নিজস্ব প্রতিবেদক,কাঁথি,আপনজন: রাজ্যের একাধিক জেলায় প্রকাশ্যে শিবির করে আপ-এর কর্মীরা সদস্য সংগ্রহের কাজ শুরু করেছেন।পূর্ব মেদিনীপুরে তাদের পা পড়ল।এগরা মহকুমার বিভিন্ন জায়গায় সদস্য সংগ্রহ অভিযানে আপের পোস্টার নজরে পড়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার হলদিয়া, তমলুক ও কাঁথির মতো গুরুত্বপূর্ণ মহকুমা শহর ছেড়ে সদস্য সংগ্রহ অভিযানে কম গুরুত্বপূর্ণ শহর এগরা কে বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠেছে রাজনৈতিক মহলে।প্রকাশ্যে দিনের আলোয় এই কর্মসূচী না করে রাতের অন্ধকারে গোপনে পোস্টার দেওয়া নিয়েও। যার পিছনে উঠে এসেছে বিক্ষুব্ধ তৃণমূল তত্ত্ব। শহরের যে দুটি ওয়ার্ডে পোস্টার দেখা গিয়েছে পুরভোটে সেই দুই ওয়ার্ডেই হেরেছে তৃণমূল। যদিও এই পোস্টারকে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল ও বিজেপি যুযুধান দুই শিবির। এগরা পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডে মিলনী বাজারে একটি বন্ধ পানের দোকানে আপ-এর পোস্টার দেখা যায়। বাজার পেরিয়ে কিছুটা এগিয়ে ৩ নম্বর ওয়ার্ডে একটি বেসরকারি স্কুলের সামনে মেলে আরও তিনটি পোস্টার।
পোস্টারগুলিতে রাজ্যের ‘নোংরা রাজনীতি সাফ করতে বাংলায় আসছে আপ’ লেখা রয়েছে। সেই সঙ্গে দশ সংখ্যার একটি মোবাইল নম্বর দিয়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় দলের সদস্য হতে ওই নম্বরে মিসড্ কল দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।প্রসঙ্গত এগরা ৬ নম্বর ওয়ার্ডে এবার তৃণমূলের প্রার্থী ছিলেন সুব্রত পাত্র। প্রার্থী নিয়ে দলের অন্দরে এতটাই ক্ষোভ ছিল যে তৃণমূলেরই দুজন নির্দল হয়ে ভোটে দাঁড়ান। ওই ওয়ার্ড বরাবারই কংগ্রেসের শক্তঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। ভোটের আগেই সেখানে একপ্রকার হার স্বীকার করে নিয়েছিল তৃণমূল। ভোটের ফলে তৃণমূলের থেকে বিজেপি এগিয়ে থাকলেও শেষপর্যন্ত কংগ্রেসই জেতে। অপরদিকে ৩ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে নির্দল হয়ে রামচন্দ্র পন্ডা ভোটের লড়াইতে নেমে তৃণমূল প্রার্থী সৌভিক নায়ককে হারিয়ে দেন। সূত্রের খবর এগরায় শাসক দলের বিক্ষুব্ধদের একাংশই গোপনে আম আদমি পার্টির হয়ে কাজ শুরু করছে। তবে প্রকাশ্যে না এসে এভাবেই নিজেদের সংগঠন বাড়ানোর কৌশল নিয়েছে তারা।
রাজ্যে যে রাজনৈতিক হিংসা-অশান্তি অব্যাহত রয়েছে তার থেকে বাঁচতেই রাতের অন্ধকারে এই কর্মসূচী বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তবে এগরা শহরে আম আদমি পার্টির সদস্য সংগ্রহের এমন পন্থায় বিচলিত নয় শাসক ও বিরোধীরা। এগরা সাংসদ প্রতিনিধি আশিস নন্দ বলেন, ‘’ভারতের গঠনতন্ত্রে সকল রাজনৈতিক দলেরই মত প্রকাশের অধিকার রয়েছে। এগরাতেও তারা সেই কর্মসূচি নিয়েছে। তৃণমূলের বিক্ষুব্ধরা গোপনে এই দলের হয়ে কাজ করছে। তবে এতে বিজেপির সাংগঠনিক ক্ষতি হবে না।’’ এগরা শহর তৃণমূল সভাপতি উত্তম দাসের কথায়,’’কারা রাতের অন্ধকারে পোস্টার দিয়েছে জানি না। যদি কেউ আলাদা রাজনৈতিক দলের হয়ে কর্মসূচি পালন করে এখানে তাতে দোষের কিছু নেই। গণতান্ত্রিক দেশে সকলের রাজনীতি করার সমান অধিকার রয়েছে। আমাদের চিন্তার কিছু নেই।’’ তবে রাজনৈতিক মহলের মতে, এগরায় এ ধরনের কর্মসূচীর পিছনে যদি শাসক দলের বিক্ষুব্ধরা থেকে থাকে। তা হলে জেলার আরও তিন মহকুমাতেও তো তাদের ভালরকম অস্তিত্ব রয়েছে। সে ক্ষেত্রে এগরাকে বেছে নেওয়ার পিছনে কী কারণ! আপাতত আপ-এর পোস্টারকে ঘিরে সেই প্রশ্নই দানা বাঁধছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct