আপনজন ডেস্ক: মুসলিম বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী ও শীর্ষ ইসলামি পণ্ডিত শেখ ইউসুফ-আল-কারযাভী মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর।ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্নাইলাইহি রাজিউন। মিশরীয় এই ধর্মীয় নেতা সেদেশে নিষিদ্ধ থাকার কারণে কাতারে বসবাস করতেন। সোমবার তার অফিসিয়াল ট্যুইটার অ্যাকাউন্ট থেকেই তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়। ১৯২৬ সালের ৯ সেপ্টেম্বর মিশরের গারবিয়্যা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। দুই বছর বয়সে তার বাবা মারা যান। চাচা তার শিক্ষাদিক্ষার ভার বহন করেন। দশ বছর বয়স হবার আগেই হিফজ সম্পন্ন করেন। অতপর আল-আজহারের শিক্ষাপদ্ধতিতে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পড়াশোনা করেন। উচ্চ মাধ্যমিকে তিনি সারা মিশরে দ্বিতীয় হন। আল আজহারের উসুলুদ দ্বীন অনুষদ থেকে অনার্সو মাষ্টাস এবং পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তার পিএইচডি বিষয় ছিল “যাকাত এবং সামাজিক সমস্যা সমাধানে তার প্রভাব।” ১৯৭৩ সালে কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামী স্টাডিজ বিভাগের প্রতিষ্ঠা করেন এবং ডিপার্টমেন্ট প্রধান হিসেবে যোগ দেন। ১৪১৩ হিজরীতে ইসলামী শিক্ষায় অবদানের জন্য আন্তর্জাতিক বাদশাহ ফয়সাল পুরস্কারের জন্য তাকে সিলেক্ট করা হয়। মুসলিম বিশ্বের নোবেল খ্যাত এ পদকটির পাওয়ার সন্মানটা এ বছর তার ভাগ্যে জোটে। ১৯৯৭ সালে ব্রুনাই সরকার তাকে হাসান বাকলি পুরস্কারে সম্মান প্রদান করে। তিনি আলেমদের আন্তর্জাতিক সংগঠন ইত্তেহাদুল আলামী লি উলামাইল মুসলিমীন এর সভাপতি ছিলেন।
ইখওয়ানুল মুসলেমিনের সাথে সম্পৃক্ততার কারণে তাকে বেশ কয়েকবার কারাবরণ করতে হয়। প্রথমবার ১৯৪৯ সালে। এরপর প্রেসিডেন্ট জামাল আব্দুন নাসেরের আমলে তিনবার। ১৯৫৪ সালের জানুয়ারিতে প্রথমবার। একই সালের নভেম্বর মাসে দ্বিতীয়বার। এবার তিনি ২০ মাস কারাগারে কাটান। শেষবার ১৯৫৩ সালে। তিনি মিশর ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংগঠন মুহাম্মদ মুরসির দল মুসলিম ব্রাদারহুডের পরামর্শক ছিলেন। ২০১৩ সালে মুসলিম ব্রাদারহুডের নেতা মোহাম্মদ মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করে মিশরের ক্ষমতা দখল করেন তৎকালীন সেনাপ্রধান আব্দুল ফাতাহ আল সিসি। কারযাভী আব্দুল ফাতাহ আল সিসির একজন কঠোর সমালোচক ছিলেন। এ কারণে ২০১৩ সালের পর আর নিজ দেশ মিশরে ফিরতে পারেনি ইউসুফ-আল-কারযাভি। তার মৃত্যুতে বিশ্বের মুসলিম শিক্ষা মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct