মঞ্জুর মোল্লা, নদিয়া: ট্রেনে পাওয়া পরিত্যক্ত দেড় মাসের শিশু কন্যাকে কোলে তুলে নিলেন এক ফেরিওয়ালা। ৪.৫৮আপ শান্তিপুর ট্রেনে পরিত্যক্ত সদ্যোজাত দেড় মাসের বাচ্চাকে ঘিরে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। ট্রেনের বাঙ্কে বা সিটের তলায় পরিত্যক্ত অবস্থায় ব্যাগ জলের বোতল ছাতা অনেক কিছুই পরিত্যক্ত অবস্থায় পেয়ে থাকেন অনেকেই। কিন্তু দেখা গেল শুয়ে রয়েছেএবার সদ্যোজাত ফুটফুটে দেড় মাসের বাচ্চা শুয়ে রয়েছে সিটের দুই সারির মাঝখানে। পাশেই ছিল কিছু ছোটখাটো প্লাস্টিকের ব্যাগে জামা কাপড়, সম্ভবত শিবরাত্রির কিছু গোটা ফল। ঘটনাটি ঘটে শিয়ালদা শান্তিপুর লোকালে। প্রচণ্ড ভিড়ের মাঝে কেউ হয়ত খেয়াল করেনি, তবে রানাঘাট এবং কালীনারায়ণপুর স্টেশন থেকে ট্রেন ছাড়ার পরে, ভিড় কমে কিছুটা। তবুও প্রত্যেকে নিজের নিজের সিটে বসে!
অপরের বাচ্চা কোলে তুললে আইনি নানান জটিলতা আসতে পারে সেভাবেই হয়তো একে অপরের সাথে কানাঘুষায় ব্যস্ত! শান্তিপুর পাবনা কলোনির সুমিত্রা সরকার পেশায় কাপড় ব্যবসায়ী কলকাতা বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ফেরি করেন। প্রতিদিন ট্রেনে কলকাতায় যান আর রাতে শান্তিপুর লোকালে ফেরেন। তবে শুক্রবার একটি ট্রেন আগেই ফিরছিলেন বাড়িতে অর্থাৎ শান্তিপুর স্টেশনে ঢোকার ট্রেনে। দুই একজন প্রত্যক্ষদর্শীর মতে সুমিত্রা সরকার নামের ওই মহিলা মানুষের কোলাহলের মধ্যে থেকে কোলে তুলে নেন শিশুটিকে। এরপর সোজা আরপিএফ এর কাছে আরপিএফ ফোন করে চাইল্ড লাইন কে, তার মধ্যেই শিশুটি শারীরিক অবস্থা কেমন আছে তা জানার জন্য হাসপাতালে দেখিয়ে নিয়ে আসে রেল কর্তৃপক্ষ। সম্পূর্ণ সুস্থ থাকার কারণে, চাইল্ড লাইনের হাতে তুলে দেওয়া হয়। আইন ভুলে মানবিকতার কারণে মাতৃস্নেহে, কোলে তুলে নেওয়া শিশুটির নতুন জীবন দানকারী সুমিত্রা সরকার জানান তিনি এক কন্যা এবং এক পুত্রের জননী। অতশত না বুঝে প্রথমেই মনে হয়েছিল তার প্রাণ বাঁচানোর একজন মা হিসেবে জরুরি। রেল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, পরিত্যক্ত দু একটি প্লাস্টিকের ব্যাগের মধ্য থেকে একটি ফোন নাম্বার পাওয়া যায়, তবে ওই ফোন বেশ কিছুক্ষণ সময়ের জন্য নট রিচেবল লক্ষ্য করা গেছে। এখনও পর্যন্ত বাচ্চাটির কোনো পরিবারের ঠিকানা বা খোঁজ খবর পাওয়া যায়নি। তবে চাইল্ড লাইন রানাঘাটে শিশুদের রাখার সরকারি এসএএ-তে আপাতত ব্যবস্থা করেছে বলেই জানা যায় চাইল্ড লাইন সূত্রে।
ঘটনাটি জানাজানি হতে এরই মধ্যে স্থানীয় বেশকিছু নিঃসন্তান দম্পতি বাচ্চাটিকে আজীবন প্রতিপালনের দায়িত্ব নিতে আবেদন জানালেও, আইনি নিয়মের কথা বলেন রেল কর্তৃপক্ষ। আরপিএফ ফোন করে চাইল্ড লাইনকে। তার মধ্যেই শিশুটি শারীরিক অবস্থা কেমন আছে তা জানার জন্য শান্তিপুরের জেনারেল হাসপাতালে দেখিয়ে নিয়ে আসে রেল কর্তৃপক্ষ। সম্পূর্ণ সুস্থ থাকার কারণে, চাইল্ড লাইনের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct