সুব্রত রায়, কলকাতা, আপনজন: বিরোধীরা সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে মুখ খুলছেন না। সোমবার নজরুল মঞ্চের অনুষ্ঠানে এসে সাফ জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী, তিনি ভয় পান না। এমনকি, হুমকির কাছে মাথা নত করবেন না। আর অন্যায়কেও সাপোর্ট করবেন না। তা তাঁর নেশাও নয়, পেশাও নয়। সরকারি অনুষ্ঠান থেকেই নাম না করে তাঁর ক্যাবিনেটের পার্থ চট্টোপাধ্যায় ইস্যুতে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ব্যাপারে তৃণমূল নেত্রী যে কোনও রেয়াত করতে চান না তা নিয়ে পার্থর নাম উল্লেখ না করে সাফ জানিয়ে দেন, কেউ দোষী প্রমাণিত হলে তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হোক। সেইসঙ্গে বিরোধী দলগুলিতে সাবধান করে দেন, ‘দয়াকরে আগুন নিয়ে খেলবেন না। আমাকে ছোঁয়ার চেষ্টা করবে না।’
টাকার সম্পর্কে বিন্দুবিসর্গ কিছু জানেন না মুখ্যমন্ত্রী। তবে দোষ প্রমাণিত হলে দোষীর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেবে দল। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি মঞ্চে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অদূরে অর্পিতা মুখোপাধ্যায় এমন ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরতে থাকায় বিরোধীরা মমতাকে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না। সোমবার নজরুল মঞ্চের অনুষ্ঠান থেকে সে বিষয়ে মু্খ খুললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় নানা অনু্ষ্ঠানে যেতে হয় তাঁকে। সেখানে অনেকের অনুরোধে ছবিও তুলতে হয়। সেগুলিকে নিয়েও রাজনীতি করছে বিরোধীরা। এদিন বিরোধীদের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমি চাই বিচার হোক, দ্রুত সত্যটা সামনে আসুক। কেউ দোষী প্রমাণিত হলে তার যদি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডও হয় তাতেও কিছু মনে করব না। কিন্তু কেন আমার ছবি ব্যবহার করছেন টাকার পাহাড়ের সঙ্গে? আমি কারও পয়সায় খাই না। ওই কোটি টাকা উদ্ধার হওয়া মহিলাকে চিনি না।” এরপরই হুঙ্কার ছেড়ে তিনি বলেন, “যা আমি করি না, তার দায় আমি নেব না। আমার গায়ে কালি ছেটালে, আমার কাছে আলকাতরা আছে। যা ওয়াশিং মেশিনেও যাবে না।” মহারাষ্ট্র প্রসঙ্গ তুলে বিজেপিকে তোপ দেগে মমতা আরও বলেন, “ভাবছেন মহারাষ্ট্র ভেঙেছি, ঝাড়খণ্ড ভাঙব, তারপর বাংলা আসব। কিন্তু মনে রাখবেন, বঙ্গোপসাগর পেরিয়ে আসতে হবে। দিঘায় গেলে কুমির খাবে। সুন্দরবনে গেলে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার কামড় দেবে, নর্থ বেঙ্গল দিয়ে এলে হাতি শুয়ে পেঁচিয়ে ছুঁড়ে ফেলবে।” অর্থাৎ বিরোধীরা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ইস্যুতে তাঁর ও তৃণমূলের নাম জড়ানোয় তিনি খুবই বিরক্ত তা তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন স্পষ্টভাবেই। পাশাপাশি অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিও জানিয়েছেন, একহাত নিয়েছেন সিবিআইকেও। তাঁর কথায়, নোবেল চুরি সহ একাধিক গুরুত্ব পূর্ণ মামলা দীর্ঘদিন সিবিআইয়ের হাতে থাকলেও কোনও সুরাহা এখনও পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে, মুখ্যমন্ত্রী মন্তব্যের নিন্দা করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, “সরকারি অনুষ্ঠানে দাঁড়িয়ে এই বিষয়ে মন্তব্য করা মানে অনুষ্ঠানের গরিমা নষ্ট করা। এহেন আচরণ বাংলার সংস্কৃতি, ঐতিহ্যের পরিপন্থী। যুবক-যুবতীদের সর্বনাশ করছে এই সরকার, এমনটাও তোপ দাগলেন তিনি।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct