প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় কীভাবে সফল হওয়া যায় তার প্রয়োজন সঠিক প্রশিক্ষণ, গাউড ও পরামর্শ। সেই কাজে নিয়োজিত চাকরি পরীক্ষার রাজ্যের অন্যতম সেরা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র অ্যাকাডেমিক অ্যাসেসিয়েশন। এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রধান কর্ণধার ও বিশিষ্ট কেরিয়ার পরামর্শদাতা সামিম সরকার শুরু করেছেন নতুন কলাম। আজ প্রথম কিস্তি।
সবে আমরা নিউ ইয়ার সেলিব্রেশনের হ্যাং ওভার কাটিয়ে উঠেছি, বিশ্বব্যাপী শুরু হল করাল করোনার তাণ্ডব। দাম্ভিক মানুষ উপলব্ধি করলো প্রকৃতির কাছে কতটা অসহায়। কাতারে কাতারে মানুষ আত্মসমর্পণ করতে শুরু করলো করোনার কাছে। হিউমান অ্যাক্টিভিটি সংকুচিত হতে শুরু করল। মারণ করোনা ভাইরাসের দাপটে মানবজাতির অস্তিত্ব আজ বিপন্ন। তুষার যুগের মতোই মানুষ হলো আবার গৃহবন্দি। চারি দিকে শুধু মৃত্যু সংবাদ, সারা বিশ্ব যেন এক মহা শ্মশান। ভয়, অসহায়তা, অবিশ্বাস গ্রাস করতে থাকলো মানব সভ্যতাকে। সারা বিশ্বের সঙ্গে ভারতও হল অবরুদ্ধ - লকড ডাউন। মিলল অবকাশ, ভীত সন্ত্রস্ত আতংকিত হওয়ার জন্য। কেউ কেউ এই অফুরন্ত সময়কে কাজে লাগাতে চাইলো, বেশির ভাগ মানুষ টিভির পর্দায় চোখ রেখে আতংকিত জীবন কাটাতে থাকল I
করোনা পরবর্তী সময়ে আমরা এখন এক অদ্ভুত পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে চলেছি।কিছু না করেও দেশের জন্য অনেককিছু করার সুযোগ এসেছে।ছাত্রছাত্রীদের হাতে এখন পর্যাপ্ত সময়।আসন্ন পরীক্ষাগুলি স্থগিত রাখা হয়েছে।পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে তা আগাম বলা যাচ্ছে না। ছাত্রছাত্রীদের অতি অবশ্যই এই সময়টিকে কাজে লাগাতে হবে।অযাচিতভাবে চলে আসা এই সময়টির ফায়দা তুলতে হবে ব্যাপকভাবে।যেহেতু হাতে পর্যাপ্ত সময়,তাই পড়াশুনার ওরিয়েন্টেশন পরিবর্তন করা যেতেপারে৷এখন যেহেতু বেশীরভাগ পরীক্ষা “এমসিকিউ' টাইপের হয়, তাই আমরা অবজেকটিভ টাইপের ওয়ানলাইনার নোটস কিংবা বহু বিকল্পিক প্রশ্নোত্তর পড়তে অভ্যস্ত।এই ধরনের প্রস্তুতিতে বিষয়ের প্রতি দখল বা ব্যুৎপত্তিতে মন জন্মায় না, বিষয়ের ওপর ভাসাভাসা জ্ঞান জন্মায়।প্রশ্ন কঠিন হলে বা একটু ঘুরিয়ে এলে উত্তর করতে সমস্যা হয়, নেগেটিভের খপ্পরে পড়তে হয় অনেক সময়।তাই এই বাড়তি সময়ে বিষয়গুলিকে বিশদে বা গভীরে গিয়ে অধ্যয়ন করা জরুরী। অর্থাৎ এখন আমাদের দরকার এমসিকিউ বা সংক্ষিপ্ত নোটস ছেড়ে, টেক্সট বই খুঁটিয়ে পড়া। প্রতিটি পারলে নিঃসন্দেহে বিষয়গুলির ওপর ফান্ডা তৈরী হবে, বিভিন্ন বিষয়ের ওপর স্বচ্ছ ধারণা তৈরী হবে।যার ফলে ছাত্রছাত্রীদের ভিত সুদৃঢ় হবে যা দীর্ঘমেয়াদী ভিত্তিতে ছাত্রছাত্রীদেরআত্মবিশ্বাস ধরে রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালনকরবে। নিদারুণ এই সঙ্কট কালে বিহ্বল না হয়ে, যুক্তি সম্মত ও সুবিবেচকের মতো আচরণ করতে হবে। বিপদের এই সময়কে আমরা চাইলে তার জন্য দরকার পরিনতিবোধ এবং সুপরিকল্পিত পদক্ষেপ। কিভাবে তা সম্ভব সে ব্যাপারে পরবর্তী অনুচ্ছেদগুলিতে আলোচনা করাহয়েছে।
সময় কখনও থেমে থাকে না
পরিবেশ পরিস্থিতির চাপে আজ আমরা গৃহবন্দি।আমরা যত আইসোলেটেড থাকব ততই নিজের মঙ্গল, মঙ্গল দেশেরও।স্কুল কলেজ নেই, নেই টিউশন অফিস বাজার, হাতে অফুরন্ত সময়। সময় যেন কাটতেই চায় না, এমন পরিস্থিতির কথা কি আমরা দিন দশেক আগেও ভাবতে পেরেছিলাম। এই চরম সঙ্কটময় সময়কে করে তুলতে পারি আশীর্বাদস্বরূপ। আমাদের হাতে এখন অসীম সময়।এখন আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে এই সময়টিকে আমারা কিভাবে ব্যবহারকরব। আড্ডা দিয়ে, সোশ্যাল মিডিয়ায় মশগুল থেকে, নাকি গঠনমুলক কিছু করে। ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইউটিউবে সময় ভালই কাটে, নেটফ্লিক্সে তো আরও ভালো। সময় কাটানো, নাকি সময়কে কাজে লাগানো! নিতে হবে সঠিক সিদ্ধান্ত। দেখতে দেখতে দুর্যোগময় এইসময় অচিরেই কেটে যাবে। সেদিন হাতে কি থাকবে। ছাত্রছাত্রীদের টিভিতে করোনার কাউন্টডাউন না দেখে সময়টিকে সম্পূর্ণভাবে পড়াশুনায় নিয়োজিত করা দরকার।পড়াশুনা করার জন্য অভূতপূর্ব এক সুযোগ আমাদের সামনে উপনীত হয়েছে।চাকরীর পরীক্ষা প্রস্তুতির আদর্শ সময় এর চেয়ে ভালো আর কিছু হতে পারেনা।এখন প্রয়োজন সবকিছু ত্যাগ করে একাগ্রচিত্তে পড়াশুনায় ঝাঁপিয়ে পড়া।তাতে একদিকে যেমন টেনশন কাটিয়ে ওঠা যাবে, অপরদিকে তেমন ইতিবাচক কিছু পদক্ষেপও করা যাবে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct