মঞ্জুর মোল্লা, নদিয়া: রেড ভলেন্টিয়ার এবং তৃণমূল ছাত্র পরিষদের মেলবন্ধন ঘটলেও, নিজের মায়ের চিকিৎসা করাতে করোনার ভয়ে এলোনা দুই ছেলে। রাজনৈতিকভাবে সম্পূর্ণ বিপরীত মেরুতে অবস্থান হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত অসুস্থ বৃদ্ধার মাথার পাশে দাঁড়িয়ে লাল ও সবুজ তিরঙ্গা একসাথে। অথচ এক কন্যাকে ছাড়া দেখা গেল না গর্ভে ধারণ করা, অন্য আর পাঁচছ সন্তানকে।
চরম অমানবিকতার নিদর্শন দেখা গেলো শান্তিপুর গোপালপুর মেলের স্ট্রীট এলাকায়। মৃত জামাল শেখের স্ত্রী তসলিমা সেখ মঙ্গলবার আক্রান্ত হয় করোনায়। দুই ছেলে এবং চার মেয়ের বিবাহ হওয়ার পর ভাগের মা গঙ্গা পাননা। ওই এলাকার পাশেই নাসিমা খাতুন এবং অপর এক মেয়ের বাড়িতেই থাকতেন স্বামী হওয়ার পরবর্তী দীর্ঘ সময়। নাসিমা খাতুন এর বাড়িতে থাকা কালীন তার শারীরিক অসুস্থতার কারণে, শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে লালারস পরীক্ষার মাধ্যমে জানতে পারা যায় তাসলিমা শেখ করোনা আক্রান্ত। এরপর থেকে তাঁর কোন সন্তানই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেননি।
ঘটনা জানতেই শান্তিপুর রেড ভলেন্টিয়ারের সদস্যরা নিজেরাই টোটো ব্যবস্থা করে সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ হাসপাতালে ভর্তি করে এবং তারপরে তারা চলে যান। কিন্তু অক্সিজেন স্যাচুরেশন মাত্রা ৬৮তে নেমে যাওয়ার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে কল্যাণী কোভিড হাসপাতালে স্থানান্তরিত করে। এ’মত অবস্থায় তার সাথে একমাত্র মেয়ে নাসিমা খাতুন বাদে আর কেউই ছিলেন না কল্যাণীতে যাওয়া বা রোগীকে সরকারি ১০২ আম্বুলান্স তোলার জন্য। প্রায় দুই ঘণ্টা অপেক্ষা করার পর স্থানীয় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজু চক্রবর্তী এবং রমা প্রসাদ ভট্টাচার্য্য ঐ অসুস্থ মহিলার দুই ছেলে আসাদুল এবং এনামুলের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাদেরকে হাসপাতালে আনাতে পারেননি তবে তারা কিছু অর্থ সহযোগিতা করে। নিরুপায় হয়েই এরপর করোনা আক্রান্ত অসুস্থ মাকে একাই স্ট্রেচার থেকে অ্যাম্বুলেন্সে তোলেন তিনি। জানান ভাইয়েরা কেউ আসবে না, ওরা মনে করে আমাকে অর্থনৈতিক সহযোগিতা করে মা। কিন্তু মা সুস্থ হলে জানতে পারবেন আসল রহস্য। তবে আমি মৃত্যুর ভয় পাইনা এমত অবস্থায় মাকে ছেড়ে থাকতে পারবো না কখনোই।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct