শঙ্কর সাহা: সেদিন অফিস থেকে ফিরে হঠাত বিছানায় শুয়ে পড়লো অজিতেশ। আজ তার শরীরটি স্বাভাবিক লাগছে না। কোনো এক যে দুশ্চিন্তা আর একরাশ নৈরাশ্য অক্টোপাশের মত তাকে আজ ঘিরে রেখেছে।
“ তোমার চোখ মুখ আজ এতো শুকনো লাগছে কেন? শরীর খারাপ নাকি?
বিছানা থেকে উঠে এসে জামার বোতাম খুলতে খুলতে অজিতেশ বলে,সময়টা ভালো যাচ্ছেনা
হৈমী।স্ত্রী হৈমীর দিকে নির্লিপ্ত চোখে তাকিয়ে থাকে অজিতেশ। অফিসে প্রমোশনটি হয়তো এবারও হলনা। খবরটি শোনার পর হৈমীর মুখ শুকিয়ে গেল। এই অগ্নিমূল্য বাজারে এত কম বেতনে আর যে চলছে না!
অজিতেশকে আশ্বস্ত করে হৈমী বলে, মন খারাপ কোরোনা। এতো ভেঙ্গে পড়লে তোমার হবেনা!
ছোট্ট মেয়ে দিয়া পাশের ঘরেই পড়ছিল। হঠাত বাবা-মার আলোচনার কিছুটা শুনে নেয় ছোট্ট দিয়া। ঘরে ঢুকে দিয়া বাবার হাতটি ধরে বলে, “ বাবা ,আমার নতুন জামা লাগবেনা। আমার পুরোনো জামাটি এখনো ছেঁড়েনি। হঠাত অজিতেশের চোখটি অশ্রূসজল হয়ে ওঠে।
ঘরে ঢুকে হৈমী অজিতেশের হাতে কিছু টাকা তুলে দেয়। অজিতেশ জানতে চাইলে হৈমী জানায় সংসারের কাজ করে বাকিটা সময় সে কিছু সেলাইয়ের কাজ করতো যা কোনোদিন অজিতেশকে জানায় নি। আজ আর নিজেকে লুকিয়ে রাখতে পারেনি হৈমী। তাই কিছু টাকা দিয়ে বলে ,-টাকাটি রেখে দিতে। মাসের ক’দিন তো এখনো বাকি আছে। সংসার সামলাতে টাকাটি তিনি যেন খরচ করেন। সেদিন অজিতেশের চোখে জল এল।
স্ত্রী হৈমীর দিকে নির্লিপ্ত চোখে তাকিয়ে থাকে । দন্ডায়মান দুজনের মাঝখানে আজ যেন নীরব বোঝাপড়া হয়ে গেলো..
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct