এহসানুল হক, হিঙ্গলগঞ্জ: ইয়াসের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত উত্তর ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ এলাকা। বুধবার দুপুর বারোটা নাগাদ হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকে রূপমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তর বাঁশতলী কালিন্দী নদীর পূর্ণিমার কোটালের জেরে নদীর জলোচ্ছ্বাস বেড়ে যাওয়ায়, জল বাঁধ টপকে গ্রামের ভিতরে নোনা জল ঢুকে পড়ে। গ্রামবাসীদের কিছু বুঝে ওঠার আগেই ঘরের ভিতরে নদীর জল ঢুকে যায়। বাড়ির আসবাবপত্র প্রচন্ড স্রোতে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। এই বিষয়ে গ্রামবাসীরা বলেন, অল্প কিছু গ্রামের মানুষ বাড়ির জিনিসপত্র নদীর বাঁধের উপরে নিয়ে যেতে পারলেও বহু সংখ্যক পরিবার তারা কিছু ঘরের থেকে বের করতে পারেননি। সবজির ক্ষেত মাছের পুকুর মুহূর্তের ভিতরে ভাসিয়ে নিয়ে যায় নদীর জলে। গ্রামবাসীদের আরো অভিযোগ, প্রতিবছর এই বাঁশতলী গ্রামে নদী ভাঙ্গন দেখা যায়। এর অন্যতম কারণ যে সমস্ত জমির মালিকরা নদীর পাশ দিয়ে মাছ চাষ করার জন্য জলকার তৈরি করেছেন ,তারা ঠিকঠাকমতো ওই নদীর বাঁধের উপরে মাটি দেন না এবং স্থানীয় নেতাদের গাফিলতিতে প্রতিবছর এই বাঁশতলী গ্রামে নদী ভাঙ্গন দেখা যায়।
ঠিকঠাক মতো নদীবাঁধ সংরক্ষণ না করায় গ্রামের মানুষদের এই সমস্যায় ভুগতে হয়। এই বিষয়ে নদীর জলে ক্ষতিগ্রস্থ স্বপন বিশ্বাস জানান ,আমার ঘর প্রচন্ড জলের স্রোতে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে এবং যে সমস্ত খাবার চাল গুছিয়ে রেখে ছিলাম ,বেশ কিছুদিন ধরেই খাবো বলে তা সব নষ্ট হয়ে গেছে নদীর জলে। বাড়িতে আমরা ৬ জন ব্যক্তি আমার উপরে নির্ভর করে চলে। কোনরকম চাষবাস করেই সংসার চালাই। উম-পুন ঝড়ে ক্ষতি হয় সেই কারণে সরকারের কাছ থেকে সাহায্য পেয়ে সেই টাকায় নতুনভাবে ঘর বেঁধেছিলাম তা সব ভাসিয়ে নিয়ে গেল। জানিনা এর পরে কিভাবে সংসার চলবে বাড়িতে বৃদ্ধ মা ছোট ছোট বাচ্চারা আছে তাদেরকে নিয়ে কোথায় যাব।
এই বিষয়ে হিঙ্গলগঞ্জ বিধায়ক দেবেশ মন্ডল জানান, প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব রকম সতর্কবার্তা গ্রামবাসীদের দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ মাত্র নদীর জল এতটাই যে বেড়ে যাবে তা আমরা বুঝে উঠতে পারিনি। গ্রামের প্রচুর মানুষের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে আমরা সবাই ওই সমস্ত গ্রামে ছুটে গেছি। তাদেরকে আশ্বস্ত করা হচ্ছে। শুকনো খাবার ,ত্রিপল ব্যবস্থা করা হয়েছে। উপস্থিত নদীর জল না সরায় পর্যন্ত ফ্লাট সেন্টার থাকার ব্যবস্থা করেছি। যে সমস্ত পরিবার সর্বোচ্চ হারিয়েছে তাদেরকে আমাদের পক্ষ থেকে সব রকম সাহায্য করবো। অন্যদিকে বিদ্যাধরী নদীর বাঁধ ভেঙে জল ঢুকেছে হুহু করে গ্রামে গ্রামের পর গ্রাম নদীর জলে ডুবে গিয়েছে এখানকার মানুষদের স্থানীয় নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বসুন্ধরা দেবী তিনি বলেন, রাতে যদি আবার জল পারে তাহলে গ্রামে হু করে জল ঢুকবে কোথায় থাকব আমরা চিন্তায় পড়ে গেলাম।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct