আজিম সেখ, বীরভূম: সিউড়ি থেকে মাত্র ১৮ কিলোমিটার পথ পেরোলেই তাঁতিপাড়া গ্রাম। তারপরে শুনতে পাওয়া যাবে তাঁতিদের সেই ঠকাঠক মাকুর শব্দ। বীরভূমের রাজনগর ব্লক এর অন্তর্গত তাঁতিপাড়া গ্রামে তাঁতিদের অবস্থা এখন ধুঁকছে। করোনা কান্ড ও দীর্ঘ লকডাউন এর জেরে তাঁতিদের এখন মাথায় হাত। আগে তাঁতিপাড়া গ্রাম ঢুকলেই তাঁতিদের সেই মাকুর ঠকাঠক শব্দ শোনা যেত। কিন্তু এখন বর্তমান পরিস্থিতি যা হয়ে দাঁড়িয়েছে তাতে সেই ঠকাঠক শব্দ আর শুনতে পাওয়া যায়না বললেই চলে। তাঁতিদের এই তসর কাপড় দেশ-বিদেশের সুনাম অর্জন করেছে। কিন্তু বর্তমানে করোনা ও লকডাউন এর জেরে যোগাযোগ ব্যবস্থা সব বন্ধ। শিল্পী অক্ষয় দাস জানান-পড়াশোনা করার পর কোন কাজের সুযোগ না পাওয়ায় এই কাজের সাথে যুক্ত আছি। একটা শাড়ি তৈরি করতে চার থেকে পাঁচ দিন সময় লাগে। এই মহামারীর পরিস্থিতির কারণে আমাদের সেই শাড়ি নিজেদের বাড়িতেই মজুত রয়েছে। তাঁতিরা সরকারের কোনো সুযোগ-সুবিধা না পাওয়ায় দুশ্চিন্তার মধ্যে পড়েছে তাঁতিরা। আবার কি! সেই দিন ফিরে আসবে না, ফিরবে কি সেই ঠকাঠক শব্দ? সেই নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে তাঁতিদের মধ্যে। সরকারের সাহায্যের আশায় দিন গুনছেন তারা।
এখানেই শেষ নয় শাড়ি পরার পর রঙ-বেরঙের শাড়ি প্রিন্টিং তৈরি হচ্ছে তাঁতীপাড়ায়। যার নাম “হ্যান্ড প্রিন্ট”। পড়াশোনা করার পর অন্য কোন কাজের সুযোগ না আসায় অনেক ছেলে-মেয়ে যুক্ত আছে এই শাড়ি প্রিন্টিং কাজে। একটা শাড়ি প্রিন্ট করতে সময় লাগে একদিন, কিন্তু বর্তমানে কাজ থমকে যাওয়াই একটা শাড়ি প্রিন্ট করতে তিন দিন সময় লাগাচ্ছে শিল্পীরা। সরকার যদি এ বিষয়ে একটু নজর দেয় তাহলে হয়তো একটু হলেও আশার আলো দেখতে পাবে শিল্পীরা।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct