আপনজন ডেস্ক: বামফ্রন্টের দীর্ঘ ৩৪ বছরের শাসনামলে বড় ধাক্কা খেয়েছে টাটাদের কাছে সিঙ্গুরের জমিদান। এই সিঙ্গুর আন্দোলনকে কেন্দ্র করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিঙ্গুরের মানুষদের কাছে টেনে অবশেষে টাটাদের পত্রপাঠ বিদায় করে দেন। কাউকে পরোয়া না করে সিঙ্গুরে অনিচ্ছুক চাষিদের জমি ফেরানোর সিদ্ধান্ত নেয মমতার নেতৃত্বাধনি তৃণমূল সরকার। জোর করে চাষিদের জমি কেড়ে নেওয়া নয়, এই নীতির উপর ভর করেই ফের এগোতেই চায়। সে কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বীরভূমের দেউচা পাঁচামির কয়লা প্রকল্পের বিষয়ে মমতা জানিয়ে দিলেন, জমি দিলে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ, বাড়ি, একজনের কর্মসংস্থান মিলবে। শীঘ্রই বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তর কোল ব্লক বীরভূমের দেউচা পাচামিতে কয়লা উত্তোলন শুরু হবে বলে জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আশ্বস্ত করেন, যাদের কয়লা ব্লক এলাকার মধ্যে বাড়ি সহ জমি রয়েছে, তারা কোনও ভাবেই বঞ্চিত হবে না। তাদের জন্য সরকার উপযুক্ত ত্রাণ ও পুর্নবাসনের ব্যবস্থা করবে। তার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মঙ্গরবার বিধানসভায় দাঁড়িয়ে পাঁচামি প্রকল্পে ১০ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজের কথা জানান। এই প্রকল্পে জমিহারার পাবেন বিঘা প্রতি ১০ লাখ থেকে ১৩ লাখ টাকা। সঙ্গে পরিবার পিছু একজনের চাকরিও।
সিঙ্গুরের প্রসঙ্গ তুলে মুখ্যমন্ত্রী সাফ জানিয়ে দেন, সিঙ্গুরে যেভাবে জমি অধিগ্রহণ হয়েছে দেউচায় সেভাবে জমি নেওয়া হবে না। তাদের কর্মসংস্থান, বাসস্থান সবরকমের ব্যবস্থা করা হবে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী জানা গেছে, ওই এলাকায় ১২টি গ্রামে ৪ হাজার ৩১৪টি বাড়িতে ২১ হাজারেরও বেশি মানুষের বাস রয়েছে। জমিহারারা যেমন শুধু টাকা নয়, জমি-বাড়ির সঙ্গে সঙ্গে ক্ষতিপূরণে চাকরি যেমন পাবেন তেমনি জিনিসপত্র স্থানান্তর, রক্ষণাবেক্ষণ এবং খামারে থাকা পশুপাখিদের জন্যেও আরও সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা পাবেন বাসিন্দারা।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে মোট ১৭টি কয়লা ব্লককে কেন্দ্রীয় কয়লা মন্ত্রকের তরফ থেকে বন্টন করা হয়। যার মধ্যে দেউচা-পাচামি কয়লাখনিও রয়েছে। এটি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম কয়লা খনি। সেখানে ২১০২ মিলিয়ন টন কয়লা মজুত আছে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct