদেরও বুঝিয়ে দেওয়া হবে। যদিও অভিজ্ঞদের ধারনা পঞ্চায়েত নির্বাচনের কথা মাথায় রেখেও রাজ্য সরকার এই ডিএ দিচ্ছে। কেননা সরকারি কর্মচারিদেরই ভোটকর্মী হিসাবে কাজ করতে হয় রাজ্যের সব নির্বাচনেই।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct