আপনজন ডেস্ক: বরবারই প্রতিবাদী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই ছাত্র রাজননীতি থেকেই প্রতিবাদের অন্যতম মুখ হিসেবে উঠে এসে আজ মুখ্যমন্ত্রীর আসনে। সেটাই ফের একবার প্রমাণ হয়ে গেল শনিবার কলকাতার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ারে নেতাজির জন্মজয়ন্তীর সভায় প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে। ঘোষক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলার জন্য না নাম ঘোষণা করতেই হঠাৎ স্লোগান ওঠে ‘জয় শ্রীরাম’। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে অনুষ্ঠানে এভাবে তাকে লক্ষ্য করে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দেওয়ায় মমতা নিজেই জানিয়ে দিলেন তিনি আর বক্তৃতা দেবেন না। শুধু তাই নয়, তিনি মঞ্চ ছেড়ে চলেও গেলেন।
এই জয় শ্রীরাম নিয়ে কম বিতর্ক সৃষ্টি হয়নি। ইতিপূর্বে উত্তরবঙ্গে মমতার কনভয় দেখে জয় শ্রীরাম ধ্বনি দেওয়ায় তিনি গাড়ি থেকে নেমে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছিলেন। শনিবার প্রধানমন্ত্রীর সামনে সেই সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করে কতিপয় ব্যক্তি। তারা মমতাকে বক্তৃতা দেওয়ার জন্য ঘোষনা করতেই জয় শ্রীরাম দিতে শুরু করে। যদিও ঘোষক তাদের সেই স্লোগান থামানোর কথা বলেন। কিন্তু কে শোনে কার কথা। চরম বিব্রত হয়ে মমতা তখন নিজেই পোডিয়ামের সামনে দাঁড়িয়ে বলতে থাকেন, এটি সরকারি অনুষ্ঠান। এখানে শালীনতা বজায় রাখা দরকার। এটা রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়, সরকারি কর্মসূচি, জনতার কর্মসূচি। সেই সঙ্গে তিনি এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, কাইকে আমন্ত্রণ করে তাকে বেইজ্জত করা শোভনীয় নয়। তাই এর প্রতিবাদে কিছু বলবেন না জানিয়ে ‘জয় হিন্দ! জয় বাংলা!’ বলে পোডিয়াম ছেড়ে নিজের আসনে বসেন।
এরপর মমতার রাগ মেটাতে খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আসরে নামেন। তিনি বক্তৃতার শুরুতেই ‘বন্দে মমতাজি’ বলে সম্বোধন করলেও তাতে বরফ গলেনি।
আরও পড়ুন:
তবে, বহুদিন পর একই অনুষ্ঠানে মুলাকাত হয়েছে প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর। নির্দিষ্ট আসনে দুজনে বসরেও তাদের মধ্যে একটা দূরত্ব ছিল। হতে পারে সেই দূরত্ব সামাজিক দূরত্ব। কিন্তু পরিস্থিতি বুঝিয়ে দিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে হাজির হলেও দূরত্ব ঘোচেনি। যদিও, দুজনকে দূরত্ব দূরে ঠেলে কথা বলতেও দেখা গেছে অনুষ্ঠানের মাঝে। যদিও ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান মমতাকে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা থেকে সত্যিই দূরে সরিয়ে দিয়েছে। তা অবশ্য মোদির জন্য নয়।