নাজিম আক্তার, হরিশ্চন্দ্রপুর: বাড়ি বাড়ি গিয়ে চুল দাড়ি কেটে দিনের শেষে যা সামান্য আয় হতো তা দিয়ে চলতো নাপিতের পরিবার। পরিবারের একমাত্র রোজগেরে সদস্যের হঠাৎ মৃত্যু হওয়ার পর থেকেই চরম সমস্যায় পড়েছে সেই পরিবারের সদস্যরা। এখন নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা। কচু শাক ও শুকনো মুড়ি খেয়ে কাটছে মা ও মেয়ের জীবন।এমনই এক মর্মান্তিক দুর্দশার চিত্র ধরা পড়েছে মালদহ জেলার চাঁচল-২ নং ব্লকের ভাকড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের রসুলপুর গ্রামে।
জানা যায় রসুলপুর গ্রামের বাসিন্দা দীপু প্রামাণিক (৪৭) এক সপ্তাহ আগে চিকিৎসার অভাবে মারা গেছে।সেই ছিল পরিবারের একমাত্র রোজগেরে। নাপিতের কাজ করেই চলত তার পরিবার। মৃত্যুরএক সপ্তাহ কাটতে না কাটতেই পরিবারে শুরু হয়েছে অভাব-অনটন।পরিবারে রয়েছে স্ত্রী ভানু প্রামাণিক(৩৫) ও এক নাবালিকা মেয়ে ইতি প্রামাণিক (১৩)।এক চিলতে মাটির ভাঙা বাড়িতে অর্ধাহারে ও অনাহারে কাটছে তাদের জীবন। সরকারি সাহায্যের আশায় তাকিয়ে রয়েছে মা ও মেয়ে। মৃতের স্ত্রী ভানু প্রামাণিক জানান এক সপ্তাহ আগে তার স্বামী চিকিৎসার অভাবে মারা গেছে।পরিবারে উপার্জনকারী কেউ নেই।কচু শাক ও শুকনো মুড়ি খেয়ে কাটছে তাদের জীবন।সে আবার পাঁচ বছর ধরে প্যারালাইসিস রোগে আক্রান্ত।দুটি হাত অকেজো হয়ে পড়েছে।কিছুই করতে পারে না।মুখে আহার তুলে দেন মেয়ে ইতি।একটা ভাঙাচোরা মাটির ঘরে মা ও মেয়ে দিন গুজরান করেন।এই বর্ষাতেই মনে হচ্ছে বাড়িটা ভেঙে পড়বে বলে আশঙ্কা।বাড়িতে নলকূপ ও সৌচালয় কিছুই নেই। বিদ্যুৎ বিল দিতে পারেনি বলে বিদ্যুৎ দপ্তরের কর্মিরা বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে চলে গেছে অনেক দিন আগেই। রাতে কুপি বাতি জ্বালিয়ে পড়াশোনা করছে সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী ইতি! টাকার অভাবে টিউশনিও পড়তে পারে না সে।একমাত্র রেশন সামগ্রী ছাড়া সরকারি কোনো সুযোগ সুবিধা পাইনি তারা। স্বাস্থ্য সাথী কার্ড না হওয়ায় অর্থের অভাবে সে নিজের চিকিৎসাও করাতে পারছে না।এখন কিভাবে চলবে পরিবার দুঃচিন্তায় পড়েছে মা ও মেয়ে। পঞ্চায়েত সদস্য সঞ্জয় মন্ডল জানান সে পরিবারটিকে সামর্থ্য অনুযায়ী সাহায্য করবেন।তার স্বামীর মৃত্যু সার্টিফিকেট হয়ে গেলেই বিডিওকে বলে বিধবা ভাতা চালু করিয়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করবেন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct