দেবাশীষ পাল, মালদা, আপনজন: জেলার রেশম শিল্পের মুকুটে নতুন পালক। রাজ্যের সেরা রেশম সুতো উৎপাদক হিসাবে পুরস্কার পেতে চলেছেন কালিয়াচকের মহম্মদ আনসারুল শেখ। আগামী ২০ সেপ্টেম্বর দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে তাঁকে পুরস্কৃত করা হবে। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই জেলার রেশমচাষি থেকে শুরু করে এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত সবার মনে খুশির আমেজ। ভবিষ্যতে আরও উন্নতমানের রেশম সুতো তৈরি করতে চান আনসারুল সাহেব। তার জন্য তিনি সরকারের কাছে আরও কিছু সহযোগিতা প্রার্থনা করছেনকালিয়াচক ১ নম্বর ব্লকের শেরশাহী গ্রামের বোসনিটোলার বাসিন্দা আনসারুল সাহেব। তিনি জানান, “এটা আমাদের পৈতৃক ব্যবসা। ১৯৯১ সাল থেকে রেশম সুতো তৈরির কাজ করছি। প্রথমে প্রথাগত মেশিনেই রেশম কাটাই করে সুতো তৈরি করতাম। পরবর্তীতে রেশম দফতরের সহযোগিতায় ভালো মানের সুতো তৈরি করতে শুরু করি। সেই সুতো রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করি। আগে চাহিদা অনুযায়ী সুতো তৈরি করতে পারতাম না। এখন পাঁচ কর্মী থাকলেও চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে জোগান দিতে পারি না। এখনও চিনা রেশম সুতোর সঙ্গে পাল্লা দিতে পারছি না। তবে বেঙ্গালুরুর রেশম সুতোর সঙ্গে আমার সুতো তুলনা করা যায়। এখনও পর্যন্ত সরকারি স্তরে বিভিন্ন সহায়তা পেয়েছি। কিন্তু আরও উন্নত সুতো তৈরির জন্য সরকারের কাছে অতিরিক্ত সহযোগিতার আবেদন জানাচ্ছি। আজই আমার কাছে রেশম দপ্তরের একটি চিঠি এসেছে। ওই চিঠিতে জানানো হয়েছে, রাজ্যের সেরা রেশম সুতো উৎপাদক হিসাবে আমি মনোনীত হয়েছি। আগামী ২০ সেপ্টেম্বর দিল্লিতে আমাকে পুরস্কৃত করা হবে। এই পুরস্কার পেয়ে আমি খুব খুশি।”।
গোটা রাজ্যের মধ্যে মালদাতেই সবচেয়ে বেশি রেশম সুতো তৈরি হয়। কালিয়াচক এই সুতো তৈরির হাব হিসাবে পরিচিত। দু’দশক আগেও এখানে রেশম সুতো উৎপাদনের উন্নত পরিকাঠামো ছিল না। সেই সময় এদিকে নজর দেন জেলা রেশম দফতরের তৎকালীন ডেপুটি ডিরেক্টর সুব্রত দাস ও কালিয়াচক রেশম দফতরের আধিকারিক প্রিয়জিৎ অধিকারী। সুতো উৎপাদকদের পাশে দাঁড়ায় রাজ্য সরকারও। সরকারের তরফে রেশম কাটাই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত মানুষজনকে উন্নত মেশিন এবং প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হয়। তারই ফল মিলছে এখন। এই এলাকার উৎপাদিত রেশম সুতোর চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। আনসারুল সাহেবের পুরস্কার প্রাপ্তি জেলার রেশমচাষি, সুতো উৎপাদক সহ এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত সবাইকেই উৎসাহিত করবে বলে আশা করছে প্রশাসন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct