এম মেহিদি সানি, কলকাতা, আপনজন: জাতীয় নাগরিক পঞ্জি বা এনআরসি বাস্তবায়নে এবার মণিপুর বিধানসভা সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করল। সেই সঙ্গে রাজ্য জনসংখ্যা কমিশনও গঠন করেছে। এর ফলে, মণিপুরে এনআরসি লাগু হওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা। শুক্রবার মণিপুর বিধানসভার বাজেট অধিবেশনের শেষ দিনে জেডিইউ বিধায়ক কেএইচ জয়কিশান বিধানসভায় ওই প্রস্তাব দু’টি পেশ করেন। তার দাবি ১৯৭১ থেকে ২০০১ সালের মধ্যে রাজ্যের পার্বত্য অঞ্চলের জনসংখ্যা কমপক্ষে ১৫৩.৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছিল। সেখানে ২০০১ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত জনসংখ্যা ২৫০.৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। জেডিইউ বিধায়ক কে এইচ জয়কিশান তার প্রস্তাবে বলেন, উপত্যকা অঞ্চলে ১৯৭১ থেকে ২০০১ সাল অবধি ৯৪.৮ শতাংশ এবং ২০০১ থেকে ২০১১ সাল অবধি ১২৫ শতাংশ জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। ‘বেআইনি অনুপ্রবেশ’ নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জেডিইউ বিধায়ক কেএইচ জয়কিশান। তার দাবি, পাহাড়ে বসতি স্থাপনের জন্য উপত্যকার জেলাগুলোর লোকেদের উপর বিধিনিষেধ রয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বে জনসংখ্যা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বেআইনিভাবে অনুপ্রবেশকারীদের জন্য ব্যাপক হারে জনসংখ্যা বেড়েছে। মণিপুরের কাছে মিয়ানমার আন্তর্জাতিক সীমান্ত থাকায় জেডিইউ বিধায়ক হয়তো সেদিকেই ইঙ্গিত করতে চেয়েছেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং আলোচনায় অংশ নিয়ে এতে নিজের সম্মতি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এই প্রস্তাব হাউসের সকল সদস্যের সম্মিলিত স্বার্থে কাজ করবে। এর ফলে রাজ্যের জনসংখ্যা এবং ‘বহিরাগতদের’ চিহ্নিত করা সম্ভব হবে। বেশ কয়েকটি নাগরিক সংস্থা রাজ্যের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অবৈধ অভিবাসীদের চিহ্নিত করার জন্য এবং প্রত্যেক বছর একটি আপডেট এনআরসি বাস্তবায়নের দাবি করেছে। এর আগে বিজেপি শাসিত অসমেও জাতীয় নাগরিক পঞ্জি বা ‘এনআরসি’ চালু করা হয়েছিল। সেই তালিকা থেকে বহু মানুষের নাম বাদ পড়ায় তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল। এবার মণিপুরে কবে ‘এনআরসি’ বাস্তবায়ন হয়, সেদিকেই এখন নজর।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct