আব্দুস সামাদ মন্ডল, পুনিশোল, আপনজন: আলতামাস! না এই সেই আলতামাস নন, যনি কলকাতা হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি। এই আলতামাস হচ্ছে বাঁকুড়া জেলার হতদরিদ্র পরিবারের এক কৃতি সন্তান। নাম আলতামাস আজিজ খান, মাধ্যমিকে তার প্রাপ্ত নম্বর ৬৬১ বাবা পেশায় দিনমজুর, স্কুল ও পড়াশোনার পাশাপাশি প্রতিনিয়ত বাবার সাথে মাঠে কাজেও যেতে হয়েছে আলতামাসকে। আলতামাসের বাড়ি বাঁকুড়ার সংখ্যালঘু একটি গ্রাম পুনিশোলে। এক সময় এই পুনিশোল চোর গুন্ডা মাফিয়াদের আড্ডা ছিল সময় এই গ্রামে ছেলেমেয়েরা পড়াশোনার নাম শুনলেই আঁতকে উঠত। আর আজ সেই গ্রামই এবার খবরে উঠে এল কৃতী ছাত্রের হাত ধরে, যা অবিশ্বাস্য বলে অভিহিত করেন গ্রামবাসীরা।
এবছর মাধ্যমিকে ৬৬১ নম্বর পেয়ে সকলকে হতভম্ব করে দিয়েছে ৷ আলতামাসের ৯৫ শতাংশ নম্বর, যা এই গ্রামের বাসিন্দাদের কাছে অকল্পনীয় ছিল৷ আলতামাসের এই সাফল্যে খুশি পুরো গ্রাম ৷ সংসারের হাল ধরতে অনেক ক্ষেত্রে আলতামাসকেও মাটি কাটতে কোদাল হাতে বেরিয়ে যেতে হয়েছে। কাজ করার পাশাপাশি নিয়মিত আলতামাস বলে, আমি দুই/ তিন ঘণ্টা পড়াশুনো করতাম। দু-তিন ঘণ্টা কেন পড়াশোনা জিজ্ঞাসা করলে সে বলে, বেশি সময় ধরে পড়াশুনোর ইচ্ছে থাকলেও উপায় ছিল না তার। আমাদের সংসারের অনটন দূর করতে আমিও বেরিয়ে যেতাম বাবার সঙ্গে কাজে। দিনমজুরের কাজ না করলে বাবার পক্ষে একা সংসারের দায়ভার বহন করা সম্ভব নয়। আলতামাসের বাবা বলেন, “অভাবের তাড়নায় ছেলেকে ঠিকমত টিউশন দিতে পারিনি। েস যেটুকু পেরেছে তার নিজের প্রচেষ্টায়। আলতামাসের কোন মাবাইল নেই যা দিযে সে অনরাইন ক্লাস করতে পারে। তাই অনলাইন ক্লাস করার জন্য বন্ধুর বাড়িতে যেতে হয়। কারো ফোন করার দরকার হলে সেখান থেকে করতে হয়। ভবিষ্যতে আলতামাসের ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছে। তবে তাতে অর্থ বাধা হয়ে দাঁড়াবে সে িবষয়ে সে নিশ্চিত। কারণ, তাদের সম্বলটুকুও শেষ হয়ে গেছে। আলতামাসের কথায়, গ্রামের বহু মানুষ চিকিৎসার অভাবে কষ্ট করে বেঁচে আছেন ৷ তাঁদের কাছে চিকিৎসা পরিষেবা ঠিকঠাক পৌঁছে দেবার জন্যই ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছে ৷
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct