জয়প্রকাশ কুইরি,পুরুলিয়া: পুরুলিয়া পাম্প স্টোরেঞ্জ প্রজেক্ট (পিপিএসপি)-এর বেসরকারি নিরাপত্তা রক্ষীদের বেতন কাটার অভিযোগ উঠলো এসআইএস (এস আই এস ) কোম্পানির বিরুদ্ধে। শুক্রবার সেই নিরাপত্তা কর্মীরা বাঘমুন্ডির পিপিএসপি এডমিস্ট্রেটিভ বিল্ডিং এর অফিসে এসআইএস কোম্পানির এরিয়া অফিসারকে ঘিরে বেশ খানিক্ষন বিক্ষোভ দেখান। তারপর পিপিএসপি বিল্ডিং এর আধিকারীকের সঙ্গে বৈঠক করেন এসআইএস কোম্পানির এরিয়া অফিসার ও বিক্ষোভকারীরা। পরে তাদের ক্ষোভ শান্ত হয়।সূত্রের মাধ্যমে পাওয়া খবর, ২০১১ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত অর্থাৎ দীর্ঘ দশ বছর তাদের কোনো বেতন বৃদ্ধি হয়নি। আবার সেই বেতন থেকেই অনেক শতাংশ কেটে নিচ্ছেন এসআইএস কোম্পানি। সেই কোম্পানি লো রেট এর টেন্ডার নিচ্ছে এবং বেতন বৃদ্ধি না করে পুনরায় সেই রেটকে রি-টেন্ডার করছে। পাশাপাশি দশ মাসের বোনাস মেলেনি বলেও তারা জানান । প্রতি ছয় মাস অন্তর তিন শতাংশ হারে বেতন ইনক্রিমেন্ট দেওয়ার কথা ছিল। তা থেকেও বঞ্চিত বেসরকারি নিরাপত্তাকর্মীরা বলে দাবি করেন। পে স্লিপ মেলেনি বলেও তাদের অভিযোগ। হাইকোর্টের রায় দেওয়া সত্ত্বেও গানম্যান দের টাকা দেওয়া হয়নি।
এদিন বিক্ষোভকারী নিরাপত্তা কর্মীদের মধ্যে পবন কুমার, তপন মাঝি, অজয় কুমার ও তাদের সুপারভাইজার পঙ্কজ মাঝি জানান , প্রতি মাসের টাকা থেকে প্রায় শতাংশই কেটে নিচ্ছেন এসআইএস কোম্পানি। আমাদের মোট বেতন সাড়ে সাত হাজার টাকা তার মধ্যে যদি অনেকটাই কেটে নেয় তাহলে আমাদের কি হবে? দৈনন্দিন জিনিস পত্রের যা মূল্যবৃদ্ধি আর সেই অল্প টাকাতে কি করে চলবে সংসার। তারপর আবার ছেলে মেয়েদের পড়াশুনার জন্য খরচা দিতে অক্ষম হয়ে পড়ছি এইরকম ভাবে আর কতদিন চলবে। এসআইএস কোম্পানি যাতে সব কেটে নেওয়া টাকা ফেরত দেয় সেই অনুরোধ করছি। আমরা মোট ৮৩ জন কর্মী রয়েছি যার মধ্যে ৪ জন সুপারভাইজার। বেশ কয়েকমাস আগে এবিষয় আমরা বাঘমুন্ডি থানা, ব্লক ও জেলার পিপিএসপির সদর দপ্তরে জানিয়েছি। কিন্তু আজ পর্যন্তও কোনো সুরাহা মেলেনি। আর এখন বর্তমান পরিস্থিতিতে চলছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ কিন্তু আমাদের এখনও পর্যন্ত তারা কোনো মাস্ক বা স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা পর্যন্ত করেননি। আমাদের কয়েকদিন আগে এক সহকর্মী মারা গেছেন তার দিকেও নজর দেননি। আজকের পর যদি এই কোম্পানি কোনো আমাদের জন্য ব্যবস্থা না নেই তাহলে আমরা আরও বড়োসড়ো আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব।
অন্যদিকে এসআইএস-এর এরিয়া অফিসার বিপিন চন্দ্র মন্ডল বলেন, আজকে আমার পিপিএসপি বিল্ডিং এর পিএসআইসি আধিকারিকের সঙ্গে বৈঠক করেছি এই বিষয় নিয়ে। তারা যে অভিযোগ তুলছেন তার সমাধানের জন্য আগামীকাল আসানসোল যাবেন। এই কর্মীদের সুপারভাইজার পঙ্কজ মাঝি সেখানে গিয়ে এলআইসির যা কিছু হিসেব তাদের দেওয়া হবে। সেই টাকাটা কি সত্যিই কাটা হচ্ছে কি না তা খতিয়ে দেখা হবে। আর আমাদের কোম্পানির থেকে খুব শীঘ্রই তাদের সমস্যা ও অভিযোগ মেটানো হবে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct