আপনজন ডেস্ক: উত্তরপ্রদেশের হাথরাসে এক দলিত কন্যার গণধর্ষণের খবরে দেশজুড়ে প্রতিবাদ ধ্বনিত হয়েছে। রাতের অন্ধকারে হাথরাসের গণধর্ষিতার দেহ সৎকার করা হয় উত্তরপ্রদেশ প্রশাসনের উদ্যোগে। এই ঘটনার পর দেশজুড়ে প্রতিবাদ ধ্বনিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গত নভেম্বরে এলাহাবাদ হাই কোর্ট এ ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করে। তারপর থেকেই চাপ বেড়েছিল যোগী সরকারের উপরে। অবশেষে হাথরাসের বিতর্কিত জেলাশাসককে বদলির সিদ্ধান্ত নিল উত্তরপ্রদেশ সরকার। রাজ্যের মোট ১৭ জন আইএএস অফিসারকে বদলি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন জেলাশাসক প্রবীণকুমার লস্কর।
উল্লেখ্য, হাথরাসের ঘটনায় জেলাশাসককে ভর্ৎসনা করেছিল এলাহাবাদ হাইকোর্ট। পরে তার বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ না নেওয়ায় যোগী সরকারের ভূমিকা নিয়েও কার্যত প্রশ্ন তুলেছিল হাই কোর্ট। এর আগে গত সেপ্টেম্বরে গোটা ভারত শিউরে উঠেছিল হাথরাসের নির্যাতিতার পরিণতি দেখে। ১৪ সেপ্টেম্বর ১৯ বছরের ওই যুবতীকে গণধর্ষণ করে অভিযুক্ত চার যুবক। শারীরিক অত্যাচারের ফলে তার সারা শরীর পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে যায়। পরে দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে ওই তরুণীর মৃত্যু হলে অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে গর্জে ওঠে গোটা দেশ। দেশজুড়ে শুরু হয় আন্দোলন। সমালোচিত হয় যোগী আদিত্যনাথ সরকারের ভূমিকাও।
সেই সময় প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েন প্রবীণকুমারও। একটি ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি নির্যাতিতার বাড়িতে গিয়ে খোলাখুলি হুমকি দিচ্ছেন তাদের। ঠান্ডা স্বরে বলছেন, সাংবাদিকরা চলে যাবেন। কিন্তু তাদের এখানেই থাকতে হবে। ভিডিওটি প্রকাশ্যে আসার পরে নিন্দার ঝড় বয়ে যায়। কীভাবে মেয়েহারা অসহায় পরিবারকে তাদের দুঃসময়ে এভাবে হুমকি দিতে পারেন একজন জেলাশাসক, প্রশ্ন ওঠে তা নিয়ে। তার আগে নির্যাতিতার মা জানিয়েছিলেন, অনেক হাতে পায়ে ধরার পরেও তাদের মেয়ের দেহ পাননি তারা। পুলিশ মাঝরাতে জোর করে দাহ করে দেয় দেহটি। এক্ষেত্রেও পুলিশের পাশাপাশি জেলাশাসকের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। অবশেষে প্রবীণকুমারকে হাথরাস থেকে সরিয়ে দিতে একপ্রকার বাধ্যই হল যোগী প্রশাসন। তাকে মির্জাপুরের জেলাশাসক হিসেবে নিয়োগ করা হল। তার জায়গায় হাথরাসের দায়িত্বে এলেন রমেশ রঞ্জন। তাই এভাবেই মুখ রক্ষা করতে চাইছে উত্তরপ্রদেশ সরকার।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct