রাকিবুল ইসলাম ও জৈদুল সেখ: উচ্চমাধ্যমিকে এককভাবে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে রাজ্যে প্রথম হয়েছে মুর্শিদাবাদের কান্দির রুমানা সুলতানা। রুমানা পাঁচশোর মধ্যে ৪৯৯ নম্বর পেয়েছে। সেই সঙ্গে অষ্টম হয়েছে বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজিয়েট স্কুলের ছাত্র প্রীতম চক্রবর্তী। এই দুই কৃতী ছাত্রকে অভাবনীয় সাফল্যের জন্য শুক্রবার বহরমপুর প্রশাসনিক ভবনে জেলাশাসক শরদ কুমার দ্বিবেদী ও জেলা পুলিশ সুপার কে সাবেরী রাজকুমার সহ অন্যান্য আধিকারিকদের উপস্থিতিতে সম্বর্ধনা দেওয়া হয়।
এদিনের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক ঘোষণা করেন, সুলতানা যেহেতু মুর্শিদাবাদের নাম উজ্জ্বল করে উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথম হয়েছেন একজন ছাত্রী, একজন কন্যাশ্রী! তাই তাঁকে কন্যাশ্রী প্রকল্পের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডার করা হচ্ছে বলে ঘোষণা করা হয়। সূত্রের খবর, মূলত ছাত্রীদের আরও উৎসাহ বাড়ানোর জন্যই কন্যাশ্রী প্রকল্পে তাকে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর করা হচ্ছে। আগামী দিনে কন্যাশ্রীর বিভিন্ন প্রচারমূলক কর্মসূচিতে তাকে দেখা যাবে সামনের সারিতে। জেলাশাসক শরদ কুমার দ্বিবেদী বলেন, “মুর্শিদাবাদের নাম উজ্জ্বল করেছে রুমানা। সে কন্যাশ্রী। একজন যোদ্ধা ছাত্রী। তাই তাকে কন্যাশ্রীর ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডার করা হবে।” জেলাশাসকের আশা জেলার অন্যান্য ছাত্রীকে উৎসাহিত করবে রুমানা। তাঁর এই ঘোষণায় অত্যন্ত খুশি মেধাবী ছাত্রী রুমানা সুলতানা। উল্লেখ্য, মুর্শিদাবাদের কান্দি পৌরসভা এলাকার এগারো নম্বর ওয়ার্ডের হোটেল পাড়ার বাসিন্দা রুমানা সুলতানা। কেবলমাত্র উচ্চমাধ্যমিক নয়, মাধ্যমিক পরীক্ষায় রাজ্যে পঞ্চম হয়েছিল রুমানা। তার সাফল্যে খুশি পরিচিতরা এবং গর্বিত মুর্শিদাবাদের বাসিন্দারাও।
পরীক্ষা না হলেও মূল্যায়ন পদ্ধতিতে উচ্চ মাধ্যমিকে এ রাজ্যে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছেন রুমানা সুলতানা। তাঁকে নিয়ে উচ্ছ্বাস শুরু হয়েছে বৃহস্পতিবার থেকেই। কিন্তু পাশাপাশিই শুরু হয়েছে বিতর্ক। তাঁর কথা বলতে গিয়ে নাম না করে ‘মুসলিম’ বলে পরিচয় দিয়েছেন উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি মহুয়া দাস। আনন্দের মাঝেও সেই বিষয়টাই বিতর্ক তৈরি করেছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক মহল থেকে উঠেছে নিন্দার ঝড়। এস এফ আই এবং কংগ্রেসের সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদ জানিয়েছেন। অধীর চৌধুরী লিখেছেন-
“মুসলিম মহিলা প্রথম হয়েছে” বলে যারা বারবার বলছে তাদের এত অবাক কেন হতে হচ্ছে!!!
মুসলিম মেয়ে বলে কি কোনো অঘটন ঘটেছে!!!
মেধা বুদ্ধি পরিশ্রম করে প্রথম হতে হয়। কাউন্সিলের প্রেসে শ্রুতিকটু শুনতে লাগে যখন বলা হয় “প্রথম হয়েছে মুসলমান মেয়ে”! ছাত্রীর নাম দেখে সে কোন্ ধর্মের বোঝানোর দায়িত্ব না নিলে খুশি হব।”
এ বিষয়ে রুমানারও বক্তব্য, ‘মুসলিম পরিচয় না বললেই ভাল হত। আমি তো একজন ছাত্রী হিসেবে এই সাফল্য পেয়েছি। তাই ছাত্রী পরিচয়টাই এক্ষেত্রে বেশি করে প্রযোজ্য। তবে আমি এটা নিয়ে কোনও বিতর্ক চাই না।’
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct