রঙ্গিলা খাতুন,খড়গ্রাম,আপনজন: মুর্শিদাবাদ জেলা ঐতিহাসিক নবাবের জেলা।দীর্ঘকাল ধরেই নবাবের জেলাতে হিন্দু ও মুসলিমদের মধ্যে সম্প্রীতির নজির রয়েছে। মুর্শিদাবাদ জেলার খড়গ্রাম ব্লকের অন্তর্গত বাঁটি গ্রামে হিন্দু ভাইদের হাতে খোল করতাল তুলে দিয়ে আবারও সম্প্রীতির নজির গড়ল মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ। মুর্শিদাবাদ জেলার প্রত্যন্ত এলাকা খড়গ্রাম ব্লক। খড়গ্রাম ব্লকের অন্তর্গত খড়গ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে বাঁটি গ্রাম মুলত চাষী সম্প্রদায়ের বসবাস। সন্ধ্যা হলেই তারা নাম সংকীর্তন করেন। তাই সেই কীর্তনকে আরো সমৃদ্ধ ও উৎসব মুখর করতেই এলাকার মুসলিম বাসিন্দারা গ্রামের হিন্দু যুবকদের হাতে তুলে দিল খোল করতাল। প্রসঙ্গত গ্রামের মুসলিম সম্প্রদায়ের একাংশ চাঁদা তুলে এই খোল কিনে গ্রামের হিন্দুদের হাতে সামজিক সম্প্রীতির অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে তুলে দিল শুক্রবার সন্ধ্যায়।
উপস্থিত ছিলেন খড়গ্রামের বিধায়ক তথা মুর্শিদাবাদ জেলার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি আশিষ মার্জিত। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন খড়গ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি সামশের আলি মোমিন, খড়গ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির পুর্ত কমার্ধ্যক্ষ আবুল হাসনাত, কৃষি কমার্ধ্যক্ষ সুপ্রীয় ঘোষ সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।খড়গামের বিধায়ক আশিষ মার্জিত বলেন, 'হিন্দু ভাইদের আনন্দ দিতে মুসলিম ভাইয়েরা তারা নিজে চাঁদা তুলে খোল করতাল নিজের হাত দিয়ে তুলে দিচ্ছেন! এই চেয়ে ভালোবাসা এর চেয়ে বড়ো সম্প্রীতি আর কী হতে পারে! মনটা ভরে গেল। এটাই মানবিকতা। এটাই তো আমাদের সোনার বাংলা।'উল্লেখ্য' বছরের পর বছর সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে এখানে বসবাস করছেন দুই সম্প্রদায়ের মানুষ। একে অপরের সুখ দুঃখে সামিল হন সকলেই। ঈদ কিংবা সবেবরাত মুসলিমদের বিভিন্ন উৎসব পালন করেন হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ। ঠিক তেমনই দুর্গাপূজা, কালীপূজো সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন এলাকার মুসলিম বাসিন্দারা। এ যেন কবির ভাষায় 'গলায় গলায় ভাব হয়েছে, ভাব না করে থাকতেই পারিনা আমরা।' এ প্রসঙ্গে খড়গ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি সামশের আলি মোমিন বলেন, 'দীর্ঘদিন ধরেই আমরা এক সঙ্গে বসবাস করি। জন্ম উৎসব বিবাহ মৃত্যু থেকে শ্মশান ঘাট সবক্ষেত্রেই আমরা মিলেমিশে কাজ করি। এটা আমাদের জন্মগত ভালোবাসা বলতে পারেন।' এই খোল করতাল পেয়ে যেমন খুশি গ্রামের হিন্দুরা ঠিক তেমনি খোল করতাল দিতে পেরে খুশি মুসলিমরাও। সেদিক দিয়ে নবাবের মুর্শিদাবাদ জেলাতে সম্প্রীতির অন্যান্য নজির তৈরি হল খড়গ্রাম ব্লকে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct