বিষয়: অভিব্যক্তি ও অভিযোজন
সরিফুল বিশ্বাস
শিক্ষক-আরিজুল্লাপুর হাই মাদ্রাসা
1. জলজ অভিযোজন এর জন্য রুই মাছের পটকার ভূমিকা কি?
উত্তর:-জলজ অভিযোজনে রুই মাছের পটকার ভূমিকা:-
১) অস্তিযুক্ত রুই মাছের পটকাটি মেরুদন্ডের নিচে উদরগহবরে অবস্থিত ।পটকাটি দুটি প্রকোষ্ঠে বিভক্ত সামনের প্রকোষ্ঠে থাকা রেট গ্রন্থি থেকে নির্গত গ্যাসে (অক্সিজেন )পটকা স্ফীত হয়ে মাছকে জলে ভাসতে সাহায্য করে।
২) পিছনের প্রকষ্টে থাকা রেটিয়া মেরাবিলিয়া নামক রক্তজালক ওই গ্যাস শোষণের মাধ্যমে মাছকে জলে ডুবতে সাহায্য করে।
2.জঙ্গল উদ্ভিদ বা জেরোফাইট কাদের বলে?
উত্তর:-জঙ্গল উদ্ভিদ;-যে সকল উদ্ভিদ শুষ্ক মরু অঞ্চলে বা শুষ্ক বালুকাময় শিলা যুক্ত মাটিতে ও অল্প বৃষ্টিপাত যুক্ত উষ্ণ আবহাওয়ায় জন্মায় তাদের জঙ্গলউদ্ভিদ বলে।
যেমন:-ফনীমনসা
3.পর্ণ কান্ডের অভিযোজনগত গুরুত্ব লেখো।
উত্তর:-পর্ণ কান্ড এর অভিযোজনগত গুরুত্ব:-
১) পর্ণ কাণ্ড চ্যাপ্টা পুরু রসালো ও ক্লোরোফিল যুক্ত হওয়ায় সালোকসংশ্লেষ পদ্ধতিতে খাদ্য প্রস্তুত করতে সক্ষম।
২) কান্ড ত্বক পুরু ও কিউটিকল যুক্ত বা মোম জাতীয় আবরণ যুক্ত হওয়ায় বাষ্পমোচন রোধ করে।
4.জরায়ুজ অঙ্কুরােদ্গম কাকে বলে?
উত্তর : যে বিশেষ অঙ্কুরােদ্গম পদ্ধতিতে লবণাম্বু উদ্ভিদের ফল গাছে থাকাকালীন ফল মধ্যস্থ বীজ অঙ্কুরিত হয় এবং ফলত্বক ফাটিয়ে ভ্রূণমূল ও বীজপত্রাবকাণ্ডটি বাইরে বেরিয়ে আসে, তাকে জরায়ুজ অঙ্কুরােদগম বলে। উদাহরণ : রাইজোফোরা। এক্ষেত্রে অঙ্কুরিত বীজ নীচের কাদা মাটিতে পড়লে গেঁথে যায় এবং জোয়ারের জল ওই বীজকে ভাসিয়ে নিয়ে যেতে পারে না।
5.মৌমাছির আচরণগত অভিযোজন আলোচনা কর!
উত্তর:-মৌমাছির আচরণগত অভিযােজন : বিভিন্ন প্রাণীর বিভিন্ন রকম আচরণ লক্ষ করা যায়।
(A) শ্রমিক মৌমাছিরা খাবারের সন্ধানে দূর-দূরান্তে উড়ে বেড়ায়। খাবারের খোঁজ পেলে মৌচাকে ফিরে এসে বিশেষ ধরনের নৃত্য পরিবেশন করে।
(B) মৌমাছিটি কীভাবে নাচছে এবং কতক্ষণ ধরে নাচছে তার ওপর ভিত্তি করে অন্যান্য মৌমাছিরা মৌচাক ছেড়ে বেরিয়ে পড়ে এবং খাবারের উৎস স্থানে পৌঁছে যায়।
(a) চক্রাকার নৃত্য : কার্লভন ফ্রিশ-এর মতে খাদ্যের উৎস মৌচাক থেকে 100 মিটার দূরে থাকলে মৌমাছি বৃত্তাকারে নৃত্য করে। একে চক্রাকার নৃত্য (Round Dance) বলে।
(b) ওয়াগেল নৃত্য :জার্মান প্রাণীবিদ কালর্ভন ফ্রিশ-এর মতে খাদ্যের উৎস মৌচাক থেকে 100 মিটার-এর বেশি দূরে থাকলে স্কাউট বা শ্রমিক মৌমাছিরা যে আকৃতির নৃত্য করে তাকে ওয়াগেল (waggle) নৃত্য বলে।
6.উটের জল সংরক্ষণ পদ্ধতি আলোচনা করো।
উত্তর:-উটের অতিরিক্ত জল সহনের ক্ষমতা ও লোহিত রক্ত কণিকার আকৃতি::-মরুভূমি প্রাণীদের জল সংরক্ষণের জন্য উল্লেখযোগ্য শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়!বিশেষত বিপাকক্রিয়ার উদ্ভূত জল বারবার বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় কাজে লাগাবার ক্ষমতা মরু প্রাণীতে দেখা যায়! অনেকে মনে করেন মরু অভিযোজিত প্রাণী উটের কুঁজে জল থাকে! কিন্তু উট চর্বিতে মোটেও জল সঞ্চিত করে রাখে না! তবে সঞ্চিত চর্বির জারণের ফলে কিছু পরিমাণ বিপাকীয় জল উৎপন্ন হয়! কিন্তু শাসনকালে চর্বি জারনে জল ব্যয়িত হয় তাতে উটের খুব একটা লাভ হয় না! কুঁজের চর্বি কেবলমাত্র খাদ্য ভান্ডার হিসেবে কাজ করে! উট একেবারে প্রচুর পরিমাণে প্রায় 200 লিটার জল পান করতে পারে! এই জল পাকস্থলীতে সঞ্চিত থাকে না! দেহের বিভিন্ন কোষে জল সরাসরি চলে যায় ও প্রয়োজন অনুযায়ী কাজে লাগে। একটি উট দেহের ওজনের এক-চতুর্থাংশ ওজনের জল ব্যয় করলেও কখনো রক্তে জলের পরিমাণ কমে যায় না। উটের রক্তে বিশেষ ধরনের অ্যালবুমিন থাকার জন্য জলের মাত্রা নিয়ন্ত্রিত থাকে। বেশি মাত্রায় জল গ্রহণ করলেও উটের রক্ত কণিকার কোনরকম ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। জল সংরক্ষণের জন্য উটের দেহকোষে স্বেদ গ্রন্থি থাকে না। এতে শরীরের জল ঘাম রূপে বের না হয় দেহের অভ্যন্তরে সংরক্ষিত থাকে।ত্বক বেশ পুরু হওয়ায় সহজে বাষ্পীভবন হয় না।জল সংরক্ষণের জন্য মরু প্রাণীর রেচন পদার্থ শুষ্ক ইউরিক অ্যাসিড হিসেবে দেহের বাইরে নির্গত করে। উটের দেহে জলের পরিমাণ কমে গেলে দেহ থেকে সামান্য পরিমাণে মূত্র বাইরে নিক্ষিপ্ত করে। উটের কুঁজের20 কেজি চর্বি থেকে 21 লিটার জল পাওয়া যায়।
7.উটের লোহিত রক্তকণিকা (RBC)এর বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আলোচনা কর।
উত্তর:-উটের লোহিত রক্ত কণিকা:-উটের লোহিত রক্ত কণিকা ডিম্বাকার! এর ফলে এরা সূক্ষ্মতম রক্তজালক এর মধ্যে দিয়েও সহজে প্রবাহিত হতে পারে! তাছাড়া উটের ডিহাইড্রেশনের সময় ও যখন বেশি পরিমাণে জল গ্রহণ করে তখন অভিস্রবণীয় চাপের তারতম্য দেখা দেয় তার ফলে লোহিত রক্তকণিকা ভেঙে যায় না বা কোনরকম ক্ষতিগ্রস্ত হয় না ,কারণ লোহিত রক্ত কণিকার কোষ পর্দার প্রসারণ ক্ষমতা অনেক বেশি প্রায় 250% অন্যান্যদের 150%.
8. শিম্পাঞ্জির আচরণগত অভিযোজন বৈশিষ্ট্য আলোচনা কর!
উত্তর:-শিম্পাঞ্জির কিছু আচরণগত বৈশিষ্ট্য তুলে ধরা হলো:
শিম্পাঞ্জির তীক্ষ্ণ ক্যানাইন দাঁত:-
শিম্পাঞ্জিদের ক্যানাইন দাঁত তীক্ষ্ণ হওয়ায় জন্য নানা কাজে তার সুবিধাজনকভাবে ব্যবহার করতে পারে, অন্যান্যদের নিজের বশে রাখার জন্য, ভীতি প্রদর্শনের জন্য প্রভৃতি।
শিম্পাঞ্জিদের বাসা তৈরি:- শিম্পাঞ্জিরা বাসা তৈরীর মাধ্যমে রাতে শিকারিদের হাত থেকে রক্ষা পায় ,সুরক্ষিত থাকে ও বিশ্রাম নেয়। শিম্পাঞ্জিরা গাছের প্রায় 18 থেকে 20 ফুট উঁচুতে নিজের বাসা তৈরি করে। প্রতিটি শিম্পাঞ্জি যখন রাতে ঘুমাতে যায় তখন গাছের পাতা ও ডালপালা দিয়ে বাসা তৈরি করে ঘুমাবার উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করে।
খাদ্য সন্ধানের কৌশল:-
শিম্পাঞ্জি মূলত তৃণভোজী প্রাণী তবে দেহের প্রয়োজনীয় প্রোটিনের চাহিদা মেটানোর জন্য এরা অতি প্রিয় উইপোকা ও পিঁপড়ে ভক্ষণ করে। শিম্পাঞ্জিরা গাছের ডাল ভেঙে নিয়ে সেই ডাল থেকে পাতাগুলি ছিড়ে ফেলে। তারপর সেই ডাল টি কে উইপোকার ঢিবি তে ঢুকিয়ে দেয়, ফলে উইপোকা বের হয়ে আসে আর ধরে তাড়াতাড়ি খায়।পশ্চিম আফ্রিকার কিছু শিম্পাঞ্জি কাঠের টুকরো কে নেহাই ও পাথর কে হাতুড়ির মত ব্যবহার করে বাদামের খোলা ভাঙ্গে। পরজীবী প্রাণী ঘটিত বা অন্য কোন রোগে আক্রান্ত হলে এদের ঔষধি গাছের পাতা খেতে দেখা যায়।।
9.শ্বাসমূল কাকে বলে? শ্বাসমূল কোন উদ্ভিদে দেখা যায়?
উত্তর: সমুদ্র উপকূলে লবণাক্ত ও কর্দমাক্ত মাটিতে উদ্ভিদের প্রধান মূল হতে শাখা মূল মাটির উপরে অভিকর্ষের বিপরীত দিকে খাড়াভাবে উঠে আসে। এই সকল মূলে ছোট ছোট ছিদ্র থাকে। এই ধরনের রূপান্তরিত মূলকে শ্বাসমূল বা নিউমাটোফোর বলে। যেমন, সুন্দরী, গরান ইত্যাদি উদ্ভিদে শ্বাসমূল দেখা যায়।
10. শারীরবৃত্তীয় শুষ্ক মৃত্তিকা কাকে বলে?
উত্তর; যে মাটিতে প্রচুর জল থাকা সত্ত্বেও খনিজ লবণের পরিমাণ অধিক হওয়ায় সাধারণ উদ্ভিদ জলশোষণে অক্ষম, এই ধরনের মৃত্তিকাকে শারীরবৃত্তীয় শুদ্ধ মৃত্তিকা বলে। সুন্দরবন অঞ্চলে এই জাতীয় মৃত্তিকা পাওয়া যায় এবং এই মাটিতে সুন্দরী, গরান, হেঁতাল ইত্যাদি উদ্ভিদ জন্মায়।
11.খেচর প্রাণী হিসেবে পায়রার বায়ুথলির গুরুত্ব আলোচনা করো ।
উত্তর: পায়রার বায়ুথলির ভূমিকা : বায়ুতে ওড়ার জন্য পায়রার বায়ুথলি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । পায়রার ফুসফুসের সঙ্গে 9 টি বায়ুথলি ( Air Sac ) যুক্ত থাকে । বায়ুথলিগুলি বায়ুপূর্ণ থাকার জন্য দেহ হালকা হয় , ফলে সহজেই পায়রা উড়তে পারে । বায়ুথলি ওড়ার সময় দেহের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণ করে
12. রাসায়নিক বিবর্তনবাদ কী?
উত্তর: সরল অজৈব অনু থেকে রাসায়নিক বিক্রিয়ার সাহায্যে পৃথিবীর আদি ইতিহাসে যে প্রক্রিয়ায় সমুদ্রের জলে জৈব অণু সৃষ্টি হয় তাকে রাসায়নিক বিবর্তনবাদ বলে।
13.কোয়াসারভেট কী?
উত্তর: আদিম পৃথিবীতে উত্তপ্ত সামুদ্রিক পরিবেশে আন্তঃআণবিক আকর্ষণের প্রভাবে বৃহৎ জৈব অণু গুলি পরস্পরের সঙ্গে মিলিত হয়ে বৃহদাকার কলয়েডীয় দানা গঠন করে, যার বাইরে লেসিথিন, সেফালিন নির্মিত কোশপর্দার মতো দ্বিস্তরীয় আবরণ থাকে, তাকে কোয়াসারভেট বলে।
14. হট ডাইলুট সুপ কী?
উত্তর: আদিম পৃথিবীতে উত্তপ্ত সমুদ্রের জলে রাসায়নিক বিবর্তন বা কেমোজেনির ফলে শর্করা ,অ্যামাইনো অ্যাসিড, ফ্যাটি অ্যাসিড এবং অন্যান্য সরল ও জটিল জৈব যৌগের উৎপত্তি ঘটে। বিজ্ঞানী হ্যালডেন সমুদ্রের উত্তপ্ত জল ও বিভিন্ন জটিল জৈব অণুর মিশ্রণকে হট ডাইলুট সুপ নামে অভিহিত করেছেন।
15. ল্যামার্কবাদ কী?
উত্তর: অভিব্যক্তি বা বিবর্তনের ব্যাখ্যায় ফরাসি প্রকৃতিবিদ ল্যামার্ক তার লিখিত পুস্তক ‘ফিলোজফিক জুওলজিক’ গ্রন্থে তার মতবাদ প্রকাশ করেন। ল্যামার্ক প্রবর্তিত এই মতবাদকে ল্যামার্কবাদ বলে।
16. ল্যামার্কের অঙ্গের ব্যবহার ও অব্যবহার সূত্রটি লেখ।
উত্তর: জীব পরিবেশে নিজেকে অভিযোজিত করার জন্য সজ্ঞানে নিজের চেষ্টায় কোন কোন অঙ্গ অধিক মাত্রায় ব্যবহার করে, ফলে তা বৃদ্ধিপ্রাপ্ত ও সুগঠিত হয়। আবার কোন কোন অঙ্গের ব্যবহার কম বা একেবারে ব্যবহার না করায় সেই সকল অঙ্গ ক্ষয়প্রাপ্ত হয় কালক্রমে লুপ্ত হয়ে যায়।একেই অঙ্গের ব্যবহার ও অব্যবহার সূত্র বলে।
17.নয়া ডারউইনবাদ বা আধুনিক সংশ্লেষণবাদ বলতে কী বোঝায় ?
উত্তর: ভাইসম্যান , হুগো দ্য ভ্রিস , গোল্ডস্মিথ , হ্যালডেন প্রমুখ বিজ্ঞানী ডারউইনের তত্ত্বকে বা মতবাদকে নতুন করে আণবিক জীববিদ্যা , জেনেটিক্স , বাস্তুবিদ্যা প্রভৃতির আলোকে বর্ণনা করেছেন যা নয়া ডারউইনবাদ বা আধুনিক সংশ্লেষণবাদ [ Modern Synthetic Theory ] নামে পরিচিত ।
18.ডারউইনবাদের ত্রুটি উল্লেখ করো।
উত্তর:ডারউইনবাদের ত্রুটি :
1) ডারউইন দেহকোশ ও জননকোশের প্রকরণকে পৃথক করতে পারেননি ।
2) ডারউইন প্রকরণের বর্ণনা করলেও প্রকরণের উৎপত্তির কারণ বর্ণনা করেননি ।
2) ডারউইন যোগ্যতমের উদ্বর্তন বর্ণনা করলেও এর কারণ সঠিকভাবে বর্ণনা করতে পারেননি ।
4) ডারউইন পরিব্যক্তি বা মিউটেশনকে ‘ প্রকৃতির খেলা ‘ বলেছিলেন ।
19. অস্তিত্বের জন্য জীবন সংগ্রাম বলতে কী বোঝো।ইহা কতো প্রকারও কি কি?
উত্তর: জীব তার নিজের অস্তিত্ব বজায় রাখার জন্য নিরন্তন প্রচেষ্টা চালায় সীমিত খাদ্য এবং বাসস্থানের কারণে । তাদের প্রতিনিয়ত এই প্রতিযোগিতা চালিয়ে যেতে হয় এবং এর ফলে সৃষ্ট প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে অস্তিত্বের জন্য জীবন সংগ্রাম বলে।
জীবন সংগ্রাম প্রধানত তিনটি পর্যায়ে চলে -
1.অন্তঃপ্রজাতি সংগ্রাম
2. আন্তঃপ্রজাতি সংগ্রাম:
3.পরিবেশের সঙ্গে সংগ্রাম
20.অন্তঃপ্রজাতি সংগ্রাম কাকে বলে?
উত্তর: অন্তঃপ্রজাতি সংগ্রাম: একই প্রজাতির বিভিন্ন জীবের মধ্যে খাদ্যের জন্য বেঁচে থাকার যে সংগ্রাম তাকে অন্তঃপ্রজাতি সংগ্রাম বলে।
যেমন: খাদ্যের জন্য বাঘের সঙ্গে বাঘের সংগ্রাম।
21.আন্তঃপ্রজাতি সংগ্রামকাকে বলে?
আন্তঃপ্রজাতি সংগ্রাম: যখন দুই বা ততোধিক প্রজাতির অন্তর্গত জীবগুলির বাঁচার জন্য যে সংগ্রাম করে , তখন তাকে আন্তঃপ্রজাতি সংগ্রাম বলে।
যেমন: খাদ্যের জন্য কুকুর-বিড়ালের সংগ্রাম।
22.পরিবেশের সঙ্গে সংগ্রাম বলতে কি বোঝ।
উত্তর:- পরিবেশের সঙ্গে সংগ্রাম: অতিরিক্ত আর্দ্রতা, ঠান্ডা ,বন্যা ,খরা, ভূমিকম্প প্রভৃতি পরিবেশগত প্রতিকূলতার সঙ্গে সংগ্রাম করতে হয় ,তখন তাকে পরিবেশের সঙ্গে সংগ্রাম বলে।
23. সমসংস্থ অঙ্গ কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উত্তর: জীবদেহের যে সকল অঙ্গের উৎপত্তি একই এবং গঠন কাঠামো একই প্রকার কিন্তু ভিন্ন ভিন্ন কাজের সাথে যুক্ত থাকায় তাদের বাহ্যিক গঠনের আপাত ভিন্নতা দেখা যায়, তাদের সমসংস্থ অঙ্গ বলে।
উদাহরণ : মানুষের হাত,ঘোড়ার অগ্রপদ, বাদুড়ের ডানা, পাখির ডানা ইত্যাদি।
24. সমবৃত্তীয় অঙ্গ কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উত্তর: জীবদেহের যে সকল অঙ্গের উৎপত্তি ও গঠন কাঠামো আলাদা কিন্তু একই রকম কাজ করার জন্য অঙ্গ গুলির মধ্যে আপাত সাদৃশ্য দেখা যায় ,তাদের সমবৃত্তীয় অঙ্গ বলে।
উদাহরণ: পাখির ডানা, বাদুড়ের ডানা, পতঙ্গের ডানা।
25.জীব বিবর্তন বা জৈব অভিব্যক্তি কাকে বলে ?
উত্তর: যে মন্থর অথচ গতিশীল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পূর্বপুরুষ অর্থাৎ উদ্ংশীয় সরল জীব থেকে নতুন ধরনের অপেক্ষাকৃত জটিল জীবের উদ্ভব ঘটে তাকে জীব বিবর্তন বা জৈব অভিব্যক্তি বলে ।
26.বায়োজেনেটিক সূত্র কাকে বলে ?
উত্তর: হেকেল বায়োজেনেটিক সূত্রের প্রবক্তা। তাঁর মতানুসারে প্রতিটি জীব ভ্রুণ অবস্থায় খুব অল্পসময়ের জন্য হলেও পূর্বপুরুষের আকৃতি ও গঠনকে পুনরাবৃত্তি করে একে অনটোজেনি রিপিটস ফাইলোজেনি বা বায়োজেনেটিক সূত্র বলে।
27.জীবন্ত জীবাশ্ম কাকে বলে ?
উত্তর: যেসকল জীব বহুবছর ধরে কোনোরকম পরিবর্তন ছাড়াই পৃথিবীতে বেঁচে আছে অথচ তাদের সমসাময়িক ও সমগোত্রীয় জীব অনেক আগেই পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে , তাদের জীবন্ত জীবাশ্ম বা লিভিং ফসিল বলে ।
উদাহরণ : পেরিপেটাস নামক সন্ধিপদ প্রাণী , সিলাকান্ধ নামক মাছ , হংসচঞ্জু নামক স্তন্যপায়ী প্রাণী ইত্যাদি হলো জীবন্ত জীবাশ্মের উদাহরণ ।
28.ভেনাস হৃৎপিণ্ড কাকে বলে ? উদাহরণ দাও ।
উত্তর: মাছের হৃৎপিণ্ডএ সর্বদা কার্বন ডাই – অক্সাইড সমৃদ্ধ দূষিতরক্ত প্রবাহিত হয় । তাই মাছের হৃৎপিণ্ডকে ভেনাস হৃৎপিণ্ড বলে ।
29. যোগ্যতমের উদবর্তন বলতে কী বোঝো?
উত্তর: ডারউইনের মতে, জীবন সংগ্রামে লিপ্ত জীব গুলির মধ্যে যাদের দেহের ছোট ছোট অভিযোজন মূলক বৈশিষ্ট্য এসে যায় তারাই জীবন সংগ্রামে জয়ী হয় এবং বেঁচে থাকার অধিকারী হয়, অন্যরা কালক্রমে পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় ।জীবন সংগ্রামে এই উত্তরনকে যোগ্যতমের উদবর্তন বলে।
উদাহরণ: মেরু অঞ্চলের বড় লোমওয়ালা কুকুর সেই দেশে বসবাসের যোগ্য হলেও গ্রীষ্মপ্রধান অঞ্চলে বসবাসের অযোগ্য।
30. প্রাকৃতিক নির্বাচন বলতে কী বোঝো?
উত্তর: যে প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ায় অনুকূল ভেদ বা অভিযোজন মূলক ভেদ সমন্বিত জীবেরা অন্যদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় অধিক সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে, তাকে প্রাকৃতিক নির্বাচন বলে।
31. অর্জিত বৈশিষ্ট্যের বংশানুসরন ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: ল্যামার্কের মতে পরিবর্তিত পরিবেশে নিজেকে অভিযুক্ত করার ফলে, জীবদেহে তার জীবন কালে যে সকল বৈশিষ্ট্য অর্জিত হয় তা অপত্য জনুতে সঞ্চারিত হয়।
উদাহরণ : উঁচু গাছ থেকে খাদ্য সংগ্রহের ফলে জিরাফের গলা লম্বা হওয়ার যে বৈশিষ্ট্য অর্জিত হয়, তা পরবর্তী জনু উত্তরাধিকারসূত্রে লাভ করে, ফলে কয়েক জনু ধরে জিরাফের গলা লম্বা হয়।
32. নিষ্ক্রিয় অঙ্গ কাকে বলে?
উত্তর: জীবদেহের যে সমস্ত অঙ্গের কার্যকারিতা না থাকায় বর্তমানে আকারে ক্ষুদ্র বা লুপ্তপ্রায় অঙ্গে পরিণত হয়েছে। কিন্তু তাদের পূর্ব পুরুষের দেহ বা সমকালীন অন্যান্য জীবের এই সমস্ত অঙ্গ কার্যকারী ছিল বা আছে তাদের নিষ্ক্রিয় অঙ্গ বলে।
গিনিপিগের সিকাম সক্রিয় অঙ্গ যা মানুষের ক্ষেত্রে নিষ্ক্রিয় অঙ্গ হিসেবে অ্যাপেনডিক্স।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct