সম্প্রীতি মোল্লা, কলকাতা, আপনজন: মারণ ভাইরাস করোনার সৌজন্যে গত দু বছর একুশে জুলাই সমাবেশ ঘটেনি। দু বছর পর চেনা ছন্দে দেখা গেল একুশে জুলাই কর্মসূচি পালনে তৃণমূল কংগ্রেস কে।এদিন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাধারে যেমন কেন্দ্রের বিজেপি শাসিত সরকারকে তোপ দেগেছেন। ঠিক তেমনি বাংলার একদা শাসক সিপিএমকেও তুলোধুনো করেছেন এদিন। বৃহস্পতিবার দুপুরে একুশের মঞ্চ থেকে চাকরি দুর্নীতি নিয়ে সিপিএমের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । পাশাপাশি আক্রমণ এর নিশানায় ছিলেন রাজ্যসভার সাংসদ তথা কলকাতা হাইকোর্টের বর্ষীয়ান আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য। একদা বিকাশবাবু কলকাতার মেয়র পদে থাকাকালীন বার্থ সার্টিফিকেটে জালিয়াতি হয়েছিল বলে এদিন সরাসরি অভিযোগ করেন মমতা।তবে মমতার এই মন্তব্য কে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ছেন বিকাশবাবু।এদিন একুশে জুলাই মঞ্চে মমতা বলেন, - ‘সিপিএমের বিকাশবাবু খালি চাকরি কাড়তে মামলা করছেন। আপনার সময়ের ফাইলগুলো বের করব? কারা বার্থ সার্টিফিকেট পেয়েছিল? বলেছিলাম বদলা নয় বদল চাই। তাই কিছু করিনি।’ তৃণমূল নেত্রী মমতার এই অভিযোগের পরিপেক্ষিতে বিকাশ ভট্টাচার্য বলেন, - ‘’আমি চাই মমতা এক জনের তদন্ত কমিশন করুন। তিনিই হোন কমিশনের এক এবং অদ্বিতীয়। আমি আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য যাব না। তারপর উনি সেই তদন্ত রিপোর্ট ১৫ দিনের মধ্যে প্রকাশ্যে আনুন।’ সেইসাথে বিকাশ বাবু আরও বলেন, ‘মমতা যদি বার্থ সার্টিফিকেট দেওয়ায় অনিয়ম প্রমাণ করে দেন তাহলে ওঁকে আমি এক হাঁড়ি রসগোল্লা খাওয়াব। আর যদি না পারেন তাহলে ওঁকে পাগলা গারদে যেতে হবে। ওঁর গোটা দল দুর্নীতিতে ডুবে গিয়েছে। মানুষও এটা বুঝে গিয়েছে দুর্নীতি মানেই তৃণমূল। এখন এসব বানানো গল্প বলে মানুষের নজর ঘোরানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু সেসবে লাভ হবে না। তৃণমূল আর দুর্নীতি ব্যাপারটা সমার্থক হয়ে গিয়েছে।আমি আগেও বলেছি। কোনভাবেই চোর যোচ্চরদের চাকরী করতে দেব না। আগামী দিনে সরকার হলে আরও লড়াই করব। যদি পারেন আটকে দেখান’’।
পুরসভার বার্থ সাটিফিকেট দুর্নীতি প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীকে প্রস্তাব দিলেন সিপিএমের রাজ্যসভার সাংসদ। তিনি বলেন, -’ আমি ওনাকে বলতে চাই ১৫ দিনের মধ্যে রিপোর্ট পেশ করুন। তাহলে আমি ওনাকে এক হাঁড়ি রসগোল্লা খাওয়াবো। ১৫ দিনের মধ্যে রিপোর্ট পেশ করুন, নাহলে পাগলা গারদে বাস করুন’। শিক্ষক নিয়োগ মামলায় আইনী বিপাকে তৃণমূল সরকার। একের পর এক তৃণমূল নেতাদের নাম চলে আসছে তদন্তে। নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম জড়িয়ে সিবিআই দফতরে হাজিরা দিতে হয়েছে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীকে। চাকরি গেছে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর মেয়ের। দুর্নীতির কারণে আন্দোলন চালাচ্ছে হাজার হাজার চাকরিপ্রার্থীরা।বৃহস্পতিবার ২১ জুলাইয়ের সভামঞ্চ থেকে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে মুখ খুললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন মমতা জানান -’ রাজ্য সরকার ১৭ হাজার শিক্ষক পদে নিয়োগে জন্য প্রস্তুত। তবে বারবার বিজেপি আটকে দিচ্ছে’। এরপর সরাসরি আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে তোপ দেগে মমতা বলেন , -’ বিকাশবাবুদের জন্য নিয়োগ হচ্ছে না।কাদের বার্থ সার্টিফিকেট দিয়েছিলেন? সেই ফাইলটা একটু বার করব? কী বলেন বিকাশ বাবু! । বলেছিলাম, বদলা নয়, বদল চাই। তাই কিছু করিনি’। মমতার এই মন্তব্যের কয়েক ঘন্টার মধ্যেই কলকাতা হাইকোর্টের বর্ষীয়ান আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন -’১৫ দিনের মধ্যে রিপোর্ট পেশ করুন, নাহলে পাগলা গারদে বাস করুন’ ।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct