আপনজন ডেস্ক: জুতো বিক্রির মধ্যেও যোগী রাজ্যে ধর্মবিদ্বেষের ভূত খুঁজে পেল উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা। আর তাতে সঙ্গত দির উত্তরপ্রদেশের পুলিশ। এক মুসলিম দোকানদার ‘ঠাকুর’ ব্র্যান্ডের জুতো বিক্রি করায় হেনস্থার শিকার হলেন যোগী রাজ্যে। একদিকে উগ্র হিন্দুত্ববাদী মুসলিম দোকানদারের দোকানে ঢুকে ‘ঠাকুর’ ব্র্যান্ডের জুতো বিক্রি বন্ধ করে দিল। অন্যদিকে, পুলিশ সোমবার থেকে ৪৮ ঘণ্টা তাদের হেফাজতে রাখল। অথচ, এই ‘ঠাকুর’ ব্র্যান্ডের জুতো উত্তরপ্রদেশে কয়েক দশক ধরে জনপ্রিয় ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।
জানা গেছে, উত্তরপ্রদেশের বুলন্দশহর জেলায় গুলাহাটি থানা এলাকায় জুতোর দোকান নাসির নামে এক মুসলিমের। তিনি ‘ঠাকুর’ ব্র্যান্ডের জুতো বিক্রি করায় উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা তার দোকানে ঢুকে সেই জুতো বিক্রি বন্ধ করে দেয়। তারপর তারা পুলিশে অভিযোগ জানায়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে দোকানদার নাসিরের বিরুদ্ধে ১৫৩এ, ৩২৩সি ও ৫০৪ ধারায় পুলিশ অভিযুক্ত করে।
উল্লেখ্য, ঠাকুর শব্দটি উচ্চ বর্ণের হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে জড়িত। এমনকী উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথও ঠাকুর সম্প্রদায়ের।
তবে, এই দোকানদারকে উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের হেনস্থা করার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ায় ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে। ভিডিওতে দোকানদার নাসিরকে বলতে দেখা যাচ্ছে যে, জুতোটি তার তৈরি নয়। এটি যারা তৈরি করেছে তারাই নাম দিয়েছে। এ সম্পর্কে জানা গেছে, উত্তরপ্রদেশের আগ্রা ভিত্তিক জুতো কোম্পানি ঠাকুর ফুটওয়্যার কোম্পানি ছ দশক ধরে যে জুতো তৈরি করে বাজারজাত করে আসছে তাতে ‘ঠাকুর’ কথাটি এমব্রোস করা থাকে। আর সারা ভারতের সর্বত্র এই জুতোটি পাওয়া যায়। এমনকী অনলাইনে আমাজন, ফ্লিপকার্ট, স্ন্যাপডিল, মায়ন্ত্র প্রভৃতিতে পাওয়া যায়।
যদিও বুলন্দ শহরের পুলিশের সাফাই তারা যদি ওই দোকানদারের বিরুদ্ধে এভাবে ব্যবস্থা না নিত তাহলে পরিস্থিতি অন্যরকম হত। পুলিশের এই আচরণের তীব্র প্রতিবাদ ধ্বনিত হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। আকর প্যাটেল নামে এক ব্যক্তি গরিব মুসলিমদের এই হেনস্থাকে মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন বলে অভিহিত করে উত্তরপ্রদেশে পুলিশের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করেছেন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct