ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ‘অকেজো কামান’ বলে গত কালই একহাত নিয়েছিলেন বিরোধী শিবিরের হিলারি ক্লিন্টন। আর আজ তোপ দাগলেন খোদ প্রেসি়ডেন্ট বারাক ওবামা। সাফ জানালেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদের জন্য লড়াই কোনও বিনোদনমূলক রিয়্যালিটি শো নয়। একই সঙ্গে ট্রাম্পের যাবতীয় অতীত রেকর্ড এবং বিতর্কিত সমস্ত মন্তব্য খতিয়ে দেখা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ওবামা।
চলতি সপ্তাহে ইন্ডিয়ানা প্রাইমারি জিতেই রিপাবলিকান পার্টির তরফে মনোনয়ন পাওয়া কার্যত নিশ্চিত করে ফেলেছেন ট্রাম্প। তার পরে বস্তুত এই প্রথম বার ট্রাম্পকে নিয়ে সরাসরি কিছু বললেন ওবামা। প্রশাসন সূত্রের খবর, হাজারো বিতর্ক-বিরোধিতা সত্ত্বেও নিউ ইয়র্কের এই ধনকুবেরকে ঘিরে সম্প্রতি দেশের একাংশে অদ্ভুত উন্মাদনা তৈরি হয়েছে। তাই কূটনীতিকদের কেউ কেউ বলছেন, এ দিন ওবামা আসলে তাঁদেরও সতর্ক করতে চেয়েছেন। ট্রাম্পকে নিশানায় রেখে ঠারে-ঠারে বিঁধেছেন রিপাবলিকান শীর্ষ নেতাদেরও। তাঁর কথায়, ‘‘ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো এক জনকে নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করাতে হচ্ছে! একটা পার্টির পক্ষে এর চেয়ে বড় দুর্দশা আর কী হতে পারে?’’
ট্রাম্প কোনও ভাবেই দেশের প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন না বলে এর আগে একাধিক বার মন্তব্য করেছিলেন ওবামা। কিন্তু ভোটের ছবি এখন অন্য কথা বলছে। একের পর এক ককাস আর প্রাইমারি জিতে ট্রাম্প এরই মধ্যে নিজেকে হোয়াইট হাউসের অলিন্দে দেখতে শুরু করেছেন। এমনকী সূত্রের খবর, প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার প্রথম কয়েক মাসের মধ্যে নিজের কাজকর্মের ফিরিস্তিও ছকে ফেলেছেন তিনি। তাই এমন একটা পরিস্থিতিতে ওবামার সরাসরি সমালোচনায় অস্বস্তি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে রিপাবলিকান শিবিরে।
কোনও রকম রাখঢাক না রেখেই সাংবাদিকদের ওবামা এ দিন বলেন, ‘‘রিপাবলিকানদের প্রার্থী বাছাইয়ের পদ্ধতি এবং প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ট্রাম্পের প্রতি যথাযথ সম্মান রেখেই বলছি— প্রচারে নামার পর থেকেই এই রিপাবলিকান প্রার্থী নানা
বিষযে যে অবস্থান নিয়েছেন, তা বিতর্কের উর্ধ্বে নয়। এ সব নিয়ে আলোচনা হবেই।’’
শুধু মুসলিম-বিদ্বেষী মন্তব্য নয়, শরণার্থী ঠেকাতে আমেরিকা-মেক্সিকো সীমান্তে দেওয়াল তৈরির প্রস্তাব পেড়ে এরই মধ্যে বিস্তর ঝক্কি পোহাতে হয়েছে ট্রাম্পকে। ন্যাটোকে অনুদান দেওয়া বন্ধ করার প্রস্তাবেও দেশের একটা বড় অংশে ঝড় উঠেছে ট্রাম্প-বিরোধীদের। তবু ভোটের ময়দানে ট্রাম্পের এ ভাবে টেক্কা দিয়ে বেরিয়ে যাওয়াটা কূটনীতিকদের ভাবাচ্ছে। ভাবনা স্পষ্ট ওবামার মন্তব্যেও। ট্রাম্পকে নিশানায় রেখে তাঁর স্পষ্ট হুঁশিয়ারি — ‘‘কারও কোনও মন্তব্যে যদি আন্তর্জাতিক সম্পর্কে চিড় ধরে বা যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়, তা হলে তা কোনও ভাবেই তা মেনে নেওয়া হবে না। তাঁকে নিয়ে আলোচনা তো হবেই।’’ তাই রিপাবলিকান ভোটারদেরও ট্রাম্পকে নিয়ে পুনর্বিবেচনা করা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সূত্রের খবর, রিপাবলিকান শিবিরের তরফে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীর মনোনয়ন চূড়ান্ত হবে জুলাইয়ের কনভেনশনে। সেখানে কি ছক বদলাবে? ট্রাম্পের বদলে শেষ মুহূর্তে কি অন্য কোনও রিপাবলিকান হোয়াইট হাউসের দৌড়ে সামিল হবে? প্রেসিডেন্ট ওবামারও নজর সে দিকেই।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct