আপনজন ডেস্ক: ফের উগ্র সাম্প্রদায়িক বাহিনীর হাতে নিগৃহীত হলেন তবলিগ জামাতের কর্মীরা। দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজে তবলিগি সম্মেলনকে ঘিরে বিতর্ক ওঠার পর তবলিগিরা উগ্র সাম্প্রদায়িক বাহিনীর নিশানায় পরিণত হয়েছে। প্রথম দিকে দেশে করোনা সংক্রমণের জন্য তাদেরকে দায়ী করে অপবাদ ছড়িয়ে বিদ্বেষ সৃষ্টি করা হয়। অনেক বিজেপি নেতা অবশ্য গুলি করে মারারও নিদান দিয়েছিলেন। অনেক জায়গায় তবলিগিদের মারধর করারও অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছিল। আর বোম্বে হাইকোর্ট তবলিগিদেরকে বলির পাঁঠা করা হয়েছে বলার পর অনেকে ভেবেছিলেন যে তবলিগিদের সম্পর্কে হয়তো বিরূপ মনোভাব বিদায় নেবে। কিন্তু বাস্তবে তার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
গত বুধবার মহারাষ্ট্রের এক প্রত্যন্ত গ্রামে জনা চারেক তবলিগি কর্মীকে ঘিরে ধরে ব্যাপক মারধরের ঘটনা ঘটেছে মহারাষ্ট্রের বিড জেলার মারাঠাওয়াড়া এলাকার হুডলামসে। তাদেরকে শুধু মারধরও নয়, দেশ ছেড়ে চলে যেতে বলা হয় বলে অভিযোগ। এমনকী এদেশে থাকার তারা উপযুক্ত নয় বলেও কটাক্ষ করা হয়।
এই বিষয়টি সামনে আসে যখন ‘জাগর প্রতিষ্ঠান’ নামে এক মানবাধিকার সংস্থার প্রধান অশোক তাংগাড়ে বিষয়টি নিয়ে সোচ্চার হন। অশোক তাংগাড়ে এক ইংরেজি নিউজ পোর্টালকে জানান, তার সংগঠন মুসলিম, দলিত, পরধিস প্রভৃতি পিছড়ে বর্গের মানুষদের উপর অত্যাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে আসছে।
ওই মানবাধিকার সংগঠন সূত্রে জানা গেছে, নিজের শহর থেকে মহারাষ্ট্রের বিড জেলায় আসলাম আথার, সৈয়দ লায়েক, নিজামুদ্দিন কাজি ও সুহেল তাম্বোলি নামে চার ব্যক্তি তবলিগের জন্য বেরিয়েছিলেন গাড়ি করে। রাতে গাড়ি খারাপ হয়ে যাওয়ার থামাতে হয়। সেই সময় দুজন ব্যক্তি বাইকে চড়ে যেতে যেতে তাদের দিকে তাকায়। তারপর তাদেরকে লক্ষ্য করে নান কটূক্তি করতে থাকে। এরপর তারা ছয় বন্ধুকে তারা ডেকে নেয়। তারপর ওই চারজন তবলিগিকে মারতে থাকে।
অশোক তাংগাড়ে বলেন, মুসলিম হওয়ার কারণেই সন্দেহের চোখে দেখে তাদেরকে অভিযুক্ত করা হয়। তিনি আরও বলেন, রাতে এই এলাকায় মুসলিম, দলিত ও পরধিসরা ভ্রমণ করতে পারেন না।
আক্রমণের শিকার হওয়া তাম্বোলি পুলিশকে জানিয়েছেন, আক্রমণকারীরা তাদের দাড়ি ধরে টেনে টুপি খুলে নেয়। তারপর বলতে থাকে, ‘তুম হিন্দুস্তান মে র্যাহনে তে লায়েক নেহি হো, তুম ইহাঁ নেহি রাহ সাকতা’। তারা ইট, লাঠি দিয়ে তাদেরকে মারে বলে অভিযোগ করেন তাম্বোলি।
তাম্বোলি জানান, দুজন সঙ্গী আথার ও লায়েত কোনওভাবে পালিয়ে একটা খামারে লুকিয়ে থাকলেও তারা পারেননি। তাই তারা মারধর খান ক্রমাগত। পরে পুলিশ এসে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। এ ব্যাপারে পুলিশ জানিয়েছে দুজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct