মহম্মদ নাজিম আক্তার,মালদা : বছরের শেষদিনে এবার কার্নিভাল হয়নি মালদায়। তাই মন ভার ছিল বাসিন্দাদের। সেই খামতি দূর করল নতুন বছরের প্রথম দিন বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। শুক্রবার ওই বর্ষবরণ অনুষ্ঠানকে ঘিরে মেতে উঠলেন মালদহের চাঁচলের সর্বস্তরের বাসিন্দারা। উত্তর মালদা প্রেস ক্লাবের উদ্যোগে, পূর্বাচল ক্লাবের সহযোগিতায় তরলতলায় সন্ধে থেকে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। যেখানে কার্নিভাল হত, সেই তরলতলা মোড়ে ওই বর্ষবরণ অনুষ্ঠানকে ঘিরে দর্শকদের উত্তেজনা ছিল তুমুল। হাজির ছিলেন চাঁচল মহকুমাশাসক সঞ্জয় পাল, চাঁচল-১ ব্লকের বিডিও সমীরণ ভট্টাচার্য়।২০১৭ সালে চাঁচলে প্রথম বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নিয়েছিলেন তত্কালীন মহকুমাশাসক দেবাশিস চট্টোপাধ্যায়। প্রশাসনের উগ্যোগে প্রথমবার কার্নিভালের আয়োজন করা হলেও পরের দুবছর তা স্থানীয়দের উদ্যোগেই হয়েছিল। কিন্তু এবার করোনাকালে সেই কার্নিভাল হয়নি। কিন্তু বিগত বছরের বিষাদ ভুলে আগামী দিনকে স্বাগত জানাতে একটা অনুষ্ঠান করা হোক বলে সর্বস্তরেই দাবি ওঠে। তারপরেই প্রশাসনের সহযোগিতায় উদ্যোগী হয় উত্তর মালদা প্রেস ক্লাব। কলেজ রোডের তরলতলায় ছিল মূল অনুষ্ঠান মঞ্চ। সন্ধেয় মহকুমাশাসক ও বিডিওকে বরণের মধ্যে দিয়ে শুরু হয় মূল অনুষ্ঠানের। মহকুমাশাসক ও বিডিও দুজনেই দর্শকদের পাশাপাশি মহকুমার বাসিন্দাদের নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন। এরপর সৈয়দ সোহান আলির গানের মধ্যে দিয়ে মূল অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। এরপর ছিল উত্তরবঙ্গ ডান্স এন্ড কালচারাল সোসাইটির নৃত্যশিল্পীদের নৃত্যানুষ্ঠান, টিম ডান্সের নৃত্যানুষ্ঠান। স্থানীয় প্রখ্যাত গিটার বাদক জয়ন্ত প্রামানিকের গিটার মুগ্ধ করে দর্শকদের। দর্শকদের আনন্দ দেওয়ার জন্য রাখা হয়েছিল হাস্যকৌতুকের অনুষ্ঠান। স্থানীয় শিল্পী রম্যাণি চ্যাটার্জির অনবদ্য হাস্যকৌতুক দর্শকদের মন জয় করে নেয়। সবশেষে ছিল বালুরঘাটের শিল্পীদের সমন্বয়ে বর্ষবরণের মূল অনুষ্ঠান। কিশোরকন্ঠে অনুপরতন মোহান্ত ও মিসেস ঝুমা এবং মিস্টার অর্ঘের বাংলা-হিন্দি গানের তালে তালে মেতে ওঠেন দর্শককুল। গোটা অনুষ্ঠানটি সুচারুরূপে পরিচালনা করেন প্রেস ক্লাবের সদস্য পার্থ চক্রবর্তী। করোনাকালে বিধি মেনেই অনুষ্ঠান করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন উদ্যোক্তারা। এদিন অনুষ্ঠানস্থল প্রশাসনের সহযোগিতায় মাস্কহীন দর্শকদের মাস্কও বিলি করা হয়। মঞ্জে রাখা ছিল স্যানিটাইজারও।
দর্শক রুপা চ্যাটার্জি, কৃষনা দাসের মতো অনেকেই বলেন, আমরা খুব খুশি। কার্নিভাল না হওয়ায় মনটা খারাপ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এদিনের অনুষ্ঠানের পর সেই আক্ষেপ দূর হয়ে গেল।উত্তর মালদা প্রেস ক্লাবের সম্পাদক দেবাশীষ মজুমদার বলেন, এখনও করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় নি। কিন্তু বর্ষবরণের অনুষ্ঠান হোক বলে প্রায় সর্বস্তরে দাবি ছিল। তাই বিধি মেনে নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct