জিয়াউল হক, চুঁচুড়া: কোথাও টিকিট না পেয়ে নির্দল, কোথাও টিকিট না পেয়ে অন্যদলে যোগ, আবার কোথাও বা নির্দলের চাপে অফিসিয়াল প্রার্থী প্রত্যাহার, স্ত্রী তৃণমূলের তো স্বামী নির্দলে, হুগলি পুরভোটে মনোনয়ন ঘিরে এমনই নানা ঘটনা শাসক দলে। পিছিয়ে নেই বিরোধী বিজেপিও। স্ত্রী টিকিট পেয়েছে তৃণমূলে কিন্তু তাকে টিকিট দেয়নি দল, তাই নির্দলে দাঁড়িয়ে গেলেন রাজেশ শা ওরফে কুকুয়া। ২০১৫ সালে পুরসভা নির্বাচনে শ্রীরামপুর পুরসভার নয় নম্বর ওয়ার্ডে জিতে কাউন্সিলর হন রেখারানী শা। রেখারানীর স্বামী রাজেশ শা দশ নম্বর ওয়ার্ডে দাঁড়িয়ে সিপিএম প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন। এবার দলের স্ট্যান্ড হল একই পরিবারের একাধিক প্রার্থী হবে না তাই বিদায়ী কাউন্সিলর রেখারানীকে দল টিকিট দেয়। রাজেশকে দল বলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করতে। তার জায়গায় দশ নম্বর ওয়ার্ডে আইনজীবী জয়দীপ মুখার্জীকে প্রার্থী করা হয়। এবার দলের সেই অফিসিয়াল প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্দল হিসাবে প্রার্থী হলেন রাজেশ শা। তিনি বললেন, গত সাত বছর ধরে ওয়ার্ডে প্রচুর পরিশ্রম করেছি, দলের ছেলেরা চাইছে তাই প্রার্থী হলাম।না হলে এই ওয়ার্ড সিপিএম জিতে যাবে। টিকিট না পেয়ে শ্রীরামপুর পুরসভার ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী হলেন বিদায়ী কাউন্সিলর নাসিমা পারভিন। তার স্বামী আকবর আলিও নির্দলে প্রার্থী হয়েছেন। আজ মনোনয়ন জমা দেবার শেষ দিন। শ্রীরামপুর পুরসভার ২৯ টি ওয়ার্ডের মধ্যে অনেক ওয়ার্ডে নির্দল হিসাবে লড়াই এর ময়দানে নামতে চলেছেন তৃণমূলের টিকিট না পাওয়ারা।
অন্যদিকে বৈদ্যবাটি পুরসভার ২৪ টি ওয়ার্ডের বারোটি ওয়ার্ডে নির্দল হিসাবে ভোটে দাঁড়িয়ে গেছেন যারা তৃণমূলের টিকিটের দাবিদার ছিলেন। চন্ডীতলার বিধায়ক স্বাতী খন্দকারের বোন সীমিতা দত্তকে তিন নম্বর ওয়ার্ডে দল টিকিট দিয়েছিল। সেখানেও নির্দল প্রার্থী দাঁড়িয়ে যাওয়ায় আর ভোটে লড়বেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন সীমিতা। স্বাতী খন্দকার প্রয়াত তৃনমূল সাংসদ আকবর আলি খন্দকারের স্ত্রী। স্বাতী খন্দকারের বাবা দূর্গাচরন দত্ত এক সময় বৈদ্যবাটি পুরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন। সেই পরিবারের মেয়েকে এবার প্রার্থী করেছিল দল। স্বাতী খন্দকারের অভিযোগ, চাঁপদানীর বিধায়ক অরিন্দম গুঁইনের জন্য বোনকে প্রার্থী থেকে সরিয়ে নিতে হল। স্বাতী খন্দকার বলেন, অরিন্দম তাকে বলেছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে লিখিত দিতে হবে। না হলে তাকে দু নম্বরে প্রার্থী করুক আর তিন নম্বরী সীমিতাকে। গতকাল রাতেও কথা হয়।আজ শুনলাম বারোটা নির্দল দিয়েছে। আমি চাইনা দলের কোনো ক্ষতি হোক। আমার বিধানসভা চন্ডীতলা তাই বৈদ্যবাটি বা চাঁপদানী নিয়ে মাথা ঘামাই না।
বিধায়ক অরিন্দম গুঁইন বলেন, ভিত্তিহীন কথা বলে লাভ নেই। অনেকের প্রার্থী হবার ইচ্ছা থাকতে পারে।কেউ নির্দলে দাঁড়ালে আমরা তাকে অনুরোধ করতে পারি। কিন্তু ভয় দেখাতে পারিনা কারন আমরা কেউ গুন্ডা মস্তান নই।আর দলের লোক যদি কেউ নির্দলে দাঁড়ায় তাহলে দলকে বলব তাদের যেন দলে না নেওয়া হয়। বৈদ্যবাটির তিন নম্বর ওয়ার্ডে তার স্ত্রীকে প্রার্থী করা প্রসঙ্গে বলেন, আমার স্ত্রী একজন স্কুল শিক্ষিকা।রাজনীতি থেকে দূরে থাকে।আর আমি দলকে আমার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছি।ভোট হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে।
শ্রীরামপুরের ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে বিদায়ী কাউন্সিলর বিজেপির রাজেশ সিং টিকিট না পেয়ে নির্দলে দাঁড়িয়েছেন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct