নাজিম আক্তার, চাঁচল: নিঃসন্তান বিধবার জরাজীর্ণ ঘর,ছিলনা ভাতা,আটকে ছিল সমব্যথীর টাকা। শৌচকর্ম করতে ফাঁকা মাঠ ছিল ভরসা। মালদহের চাঁচল-১ নং ব্লকের ভগবানপুর পঞ্চায়েত এলাকার দক্ষিণ কালিগঞ্জ গ্রামের অসহায় চিত্রা ব্যানার্জীর দুর্দশার চিত্র ‘আপনজন’ তুলে ধরেছিলা। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে প্রকাশিত হয় খবর। আর তা সম্প্রচারিত হতেই পাশে দাঁড়াল ব্লক প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার চাঁচল-১ নং ব্লক উন্নয়ন আধিকারিক সমীরণ ভট্টাচার্য্যের তরফে চিত্রা দেবীকে সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হয়। বিডিও-র তরফে দেওয়া হয় খাদ্য দ্রব্য, একজোড়া ত্রিপল,একজোড়া শাড়ি, একজোড়া শীতের কম্বল এছাড়াও সংসারের নিত্য প্রয়োজনীয় থালা-বাসন, রান্না করার স্টৌভ ইত্যাদি। চিত্রাদেবীর বাড়িতে শৌচাগার নেই শুনতেই শুক্রবার থেকেই শৌচাগার নির্মাণ করার উদ্যোগ নেন বিডিও। সমব্যথীর টাকা কয়েকদিনের মধ্যেই পেয়ে যাবে বলে বিডিও আশ্বাস দেন। পূর্বে বিধবাভাতার জন্য আবেদন করা হলেও তা চাপা পড়ে যায় এবং নাম আসেনি বলে অভিযোগ ছিল চিত্রাদেবীর। তাই বিডিওর তরফে ফের আবেদনের জন্য বলা হয়। সেদিনই দপ্তরে গিয়ে আবেদন করেন এবং গুরুত্ব সহকারে তার প্রক্রিয়া চলবে ও শীঘ্রই ভাতা মিলবে বলে বিডিও জানান। এনএফবিএস প্রকল্পের চল্লিশ হাজার টাকা কেন আটকে রয়েছে তা তদন্ত শুরু করেছেন বিডিও। আমফানের দাপটে বৃদ্ধা চিত্রা দেবীর টিনের বেড়ার বাড়িটির বর্তমান অবস্থা নড়বড়ে।ফাঁকা ফাঁকা ছিদ্র দিয়ে ঘরে ঢুকে শীতল বাতাস। আবাস যোজনার তালিকায় নাম এসেছে চিত্রার।দ্রুত যেন পায় সেটিও গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে।চাঁচল-১ নং ব্লকের বিডিও সমীরণ ভট্টাচার্য্য ওই বৃদ্ধার পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন।এদিন ব্লক দপ্তরে বিভিন্ন রকমের সরকারি সাহায্য পেয়ে মূখে হাসি ফুটেছে চিত্রাদেবীর।অশ্রু নয়নে ব্লক প্রশাসনকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন তিনি। অবশেষে ব্লক থেকে টোটো করে জিনিসপত্র নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন তিনি।
উল্লেখ্য,লকডাউনের দ্বিতীয় দফায় হৃদরোগ নিয়ে চাঁচল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন প্রবীর বাবু,সেখানেই গত হন তিনি। এরপর নিঃসন্তান চিত্রাদেবীর বেঁচে থাকার সংগ্রামে অভাবের থাবা পড়ে। কারণ তাদের নেই চাষের জমি। স্বামী কোনোক্রমে কোয়াক ডাক্তারি করে সংসার চালাতো। তাই অর্থ সঞ্চিত করতে পারেননি।
পাশাপাশি চাঁচলের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন একমাসের খাদ্যদ্রব্য দিয়ে পাশে দাড়িয়েছেন।সংগঠনের রাইহান হোসেন, মিজানুর ইমলামরা বলেন,অত্যন্ত অসহায় ওই প্রৌঢ়া, তাই সরকারি সাহায্য একান্ত জরুরী।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct