সম্প্রীতি মোল্লা , কলকাতা, আপনজন: সোমবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে এই রাজ্যের শাসক দলের নেতা মন্ত্রীদের আয়ের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ অর্থ বিষয়ক মামলার শুনানি চলে। এদিন আদালত এই মামলায় কেন্দ্রীয় আর্থিক তদন্তকারী সংস্থা ইডি কে পক্ষভুক্ত করেছে। রাজ্যে নেতা-মন্ত্রীদের সম্পত্তি কিভাবে বাড়ছে? তা কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা খতিয়ে দেখুক, এদিন এই আর্জি নিয়ে মামলার শুনানি চলে। এইমামলায় ইডি কে পক্ষভুক্ত করার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে এই আর্জি জানান আইনজীবী শামিম আহমেদ। এদিন হাইকোর্টে মামলাকারীর আইনজীবী ১৯ জন নেতা-মন্ত্রীর একটি তালিকা-সহ তাঁদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির হিসেব দিয়ে জানান , -' ২০১১ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত এই নেতা-মন্ত্রীদের সম্পত্তি অস্বাভাবিক ভাবে বেড়েছে। পাঁচ বছরে এঁদের সম্পত্তি কিভাবে এত বৃদ্ধি ঘটলো? তা খতিয়ে দেখুক ইডি। এর প্রেক্ষিতে ওই মামলায় ইডি কে পার্টি করার নির্দেশ দেয় হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।আদালতে যে ১৯ জন নেতা-মন্ত্রীর সম্পত্তি খতিয়ে দেখার আর্জি জানিয়েছিলেন শামিম, তাঁদের অধিকাংশই শাসক দল তৃণমূলের মন্ত্রী, বিধায়ক, নেতা। রয়েছেন, প্রাক্তন মন্ত্রী, বিধায়ক, নেতারাও। ফিরহাদ হাকিম, ব্রাত্য বসু, মলয় ঘটক, মদন মিত্র, শিউলি সাহার পাশাপাশি, অমিত মিত্র, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এমনকি, প্রয়াত মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে, প্রয়াত সুব্রত মুখোপাধ্যায়, প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংহের নামও রয়েছে। রয়েছে বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামও। তবে দুজন মারা গেছেন এই তালিকা থেকে।
মামলাকারী আইনজীবী আদালতকে জানিয়েছেন, -' এঁদের অনেকেরই ব্যক্তিগত সম্পত্তি বিপুল পরিমাণে বেড়েছে। অনেক ক্ষেত্রে আবার এঁদের স্ত্রীরা তেমন ভাবে কোনও পেশার সঙ্গে যুক্ত না হওয়া সত্ত্বেও, তাঁদের সম্পত্তি পাঁচ বছরে বৃদ্ধি পেয়েছে ২৫০ শতাংশের বেশি।রাজ্যের নেতা-মন্ত্রীদের সম্পত্তি বৃদ্ধি নিয়ে ২০১৭ সালে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে। সেই মামলার সূত্রেই আদালতে নতুন করে এই আর্জি জানিয়েছেন ওই আইনজীবী । তাঁর দেওয়া তালিকায় আর যে সব নেতা-মন্ত্রীদের নাম রয়েছে তাঁরা হলেন, গৌতম দেব, ইকবাল আহমেদ, স্বর্ণকমল সাহা, অরূপ রায়, জাভেদ আহমেদ খান, আব্দুর রেজ্জাক মোল্লা, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সব্যসাচী দত্ত।এর মধ্যে ২০১১ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরে সব্যসাচীর আয় বেড়েছে ৪১৬ শতাংশ। জাভেদের অস্থাবর সম্পত্তি বেড়েছে বহুগুণ । জ্যোতিপ্রিয়ের স্ত্রী কোনও পেশার সঙ্গে সে ভাবে যুক্ত না হলেও তাঁর অস্থাবর সম্পত্তি ৭২৯ শতাংশ বেড়েছে।কিভাবে নেতা-মন্ত্রীদের সম্পত্তি এই অস্বাভাবিক বৃদ্ধি ঘটল, তা খতিয়ে দেখুক ইডি। এমনই আর্জি জানানো হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে। সোমবার সেই মামলায় ইডিকে জুড়ে দেওয়ার নির্দেশ দিল হাইকোর্ট। শুধু তৃণমূলের স্থায়ী নেতারাই নন, যাঁরা তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি'তে যোগ দিয়েছিলেন এবং ফের তৃণমূলে ফিরে এসেছেন খতিয়ে দেখা হবে তাঁদের সম্পত্তিও। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে সোমবার এই আর্জি জানান আইনজীবী শামিম আহমেদ। তিনি আদালতেএর সামনে ১৯ জন নেতা-মন্ত্রীর একটি তালিকা-সহ তাঁদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির হিসেব দিয়ে বলেন, ২০১১ সাল থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে এই নেতা-মন্ত্রীদের সম্পত্তি বিপুল পরিমাণে বৃদ্ধি পয়েছে। আর্জি, পাঁচ বছরে তাঁদের সম্পত্তি কী ভাবে এতটা বাড়ল, তা খতিয়ে দেখুক ইডি। সেই প্রেক্ষিতেই এই মামলায় ইডি-কে পার্টি করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct