সঞ্জীব মল্লিক, বাঁকুড়া: ভোট আছে ভোট যায় মেলে শুধু প্রতিশ্রুতি কিন্তু এখনো পূরণ হয়নি। প্রতিশ্রুতি ফলে ভাঙা বাড়িতেই রাত কাটাতে হচ্ছে বৃদ্ধ-বৃদ্ধার। বাঁকুড়া জেলার সোনামুখী থানার রাধামোহনপুর পঞ্চায়েতের নিত্যানন্দপুর গ্রামে এমনই ছবি ধরা পড়ল। রতন মল্লিক তার স্ত্রী অবলা মল্লিককে নিয়ে কোনরকমে ভাঙা মাটির দেওয়ালে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রাত কাটাচ্ছেন। কিন্তু তারপরেও হুঁশ ফিরছে না স্থানীয় জনপ্রতিনিধি থেকে স্থানীয় পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের। বর্ষাকালে আতঙ্ক আরো গ্রাস করে যে কোন মুহূর্তে ঘটতে পারে প্রাণহানির মতো দুর্ঘটনা। ছেলেরা থাকলেও খোঁজ-খবর নেয় না বৃদ্ধ বাবা মার ফলে অসহায় ভাবে জীবন যাপন করতে হচ্ছে তাদের। এমতাবস্থায় তাকিয়ে রয়েছে একটি সরকারি বাড়ির দিকে। তবে ভোট এলেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা বাড়িতে আসেন মেলে প্রতিশ্রুতি কিন্তু ভোট চলে গেলে প্রতিশ্রুতি প্রতিশ্রুতিতেই থেকে যায়।
একই ছবি নিত্যানন্দপুর গ্রামের যুগল মণ্ডলের পরিবারের। ভাঙ্গা বাড়িতে তাদেরও কোনরকমে রাত কাটতে হচ্ছে। স্থানীয় পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের জানিয়ে কোনো লাভ হয়নি এমনটাই অভিযোগ যুগল মণ্ডলের স্ত্রী সারথি মন্ডলের। তারা তাকিয়ে রয়েছেন সরকারি একটি বাড়ির দিকে। কবে আশা পূর্ণ হবে তা বুঝে উঠতে পারছেন না তারা।
পাশাপাশি বার্ধক্য ভাতা না পেয়ে রীতিমতো সরকারের ওপর ক্ষোভ উগরে দিলেন হেলানী মন্ডল নামে এক বৃদ্ধা। বয়স আশি ছুঁই ছুঁই এখনো মেলেনি সরকারি বার্ধক্য ভাতা। অভিযোগ বহুবার পঞ্চায়েতকে বার্ধক্য ভাতার জন্য আবেদন করা হলেও কোনো কাজ হয়নি।
তবে কাদের গাফিলতির জন্য অসহায় বৃদ্ধা নিজের চিকিৎসা পর্যন্ত করাতে পারছি না উঠছে প্রশ্ন।
রতন মল্লিক বলেন, ভোট এলেই তৃণমূল নেতারা প্রতিশ্রুতি দেয় কিন্তু তারপরে আর কোন কাজ হয়না। সিপিএমের আমলে এবং তৃণমূলের আমলে ঘড় মেলেনি বলে তিনি অভিযোগ করেন। তবে এই মুহূর্তে একটি সরকারি ঘর পেলে খুবই ভাল হয় সেই আবেদন জানান তিনি।
ভাঙ্গা ঘরে বসবাসকারী সারথি মন্ডল নামের অপর এক মহিলা বলেন, ঘর নেই ভাঙ্গা ঘরে কোনরকমে রাত কাটাতে হয় বৃষ্টি হলেই ঘরে জল পড়ে। বারবার পঞ্চায়েতকে জানিয়ে কোনো লাভ হয়নি তাই সরকার যদি একটি ঘরের ব্যবস্থা করে খুবই ভালো হয়।
বার্ধক্য ভাতা থেকে বঞ্চিত হেলানী মন্ডল বলেন , বহুবার পঞ্চায়েতকে বার্ধক্য ভাতার জন্য আবেদন জানিয়েছি এমনকি স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের কাছেও আবেদন করেছি কিন্তু তার পরেও কোনো কাজ হয়নি। বার্ধক্য ভাতা পেলে নিজের চিকিৎসা করাতে পারতাম।
তবে কি বর্তমান সরকারের মুখেই শুধু উন্নয়নের কথা কাজে কিছু নেই। কেন এই সমস্ত অসহায় সাধারণ মানুষ গুলো আজও সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত উঠছে সে প্রশ্ন কেন জনপ্রতিনিধিরা তাদের এই সমস্যার সমাধানে এগিয়ে এলেন না। তবে কি ভোট প্রচারে আবার তারা এই অসহায় সাধারণ মানুষ গুলোর বাড়িতে আসবেন সেটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct