সুব্রত রায়, কলকাতা, আপনজন: বাংলায় নিয়োগ দুর্নীতির ঘটনায় শোরগোল পড়েছে রাজ্যের পাশাপাশি জাতীয় স্তরেও। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট বা ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সেই ইডি থেকেই দাবি করা হয়েছে, বাংলায় নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে আর্থিক তছরুপের পরিমাণ ১৫০ কোটি ছাড়িয়েছে। অন্তত আদালতে তাঁরা তেমনটাই জানিয়েছে। এবার সিবিআই রীতিমত আরও চমকপ্রদ তথ্য হাজির করল। সূত্রে জানা গিয়েছে, তদন্তে নেমে সিবিআই আধিকারিকেরা জানতে পেরেছেন বাংলায় এসএসসি’র গ্রুপ সি কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে এক-একজন অনুত্তীর্ণ প্রার্থী চাকরি পাওয়ার জন্য ৪ থেকে ২২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ করেছেন। যে প্রার্থী যত জন মিডলম্যানের হাত ঘুরে চাকরি পেয়েছেন, তাঁকে তত বেশি টাকা দিতে হয়েছে। ইতিমধ্যেই এই মামলায় আলিপুর আদালতে চার্জশিট জমা করেছে সিবিআই। সেখানে মোট ১৬ জন অভিযুক্তের নাম রয়েছে। কার্যত এই তথ্যে চমকে গিয়েছেন সিবিআই আধিকারিকেরাই।বাংলায় এখন স্কুল সার্ভিস কমিশনে গ্রুপ-সি পদের কর্মীরা সারা বছরে সব কিছু নিয়ে বেতন বাবদ ৩ লক্ষ ৬০ হাজার টাকার আশেপাশে বেতন পান। সেই চাকরি পাওয়ার জন্য এক একজন চাকরিপ্রার্থী ৪ লক্ষ টাকা থেকে ২২ লক্ষ টাকা ঘুষ দিয়েছেন বলে তদন্তে নেমে সিবিআই আধিকারিকেরা জানতে পেরেছেন। আর এই তথ্যটাই চমকে দিয়েছে সিবিআই আধিকারিকদের। সিবিআইয়ের এফআইআরে গ্রুপ সি নিয়োগ মামলায় ৩৮১ জন অনুত্তীর্ণ প্রার্থীর চাকরি পাওয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে। এরাই কেউ ৪ লক্ষ কেউ বা ২২ লক্ষ টাকা ঘুষ দিয়ে এই চাকরি বাগিয়েছেন। তদন্তকারীরা আরও জেনেছেন, নতুন চাকরি পাওয়ার জন্য যে পরিমাণ টাকার লেনদেন হয়েছে, তাকে ছাপিয়ে গিয়েছে চাকরিরত শিক্ষকদের বদলির জন্য লেনদেন। বেআইনিভাবে ট্রান্সফারের অভিযোগে সিবিআইয়ের তরফে গত ১০ আগস্ট একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। এ বিষয়ে এসএসসি ও রাজ্যের শিক্ষা দফতরের কয়েকজন আধিকারিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। এফআইআরে আলিপুরদুয়ারের এক হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকার নাম রয়েছে। অভিযোগ, তিনি আগের স্কুলে ৫ বছর কাটানোর আগেই বেআইনিভাবে শিলিগুড়ির একটি স্কুলে ট্রান্সফার হয়েছেন। এক আধিকারিককে সরাসরি চিঠি লিখে তিনি ট্রান্সফারের ব্যবস্থা করেন বলে দাবি সিবিআইয়ের।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct