আপনজন ডেস্ক: কর্নাটকের উদুপির কলেজে হিজাব পরা ছাত্রীদের প্রবেশে লাগাম পড়ার পর এবার তার প্রভাব অন্য রাজ্যেও পড়তে শুরু করেছে। শুক্রবার রাজস্থানে জয়পুর জেলার চাকসুতে একটি বেসরকারি কলেজে বুরকা পরে ছাত্রীদের ক্লাসে অংশ নিতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। তার প্রতিবাদে ওই সমস্ত ও চাত্রী ও তাদের অভিভাবকরা বিক্ষোভ দেখান। যদিও কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত চার বা পাঁচ দিন ধরে মেয়েরা বোরখা পরে আসতে শুরু করেছে, তবে শিক্ষার্থী এবং তাদের বাবা-মা বলেছেন যে তারা গত তিন বছর ধরে বুরকা পরে ক্লাসে অংশ নিচ্ছে। তা নিয়ে কেউ কখনও এতে আপত্তি জানায়নি। কিন্তু তারা বুরকা কিংবা হিজাব পরিধান করে ক্লাসে অংশ নিতে এলে এখন বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে। তবে কলেজ কর্তৃপক্ষ বলছে, তারা কখনোই মেয়েদের হিজাব বা হেডস্কার্ফ পরা থেকে বিরত রাখেনি। বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হওয়ায় পুলিশ কলেজে পৌঁছে বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করে।
কলেজ প্রশাসনের দাবি, গত ছয় থেকে সাত বছর ধরে কলেজে প্রচলিত ড্রেস কোড লঙ্ঘন করেই বুরকা পরে আসছেন কিছু ছাত্রী। এটি অন্যান্য শিক্ষার্থীদের ইউনিফর্মে না আসার জন্যও উৎসাহিত করে বলে মনে করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে চাকসুর কস্তুরী দেবী কলেজের সহকারী পরিচালক সুমিত শর্মা বলে, ‘গত তিন-চার দিন ধরে কিছু মেয়ে বুরখা পরে কলেজে আসতে শুরু করে। তাদের দেখে, বৃহস্পতিবার আরও কয়েকজন শিক্ষার্থীও ইউনিফর্ম ছাড়াই কলেজে এসেছিল।’ এর ফলে আমরা বৃহস্পতিবার প্রায় ৫০ জন শিক্ষার্থীকে ইউনিফর্ম ছাড়াই ক্লাসে অংশ নেওয়ার অনুমতি দিতে বাধ্য হয়েছি বলে জানান শর্মা। তবে, নিয়ম অনুযায়ী আমরা তাদের যথাযথ ইউনিফর্ম পরে কলেজে আসতে বলা হয়েছিল। কিন্তু শুক্রবার পাঁচটি মেয়ে আবার বুরকা পরে এসেছিল। আমরা যখন তাদের অনুমতি দেইনি, তখন তারা কলেজের বাইরে জড়ো হওয়া তাদের আত্মীয়দের ডেকে নিয়ে আসে এবং বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। তাদের মধ্যে ১০ থেকে ১৫ জন কলেজে প্রবেশ করতে অামাদেরকে বাধ্য করে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এই ঘটনার একটি ভিডিওতে দেখা যায়, বুরকা পরিহিত ওই তরুণীরা ও তাদের আত্মীয়-স্বজনদের এক কলেজ কর্মচারীর সঙ্গে তর্ক করতে শোনা যায়। তারা বলতে থাকেন, মেয়েরা গত তিন বছর ধরে বুরকা পরে আসছে এবং তাদের জিজ্ঞাসা করছে কেন এখন তাদের বোরকা পরতে বাধা দেওয়া হচ্ছে।
এক জনকে চিৎকার করে বলতেও দেখা যায়, যে পোশাকেই আসুক না কেন, কলেজকে সেই মেয়েকে অনুমতি দিতে হবে। কলেজ মেয়েদের হিজাব পরা থেকে বিরত রেখেছে অভিভাবকদের সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শর্মা। তিনি বলেন, তারা আরও অভিযোগ করেছে যে আমরা হিজাবের অনুমতি দিচ্ছি না। এটা ভুল। কিছু শিক্ষার্থী প্রায়শই ইউনিফর্মের সঙ্গে হিজাব পরে অংশ নেয়। হিজাব নিয়ে আমাদের কখনোই আপত্তি ছিল না, কিন্তু ইউনিফর্মের পরিবর্তে বোরকা পরা সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ প্রাথমিকভাবে জানায়, মেয়েদের অভিভাবকরা অভিযোগ করেছেন, কলেজ প্রশাসন তাদের হিজাব পরার অনুমতি দেয়নি। চাকসু থানার সাব ইন্সপেক্টর জিতেন্দ্র বলেন, বিএ প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের ১০ থেকে ১২ জন মুসলিম মেয়ে বুরকা পরে কলেজে পৌঁছায়।কলেজ প্রশাসন তাদের কলেজে প্রবেশ করতে অনুমতি দেয়নি। এর পরে তাদের পরিবার কলেজে পৌঁছায় এবং প্রতিবাদ করে। আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct