সোনামণিদের বিশ্বকবি
মোঃ আব্দুর রহমান
আজ চোখটা ছলছল করছে সাইমা, রূপা, সীমার। ওরা সবাই ক্লাশে মন দিয়ে ম্যামের কথাগুলি শুনছে। একটুও অমনোযাগী হচ্ছেনা, হওয়ার কথাও নয়। কারণ আজ যে বিশ্ব কবির ৮১ তম মৃত্যুবাষির্কী। ম্যাম বললো,” সোনা মনিরা তোমরা কি জানো-বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বর্ষাকালকে খুব পছন্দ করতেন। তাইতো বর্ষাকে নিয়ে লিখেছেন অসংখ্য কবিতা, ছোটগল্প, ছড়াসহ বিভিন্ন মজার মজার লেখা। আবার এই বর্ষা মৌসুমের ২২ শ্রাবন তিনি মৃত্যুবরন করেন! যাহোক আজ আমরা সেই বর্ষাতেই বিশ্বকবির স্মরণে কিছু পরিবেশনা করতে চাই, কি বলো তোমরা? “-সবাই সমস্বরে উত্তর দিলো “জী ম্যাম”। -তাহলে প্রথমেই পরিবেশন করবে সুমা। -সুমা মনের মাধুরী মিশিয়ে গাইলো,” জনগণমন-অধিনায়ক জয় হে ভারতভাগ্যবিধাতা ! পাঞ্জাব সিন্ধু গুজরাট মারাঠা দ্রাবিড় উৎকল বঙ্গ...।” এভাবেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা পুরো জাতীয় সংগীতটা খুব সুন্দর করে পরিবেশন করলেন। সবার মনটা জুড়িয়ে গেলো। সবাই ওর সাথে গাইলো। এবার রূপার পালা। রূপা সবাইকে একটু বিনোদন দেওয়ার জন্য গাইলো, “তোমরা যে যাই বলো ভাই আমার সোনার হরিন চাই...।” বাহ্! বিশ্ব কবির এই গানটি সোনামনিদের মাঝে বইয়ে দিলো এক আনন্দের ঢেউ। গানের পর সবাই হাতে তালি দিয়ে বাহোবা জানাতে একটুও ভুল করলোনা সুমাকে।
তারপর সুযোগ পেলো সীমা। সীমাও সুযোগটা খুব সুন্দর করে কাজে লাগালো। ওহ গ্রামকে খুব ভালোবাসে। গ্রামের গন্ধ, রূপ, বৈচিত্র, সুর ওকে খুব কাছে টানে। তাই গাইলো,” গ্রামছাড়া ঐ রাঙামাটির পথ আমার মন ভোলায়রে...।” ওর সাথে সকলে একই সুরে, তালে পুরো গানটা গাইলো। সবাই কবির গানে হারিয়েগেলো যেন সেই রাঙা মাটির পথে। এভাবেই এক এক করে শেষ হলো-সকল পরিবেশনা।ম্যাম খুব খুব খুশী হলেন। অংশগ্রহণকারী সব সোনামনিদের হাতে তুলে দিলেন বিদ্যালয়ের পক্ষথেকে উপহার স্বরূপ -ফুলের তোরা, ছবি আকার জন্য সুন্দর সুন্দর রং পেনসিল। সোনামনিরাও রীতিমতো খুবই খুশি হলো। এবার কিন্তু সোনামনিরাও হাসতে হাসতে ম্যামকে কিছু পরিবেশনা করার জন্য জোর কাকুতিমিনতি শুরু করলেন। করতেই হবে ম্যামকে কিছু পরিবেশনা। অবশেষে ম্যাম বললো,” আচ্ছা ঠিক আছে পরিবেশনা করতে পারি, যদি তোমরা ঠিকভাবে পড়াশোনা করো, মা-বাবার কথা মতো চলো।”সোনামনিরা তাতেই রাজি হয়েগেলো। “তাই হবে ম্যাম।” ম্যাম বললো,” ঠিক আছে আমার এই পরিবেশনার সাথে শেষ হয়ে যাবে আমাদের আজকের এই আয়োজন। তবে সোনামনিরা বিশ্বকবির কথাগুলি শুধু মুখেই নয়,থাকুক আমাদের সবার বুকে। তাহলো চলো সবাই গাই,”যখন পড়বেনা মোর পায়ের চিহ্ন এই বাটে.....।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct