নাজিম আক্তার, চাঁচল, আপনজন: জমিজটে অস্তিত্বের সংকটে মালদহের চাঁচল কলেজ। অনিশ্চিত কয়েক হাজার পড়ুয়ার ভবিষ্যৎ। সংকট মেটাতে জেলা প্রশাসন ছাড়াও শিক্ষামন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। কলেজের অনুমোদন বাতিল হয়ে গেলে বিস্তীর্ণ এলাকার পড়ুয়াদের উচ্চশিক্ষার কী হবে ভেবে পাচ্ছেন না কেউ। এই পরিস্থিতিতে সবাই তাকিয়ে রয়েছেন শিক্ষামন্ত্রীর দিকে। যদিও দ্রুত সংকট মেটানোর আশ্বাস দিয়েছেন গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। জানা গেছে, ছয় একরেরও বেশি জমি ছিল কলেজের নামে। এখন রয়েছে মাত্র এক একরের থেকে কম জমি। ইউজিসির নিয়ম অনুসারে কলেজের কাছে পাঁচ একর জমি থাকা বাধ্যতামূলক। তা না হলে সেই কলেজের অনুমোদন বাতিল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে বিষয়টি সহানুভূতির সঙ্গে দেখার আবেদন জানানো হয়েছে আইন দফতরকেও। কিন্তু কীভাবে জমি হারাল চাঁচল কলেজ? কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, চাঁচল রাজবাড়ির একাংশে পাঁচ দশক আগে কলেজ গড়ে ওঠে। ১৯৭৬ সালে চাঁচল রাজার তরফে রাজবাড়ির একাংশ দান করা হয়। যার পরিমাণ ৬.৮৬ একর। পরে রাজার অনেক জমির মতোই কলেজের ওই জমির ৬.০৯ একরও খাস হয়ে যায়। দিন কয়েক আগে কলেজের পিছনের প্রাচীর ভাঙা হচ্ছে দেখে যেন আকাশ ভেঙে মাথায় পড়ে কলেজ কর্তৃপক্ষের উপর।
২০১২ সালে রাজবাড়ির ওই অংশ কেনার পর সেখানেই আদালত চালু হয়। কলেজের খাস জমি ভুল করেই সরকার লাগোয়া আদালতের কাজে ব্যবহারের জন্য আইন বিভাগের নামে হয়ে যায় বলে ধারণা কলেজ কর্তৃপক্ষের। কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অজিত বিশ্বাস বলেন, শিক্ষাঙ্গন উঠে যাক, কোনো ব্যক্তি চায় না। আমার আমাদের প্রতিষ্ঠান বাঁচাতে মরিয়া। ঘটনা নিয়ে রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা দফতর ও জেলা প্রশাসনকে জানিয়েছি। আগামীতে শিক্ষামন্ত্রীর দ্বারস্থ হব। ইউজিসি নিয়ম অনুযায়ী কলেজের নামে ৫ একর জমি থাকা বাধ্যতামূলক। তাই কলেজের নির্দিষ্ট জমি যাতে থাকে, সে নিয়ে আমরা রাজ্য সরকারের কাছে দরবার করব। কলেজের অনুমোদন বাতিল হবে, এই আশঙ্কা ছড়িয়ে পড়তেই আতঙ্ক পড়ুয়ারা। চাঁচল কলেজের ছাত্রি সুইটি মন্ডল বলেন, আমরা চাই কলেজে একই স্থানে থাকুন। এই কলেজে আমার মতো কয়েক হাজার মধ্যবিত্ত ও দুস্থ পড়ুয়া শিক্ষা অর্জন করছে। কলেজ না থাকলে ভবিষ্যত নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ব আমরা। এক পড়ুয়ার অভিভাবক অমল চন্দ্র মন্ডল জানান, নিম্ন থেকে মধ্যবিত্ত সকলেরই ভরসা চাঁচল কলেজ।চাঁচল বিধানসভার কয়েক হাজার পড়ুয়ার ভবিষ্যৎ এখান থেকেই তৈরি হয়। সাইকেল চালিয়েও কলেজে আসা যায়। চাঁচল এলাকায় কৃষিজীবী মানুষই বেশিরভাগ বসবাস করে। তাদের সামর্থ্য নেই ভিনজেলাই বা দূরে সন্তানদের পড়াশুনা করাবে। উচ্চ শিক্ষা দফতরের কাছে আবেদন,কলেজের জমি সঙ্কট দূরীকরণ এগিয়ে আসুক।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct