সজিবুল ইসলাম,ডোমকল,আপনজন: করোনা মহামারীতে গোটা বিশ্বকে ব্যতিব্যস্ত করে তুলেছে দীর্ঘ দু’বছর যাবৎ আর সেই করোনা মহামারী কিছুটা কমতেই রাজ্যে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছিলেন। শুরু হয়েছিল নবম দশম একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর পঠন পাঠন , যদিও ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতির হার একেবারেই ছিলনা বলেই চলে।
বাধ্য হয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকারা ছাত্রদের দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে অভিভাবকদের বুঝিয়ে কোনরকমে ছাত্র-ছাত্রীদের স্কুলমুখী করছিলেন, আবার সেই পরিস্থিতিতে স্কুলে টেস্ট পরীক্ষা কোনরকমে করানো হয়। উপস্থিতির হার বাড়তে না বাড়তেই আবারো বিশ্বজুড়ে ওমিক্রন নামক ভাইরাস দেখা দেয়। আর সেই ভাইরাসের সংক্রমণ সংখ্যা বাড়তে থাকে।
তাতেই গোটা ভারত বর্ষ অর্থাৎ বাংলাতেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। নতুন বছরের রাস কাটতে না কাটতেই রাজ্যে আংশিক লকডাউন অর্থাৎ করোনা বিধি-নিষেধ জারি করা হয়। করোনা বিধি-নিষেধের মধ্যেই পড়ে যাই স্কুলের পঠন পাঠন।
নির্দেশ অনুযায়ী স্কুলের পঠন পাঠন বন্ধ রাখা হয়।আর এই পঠন পাঠন বন্ধ করার কথা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না শিক্ষক থেকে ছাত্র-ছাত্রী ও তাদের অভিভাবকরা।
একাদশ ক্লাসের ছাত্রী জানান স্কুল খোলা না থাকলে আমাদের মতন গ্রাম বাংলার মেয়েদের পড়াশোনা করা খুব সমস্যা মধ্যে পড়তে হয়। গত দু’বছর ধরে বাড়িতে বসে থাকতে থাকতে আমাদের অনেক বান্ধবীর বিবাহ দিয়ে দিয়েছেন পরিবার থেকে। স্কুল বন্ধ থাকলে বাল্যবিবাহ প্রচলন বেড়েই চলেছে। করোনা বিধিকে মান্যতা দিয়েই স্কুলের পঠন পাঠন করা হোক বলেও তিনি জানান। এক অভিভাবক জানান যে স্কুল বন্ধ থাকাতে ছেলে মেয়েদেরকে নিয়ে বাড়িতে অনেক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে, অনেকে নেশার মধ্যে যুক্ত হয়ে যাচ্ছে, সংসারের হাল ধরতে ভিন রাজ্য থেকে শুরু করে বিদেশে পাড়ি দিচ্ছে। মূলত স্কুলমুখী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে তাই স্কুল চলুক করোনা বিধি মেনেই।
স্কুল শিক্ষক জানাচ্ছে স্কুলের পঠন পাঠন নিয়ে সরকারের বিকল্প ভাবে কোনও পথ বের করা প্রয়োজন নইলে আগামী প্রজন্ম শিক্ষা থেকে পিছিয়ে পড়বে। গত দু’বছরে ক্ষতি হয়ে গিয়েছে তার বিষয়ে আমরা উপলব্ধি করতে পারছি, আবারো স্কুলের পঠন পাঠন বন্ধ হয়ে যায় তাহলে ছাত্র-ছাত্রীদেরকে স্কুলমুখী করতে অনেকটাই সমস্যায় পড়তে হবে আমাদের।
আরো এক শিক্ষক জানান তিনি রাজ্যের মধ্যে মুর্শিদাবাদ পিছিয়ে পড়া একটি জেলা আর এই লকডাউনে আরো পিছিয়ে পড়বে বলেও তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড আর সেই শিক্ষাব্যবস্থার বর্তমানে ভেঙে পড়েছে। তাই সরকারের পরিকল্পনার প্রয়োজন আছে শিক্ষা ব্যবস্থা কে আগিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য।
মুর্শিদাবাদ জেলার গৃহ শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি পপন জানান যে সমস্ত কাজই চলছে মোটামুটি, প্রচার থেকে শুরু করে রাজনৈতিক সভা সবকিছুই যদি সম্ভব হয় তাহলে স্কুল কলেজের পঠন পাঠন কেন সম্ভব নয়। সমস্ত শ্রেনীর সম্ভব না হলেও বিশেষ করে দশম ও দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে বিশেষভাবে স্কুলের পঠন পাঠন করানো যেতে পারে এ বিষয়ে সরকারের উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন বলেও তিনি মনে করেন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct