ম্যাডাম শিল্পী
বারী সুমন
শিল্পী সেদিন খুব মন খারাপ করেছিলো, যেদিন তার কলেজের অ্যাসাইনমেন্টটা জমা দিতে পারছিলোনা। তার চোখের দিকে তাকানো যাচ্ছিলোনা। টলটল করছিলো চোখের পানি। যেন গাছের মধ্যে একগুচ্ছ ফুল ফুটে আছে একটা বাতাসেই ঝরে পড়বে।
কিন্তু সেতো এমন ছিলোনা। ভার্সিটিতে সবাই তাকে খুব ভালো মেয়ে হিসেবে চেনে, জানে। বাদামওয়ালা, আইসক্রিমওয়ালা এমনকি যে মামাটা সিঙারা বিক্রি করে সেও জানে শিল্পী কতো ভালো!
শিল্পীর এই পরিবর্তনটা একদিনে হয়নি। অনেকগুলো বছরের ব্যবধানে শিল্পী আজ এমন হয়েছে। সেজন্য আপনি কাকে দায়ী করবেন? পারিপার্শ্বিক পরিবেশ নাকি তার নিজেকে।
আজ থেকে প্রায় ৩ বছর আগেও শিল্পী ছিলো সবার মতো স্বাভাবিক একটা মেয়ে। সবসময় হাসির রেখা লেগেই থাকতো ঠোটের কোণে। সেই মেয়েটা তখনও অবিশ্বাস্য রকমের ছবি আঁকতে পারতো। অথচ আজ সে তার নিজের অ্যসাইনমেন্টটা আঁকতে পারছেনা। স্কুল জীবনে বরাবরই সে ছবি আঁকায় প্রথম হতো। আর আজকের অ্যসাইনমেন্ট করার জন্য তার অন্যের দ্বারস্থ হতে হয়।
স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে শিল্পী যখন কলেজে ভর্তি হয় সুন্দর গোলগাল চেহারার একটা মেয়ে ছিলো। চোখ দুটো টানা টানা হরিণীর মতো। যে কেউ দেখলে তার চোখের মায়ায় পরে যাবে। অথচ আজ সে চোখে করুণ চাহনী। তার চোখ, মুখের গঠন, নাক, ওষ্ঠ সব মিলিয়ে অসাধারণ একটা অবয়ব। কলেজের প্রতিটা ক্লাস মনোযোগ সহকারে করতো শিল্পী। স্যারদের লেকচার নোটগুলো নিয়মিত লিখে নিতো। পড়াশুনায় অনেক ভালো। স্যাররা সবসময় তার প্রশংসা করতো। বাবা মায়ের কাছেও আদরের সন্তান ছিলো শিল্পী।
বলাই হয়নি, শিল্পীরা এক ভাই এক বোন। শিল্পীর বাবা একজন সরকারী চাকুরিজীবী। মা গৃহিণী, ভাইটা বাবার অঢেল টাকা আর বাড়তি আদর পেয়ে আদরে বাঁদড় হয়েছে৷ সারা দিন টই টই করে ঘুরে বেড়ায় কোথায় কোথায় কে জানে। পড়াশুনা কলেজ পর্যন্ত করেছে, তারপর আর পড়েনি। বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে ধীরে ধীরে পড়ার অভ্যাস থেকে অনেক দূরে সরে যায়। কোন চাকরিও করেনা, এমনকি করতেও চায়না। আর করবেই বা কেমন করে, ঘুরে ফিরে এখনতো আর কাজে মন আসেনা।
শিল্পীকে নিয়ে ছোট বেলা তার বাবা-মায়ের খুব আশা ছিলো। সে অনেক বড় হবে, বাবা-মায়ের মুখ উজ্জ্বল করবে। এখনও বাবা-মা আশা ছাড়েনি। ছোট সময়ের শিল্পী আর আজকের শিল্পীর মধ্যে অনেক পার্থক্য। আজ শিল্পী অনেক বড় হয়ে গিয়েছে।
ইন্টারমিডিয়েটে শিল্পীর রেজাল্ট ছিলো খুবই ভালো। বাবা-মা অনেক খুশি। পাড়া-প্রতিবেশীদের ঘরে ঘরে মিষ্টি বিলিয়ে দিয়েছে। শিল্পী আশেপাশে সকল শিক্ষার্থীর মধ্যে সেরা রেজাল্ট করেছে। তারপর কেটে গেলো অনেকদিন। ভর্তি হবে ভার্সিটিতে। সবার চোখেই একটা স্বপ্ন কাজ করে ভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার। তার মধ্যে আবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বপ্ন কার না থাকে। শিল্পীরও ইচ্ছা ছিলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করার। সেই লক্ষ্য নিয়ে ভর্তি হলো ভর্তি কোচিংয়ে। সবার মতো শিল্পীও পড়ছে তার সমস্ত মেধা শক্তি দিয়ে। বাহিরের কোন জগত নয় নিজের পড়াশুনা নিয়ে খুবই ব্যস্ত শিল্পী। সারা দিন-রাত মিলিয়ে ১৬-১৮ ঘন্টা পড়াশুনা করে শিল্পী। যথাসময়ে ভর্তি পরীক্ষা হয়। চান্সও হয়ে যায়। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ না হলেও, কোন এক পাবলিক ভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পায় শিল্পী। ডানে বামে না তাকিয়ে ভর্তিও হয়ে যায়। বাসা থেকে সকল কিছু গুছিয়ে এক কুয়াশা ঢাকা ভোরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্যে পা বাড়ায়। এই প্রথম নিজ জেলা শহর ছেড়ে অন্য জেলা শহরে তার যাত্রা। কুসুম কোমল একটি মন নিয়ে হাজির হয় তার ক্যাম্পাসে।
অনেক বন্ধু-বান্ধবী হলো, নতুন একটি জীবনের শুরু হলো। চোখে রঙিণ স্বপ্ন, সবকিছুই রঙিণ মনে হয়। রঙিণ প্রজাপতির মতো উড়তে উড়তে একসময় শিল্পীও অনুভব করে একটি পুষ্প দরকার। অন্যদের সাথে চলতে চলতে একসময় তারও পরিচয় হয় তনয় নামের একজনের সাথে। দুজন একই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়লেও দুজনার বিষয় সম্পূর্ণ আলাদা। শিল্পীর বিষয় আন্তর্জাতিক রিলেশন আর তনয়ের বিষয় ছিলো নাট্যকলা। যেসময় দুজনার পরিচয় হয়, সে সময় তনয় থার্ড ইয়ারে পড়ে আর শিল্পী ফার্স্টইয়ারে ভর্তি হয়। দুজনের মধ্যে বেশ ভালো একটি সম্পর্ক।
সম্পর্কের শুরুটা যেভাবে ঘটেছিলো......
একদিন বিকেল বেলা অন্যান্য বান্ধবীর সাথে নদীর ধারে শিল্পীও ঘুরতে যায়। ঘুরতে ঘুরতে দেখা হয় শিল্পীর বান্ধবীর বয়ফ্রেন্ডের সাথে। শিল্পীর বান্ধবীর বয়ফ্রেন্ডের সাথে আরও একটি ছেলে ছিলো। দেখতে শুনতে বেশ হ্যান্ডসাম। চুলের কাটিং থেকে শুরু করে প্রত্যেকটা বিষয়ই ছিলো চোখে পড়ার মতো। আগেই বলেছি শিল্পী প্রজাপতির মতো মধুভরা পুষ্প খুজতেছিলো। আজ তনয়কে দেখে তার মনে এক উতাল পাতাল ঢেউ খেলে গেলো। মনটা এলোমেলো হয়ে গেলো। কেমন যেন আনমনা একটা ভাব চলে আসলো শিল্পীর মধ্যে। অবশ্য এর মধ্যে শিল্পীর বান্ধবী এবং তার বয় ফ্রেন্ড কথা বলতে বলতে অনেকদূর এগিয়ে গেলো। এদিকে শিল্পী আর তনয় কিছুটা দূরত্বে দাড়িয়ে আছে। তনয়ের ডাকে সম্বিত ফিরে পায় শিল্পী---
---এইযে, শুনছেন? এইযে ম্যাডাম আপনাকে বলছি।
হকচকিয়ে উঠে শিল্পী
---আ আমাকে বলছেন?
---তা নয়তো কাকে বলছি? এখানে কি অন্য কেউ আছে?
---আপনার নামটা জানতে পারি?
---আমার নাম শিল্পী।
---আপনার নামটি প্লিজ।
-- আমার নাম তনয়।
তা কি করা হয়? শিল্পী বলল।
-- কি করবো নদীর ধারে আপনার মতো সুন্দরীর খোঁজ করি।
-- আমার মতো মানে? আমার সাথে এসব কথা বলা চলবেনা।
--শুনুন সবাই এমনটাই বলে। যাক এবার বলেন আপনি কোন সাবজেক্টে কোন ইয়ারে পড়ছেন? তনয় বলল।
--আমি আন্তর্জাতিক রিলেশন নিয়ে পড়ছি। আর নতুন ভর্তি হয়েছি।
এভাবে পরিচয় হতে হতে অনেক্ষণ কথা হলো দুজনার মধ্যে। প্রায় সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলো। ওদিকে ওরাও ফিরে আসলো। সবাই একসাথে কফি হাউজে গেলো। সেখানে বসেও তনয় আর শিল্পীর চোখাচোখি। কেউ কারও থেকে চোখ ফেরাতে পারেনা। তনয় শিল্পীর ফোন নম্বর নিলো। প্রত্যেকেই যার যার মতো বিদায় নিলো। সন্ধ্যার আকাশে আধফালী চাঁদের আলোয় ঘরে ফেরার পালা। যে যার মতো চলে গেলো।
রাতের খাবার শেষে শিল্পী বিছানায় যায়। কোল বালিশ নিয়ে গড়াগড়ি খায়। সারা বিকেলের দৃশ্যগুলো চোখে পড়ে। মনে মনে ধন্যবাদ জানায় বান্ধবীকে। তার জন্যই আজ তনয়ের সাথে দেখা হলো। একা রুমে শিল্পী থাকে। বরাবর শোয়ার সাথে সাথেই ঘুম দেশের ঘুম পরীরা এসে চোখে ঘুম পাড়িয়ে দেয়, কিন্তু আজ এপাশ ওপাশ করছে কিন্তু কিছুতেই ঘুম আসছেনা। চোখের পাতা বন্ধ করতেই তনয়ের ছবি চোখে ভেসে উঠে। খুব জ্বালাতন করছে শিল্পীকে। কতক্ষণ কেটে গেলো শিল্পী জানেনা।
হঠাৎ মোবাইল বেজে উঠলো। অপরিচিত একটা নম্বর। তনয়ের নম্বর সে নেয়নি। তাই বুঝতে পারছেনা তনয় নাকি অন্য কেউ ফোন করেছে।
কাঁপা কাঁপা হাতে ফোন রিসিভ করে শিল্পী।
--হ্যালো। হ্যালো।
শিল্পী কোন কথা বলে না শুধু শুনে যাচ্ছে।
-- হ্যালো, শুনতে পাচ্ছেন? প্লিজ শিল্পী কথা বলুন।
এবার নিজেকে আর ধরে রাখতে পারেনি শিল্পী। তনয়ের সাথে গলা মিলিয়ে সেও বলে....
--বলুন শুনতে পাচ্ছি।
-- কি করছিলেন?
-- কিছুনা, আপনি?
--এইতো ঘুম আসছিলোনা। তোমার কথা ভাবছিলাম, তনয় বলল। ওহ সরি তুমি বলে ফেললাম।
-- না না সরি বলার কি হলো, আমাকে তুমি করে ডাকলেই খুশি হবো, শিল্পী বললো।
-- আমি কি শুধু একাই তুমি করে বলবো? আর কারও কি তুমি বলার দরকার নেই? ঠিক আছে তাহলে আমিও আপনি করে বলবো।
-- এতো রাগ করো কেন? একথা বলার পর শিল্পী নিজেই অবাক হয়ে গেলো। একি বলে ফেললো, তনয়কে সে তুমি করে বলে ফেললো। যাক সেদিন রাতে দুজনের অনেক কথা হলো। তারপর ঘুমাতে গেলো।
শিল্পী যেন তার জীবনের নতুন একটি অধ্যায় খুঁজে পেলো। সেকি স্বপ্ন দেখছে নাকি বাস্তব সে বুঝতে পারেনা। দুটি মন একত্রে হলে যে এতো ভালো লাগার তৈরি হয় তা সে এর আগে কখনও বুঝেনি। শিল্পী আনন্দে আত্মহারা, শূন্য দিগন্তে পাখা মেলে মেঘের পরতে পরতে উড়ে বেড়াতে ইচ্ছে করছে।
এই বয়সটায় সবার চোখেই সবকিছু রঙিণ মনে হয়। শিল্পীরও তাই মনে হতে লাগলো। তনয়ের সাথে ঘুরে বেড়ানো, নদীর পাড়ে আড্ডা দেওয়া এগুলোই তার কাছে বেশি ভালো লাগে। ধীরে ধীরে পড়াশুনায় মনোযোগ কমতে থাকে। পড়াশুনার চেয়ে বর্তমান সময়টাকেই বেশি ভালো লাগছে শিল্পীর। এটাই যেন সব, আর কোন কিছু তার ভালো লাগেনা। এভাবেই চলতে চলতে সময় খুব দ্রুত কেটে যায়। ফার্স্ট ইয়ারের পরীক্ষায় খুব ভালো রেজাল্ট করতে পারেনি শিল্পী। বাসায় কোনরকম ভুলভাল তথ্য দিয়েছে। এদিকে তনয়ের ফাইনাল পার্ট চলছে। তবে তনয় তার পড়াশুনার গতি ধরে রেখেছে।
এভাবে একসময় তনয়ের ফাইনাল পরীক্ষা হয়ে গেলো। শিল্পীর সাথে সম্পর্ক আরও গাঢ় হলো। ইতোমধ্যেই তনয় বাড়ি যাবে, কারণ তার বাড়ি থেকে তাকে বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছে। এদিকে শিল্পীর সাথে তার সম্পর্কের কথাও বাড়িতে বলতে পারছে না আবার শিল্পীকেও বলতে পারছেনা তার বিয়ের কথা। এটাকি আসলে তনয়ের জড়তা নাকি শিল্পীর সাথে সময় ক্ষেপণ নাকি শুধুই অভিনয় তা কেউ জানতে পারেনা।
তনয় চলে যায় বাড়িতে। এদিকে শিল্পীকে কিছুই বলেনি। বাড়িতে গিয়ে ফোনটাও বন্ধ করে দিলো।
কোনোভাবেই আর তনয়ের সাথে শিল্পী যোগাযোগ করতে পারেনি। শিল্পীর টেনশন বাড়তে লাগলো। বেশ কয়েকদিন পর তার বান্ধবীর মাধ্যমে খবর পেলো যে তনয় বিয়ে করে ফেলেছে।
কথাটা শোনার পর শিল্পী নিজের কানকে কিছুতেই বিশ্বাস করতে পরছিলোনা। মাথাটা যেনো ৩৬০ ডিগ্রি কোণে ভন ভন করে ঘুরতে লাগলো। বিকেলে খবর পায় শিল্পী। সারারাত কেঁদে কাটিয়েছে। সন্ধ্যায় কোন কিছু খায়নি। এভাবে দুদিন না খেয়ে কাটিয়ে শেষ পর্যন্ত সংজ্ঞাহীন হয়ে পরে শিল্পী। বান্ধবীরা সবাই মিলে হাসপাতালে ভর্তি করায়।
দুদিন পর জ্ঞান ফিরলো শিল্পীর চোখ খুলে বলল,
--আমি এখন কোথায়? চারপাশে এতো বেড কেনো?
তুই এখন হাসপাতালে। তুই অসুস্থ ছিলি তাই তোকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে, শিল্পীর বান্ধবী বলল।
এরপর থেকেই বাসি ফুলের মতো চুপসে যেতে থাকে শিল্পী। কারও সাথে তেমন কথা বলেনা, সেই উচ্ছ্বলতা নেই। বাড়িতে এসে মা বাবার সাথে কয়েকদিন থাকার পরামর্শ দিলো ডাক্তার। বাড়ি থেকে ঘুরেও গেলো। মা বাবার মনেও একই প্রশ্ন মেয়েটা কেমন যেন হয়ে গেলো। পড়াশুনার প্রতিও আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। এভাবে চলতে চলতে পড়াশুনা থেকে অনেক দূর পিছিয়ে গেলো শিল্পী।
তনয়ের সাথে আর কোনদিন যোগাযোগ হয়নি। নাট্যকলা বিভাগে পড়ে নাটকের মতোই জীবনের খাতায় অভিনয় করে শিল্পীকে কাঁদিয়ে গেলো নীরব দর্শকের মতো। শিল্পীও আর তনয়ের জন্য কাঁদেনা, হয়তোবা কাঁদতে কাঁদতে চোখের পানিই শুকিয়ে গেছে। অনেকবার চেষ্টা করেছে সব ভুলে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য কিন্তু স্মৃতিরা বারবার তার সাথে লুকোচুরি খেলে।
আজ ফাইনাল পার্টের এ্যাসাইনমেন্ট করার জন্য মানচিত্র অঙ্কন করতে হবে। কিন্তু শিল্পী কোনভাবেই আঁকতে পারছেনা। হাতটা যেন বারবার কেঁপে উঠে। অথচ এই শিল্পীর ছবি আঁকার হাতটাই ছিলো দক্ষ চিত্র শিল্পীর মতো। শেষ পর্যন্ত অন্য এক ভাইয়ের মাধ্যমে মানচিত্র এঁকে দিতে পারবে এমন একজনের খোঁজ পেলো। সেখানের সেই ভাইটিও তাকে দেখে একই প্রশ্ন করলো।
--আন্তর্জাতিক রিলেশন বিভাগের একজন ছাত্রী অথচ একটা মানচিত্র অঙ্কণ করতে পারোনা কেনো?
তখনই এই শিল্পীর বিচিত্র জীবনের ঘটনাগুলো উঠে আসে। আমিও নাটকের দর্শকের মতো অধীর আগ্রহ নিয়ে তার কথাগুলো শুনছিলাম। হয়তো এই কথাগুলো আমার সাথে শেয়ার করে মনের ভেতরটাকে হালকা করার চেষ্টা করেছে। আমি জিজ্ঞেস না করলে কথাগুলো হয়তো চিরকালই শিল্পীর হৃদয়ে আবদ্ধই হয়ে থাকতো।
আমি মানচিত্র আঁকছি। যখন সুয়েজ খাল বা ভূমধ্যসাগরকে আঁকছি শিল্পীর চোখের দিকে তাকালাম, টপ টপ করে পানি ঝরছে। মনে হচ্ছে মানচিত্রের শুকনো সুয়েজ খাল আর ভূমধ্যসাগর শিল্পীর চোখের পানি দিয়ে কানায় কানায় ভরে উঠবে।
আমি আঁকছি জিব্রাল্টার প্রণালী, আরব সাগর, উড়াল পর্বত। আমি আঁকছি কোনো এক জীবনের মানচিত্র!!!
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct