আপনজন ডেস্ক: এ বছর রাজ্যে উচ্চমাধ্যমিকের পরীক্ষার ফল ঘোষণা হয় গত ২২ জুলাই। সেদিন এক সাংবাদিক সম্মেলনে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি মহুয়া দাস সর্বোচ্চ নম্বর প্রাপকের নাম ঘোষণার সময় তার ধর্ম পরিচয় তুলে ধরেছিলেন। তা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। তার জেরে অবশেষে শুক্রবার উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করলেন মহুয়া দাস।
তার পরিবর্তে নতুন সংসদ সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য।
উচ্চমাধ্যমিকের ফল প্রকাশের সময় সাংবাদিক সম্মেলনে সংসদ সভাপতি মহুয়া দাস বলেছিলেন,
এবারের উচ্চমাধ্যমিকে এককভাবে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে মুর্শিদাবাদের এক মুসলিম মেয়ে।
তার নাম রুমানা সুলতানান প্রথমে না বলে আবেগতাড়িত হয়ে তার বিরল কৃতিত্ব তুলে ধরতে গিয়ে আগেই মুসলিম পরিচয়ের কথা বলে ফেলেন।
শুধু তাই নয়, পিছিয়ে পড়া সমাজ থেকে উঠে আসা এই মুসলিম মেয়ের কৃতিত্বকে তুলে ধরতে মুসলিম সমাজে নারী শিক্ষা জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া শাখাওয়াত হোসেনের তুলনা টেনে আনেন।
এক সময় মুসলিম সমাজে যখন নারী শিক্ষার তেমন প্রচলন ছিল না, সেই সময় কলকাতার বুকে এক অবিস্মরণীয় রমণী বেগম রোকেয়া শাখাওয়াত হোসেন মুসলিম মেয়েদের শিক্ষায় এগিয়ে নিয়ে আসার জন্য বিশেষ ভূমিকা পালন করেন।
উপন্যাস ও নিবন্ধে তিনি মুসলিম মহিলাদের শিক্ষা জাগরণের কথা তুলে ধরে উজ্জ্বল স্বাক্ষর রেখেছেন।
কলকাতায় তারই প্রতিষ্ঠিত শাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল আজও সেই গৌরব বয়ে চলেছে।
সেভাবেই রাজ্যের মধ্যে শিক্ষার হারে সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া জেলা মুর্শিদাবাদ থেকে উঠে আসা মুসলিম মেয়ের কৃতিত্বের গৌরব ভাগ করে নিতে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন মহুয়া দাস।
আর তাই তিনি মুসলিম পরিচয় তুলে ধরেছিলেন উচ্চমাধ্যমিকে সর্বোচ্চ নম্বর প্রাপ্তের কথা বলতে গিয়ে। সেই অকপট সত্য কথা বলার জন্য বিভিন্ন মহল থেকে মহুয়া দাসের বিরুদ্ধে প্রবল সমালোচনা করা হয়।
পরিস্থিতি সামাল দিতে সংসদ সভাপতি মহুয়া দাসকে তার বিবৃতি দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে বিবৃতিও দিতে হয়। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হল না। অবশেষে তাকে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করতে হল।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct